কলকাতা, 22 জুলাই: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে বাংলাদেশ সব অর্থেই 'সোনার বাংলা'। পদ্মা নদী আরও সুন্দর করেছে সে দেশকে। কিন্তু সেখানেই আজ বয়ে চলেছে রক্তধারা। দাবি আদায়ের আন্দোলন কেড়েছে অসংখ্য প্রাণ। সন্ত্রাসের রক্তচক্ষুর সামনে দেশটাই যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। প্রাণের আশঙ্কা নিয়ে চরম উদ্বেগে দিন কাটছে বাংলাদেশের। আগামীর চিন্তায় ঘুম উড়েছে দেশের। এর মধ্যেই আরও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন 3 পড়ুয়া।
ঢাকার বাসিন্দা তানভীর হোসাইন শিশির, মহম্মদ জাকা আলসারিয়ার তানভীর এবং আব্দুল রহমান। তাঁরা প্রত্যেকেই চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিএসসি এগ্রিকালচারের তৃতীয় সেমিস্টারে পড়ছেন তানভীর হোসাইন। অপরদিকে, সিভিলে ফাইনাল সেমিস্টারে পড়ছেন আব্দুল রহমান ৷ অপরদিকে, দ্বিতীয় সেমিস্টারে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ছেন জাকা আলসারিয়ার। তবে, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
সেই কারণে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত তাঁরা বিমানের টিকিট কেটে নিয়েছিলেন। তবে আচমকাই পরিস্থিতি বদলায়। বাংলাদেশে শুরু হয় কোটা-আন্দোলন। দেশজুড়ে জারি হয় কারফিউ। বাতিল হয়ে যায় তাঁদের বিমান। তানভীর জানান, বিমান বাতিল হয়ে যাওয়ার গাড়ির ব্যবস্থা করে ঢাকা হয়ে যশোরে আসেন। সেখান থেকে বেনাপোল-হরিদাসপুর বর্ডার (ভারতের পেট্রাপোল বর্ডার, যা বনগাঁয়), হেঁটে অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে আবারও গাড়িতে করে রবিবার রাতে কলকাতায় আসেন। সোমবার সকালে শিয়ালদা থেকে হামসফর এক্সপ্রেস ধরেন তাঁরা।
তাঁদের এই পুরো যাত্রাপথে সাহায্য করেছেন সেনা বাহিনী। জানালেন তিন বন্ধু। অপরদিকে, ইতিমধ্যে ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে যোগাযোগ করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না তাঁরা। ফলে ভারতে থাকা বন্ধুরাই সাহায্য করেছেন তানভীরদের। তিন বন্ধু চণ্ডীগড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও তাঁদের বাড়ির লোক কিন্তু রয়েছে এখনও বাংলাদেশে। যা নিয়ে চিন্তিত তিন পড়ুয়া। তবে এই আন্দোলনের ফলে সমস্যা দেখা গেলেও তিনজনই সমর্থন জানিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনকে। তাঁদের কথায়, অবশেষে ছাত্র আন্দোলনের জয় হল। কিন্তু এবার আমাদের প্রশ্ন হল এতগুলো ছাত্রর প্রাণের দাম দেবে কে?