হায়দরাবাদ, 20 অক্টোবর: 'নাইট ওয়াচম্য়ান' বা 'নৈশপ্রহরী' ৷ বাইশ গজে, বিশেষ করে লাল বলের ক্রিকেটে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ ৷ টেস্ট ম্যাচের পড়ন্ত বিকেলে ব্যাট করতে আসা নৈশপ্রহরীদের কাজ ক্রিজ কামড়ে পড়ে থাকা ৷ যাতে কোনওক্রমে দিনটা উতরে দিয়ে একজন টপ-অর্ডার ব্যাটারের উইকেট রক্ষা করা যায় ৷ তবে মাঝে মাঝে এই 'নাইট ওয়াচম্যান'রাও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় প্রতিপক্ষের ৷ যার সেরা নজির জেসন গিলেসপি ৷
2006 সালে বাংলাদেশ সফরে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে গিলেসপির সাড়াজাগানো ইনিংস আজও ফেরে ক্রিকেট অনুরাগীদের মুখে মুখে ৷ নৈশপ্রহরী হিসেবে অজি ফাস্ট বোলারের অপরাজিত 201 রানের রেকর্ড ইনিংস অক্ষুণ্ণ 18 বছর বাদে এসেও ৷ চট্টগ্রামে সেই টেস্টে বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে 197 রানে অলআউট করে দিয়েছিল অজিরা ৷ পড়ন্ত বিকেলে ব্যাটিং করতে নেমে ওপেনার ম্যাথু হেডেনের উইকেট খুইয়ে বসে সফরকারী দল ৷ এরপর অধিনায়ক রিকি পন্টিং নিজে নামার বদলে ক্রিজে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কেরিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা ল্যাঙ্কি পেসারকে ৷ তিনি নিজেও ভাবেননি নৈশপ্রহরী হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়তে চলেছে তাঁর সতীর্থ ৷
পুরোদস্তুর একজন ব্যাটারের মত 425 বলে দ্বিশতরানের ইনিংস খেলেন গিলেসপি ৷ কবজির মোচড়ে তাঁর 216 রানের সেই মনোমুগ্ধকর ইনিংস সাজানো ছিল 26টি বাউন্ডারি ও দু'টি ওভার বাউন্ডারিতে ৷ পরিসংখ্যান বলছে 574 মিনিট ক্রিজে আঁকড়ে থাকার পরেও টলানো যায়নি অজি ক্রিকেটারকে ৷ গিলেসপির দ্বিশতরানের পাশাপাশি ব্যাট হাতে সেই টেস্টে উজ্জ্বল ছিলেন মাইক হাসিও ৷ বাঁ-হাতির ব্যাট থেকে এসেছিল 182 রান ৷ সবমিলিয়ে চার উইকেটে 581 রান তুলে ইনিংস ডিক্লেয়ার ঘোষণা করে অজিরা ৷ জবাবে 304 রানে দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় বাংলাদেশের ৷
ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ও 80 রানে জয় ছাপিয়েও বেশি করে চর্চা হয় গিলেসপির ইনিংস নিয়ে ৷ নাইট ওয়াচম্যান হয়ে সর্বাধিক সেই রানের বিশ্বরেকর্ড অক্ষুণ্ণ রয়েছে আজও ৷ এমনকী সেই রেকর্ড কখনও ভাঙবে কি না, তাও সন্দেহ ৷ তাই লম্বা চুলের অজি পেসারের এই রেকর্ডকে বাইশ গজে 'অত্যন্ত বিরল' হিসেবে বর্ণনা করা হয় ৷ আপাতত পুরোদমে কোচিংয়ে মগ্ন বিরল সেই রেকর্ডের অধিকারী গিলেসপি ৷ লাল বলের ক্রিকেটে পাকিস্তান সিনিয়র দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন 259টি টেস্ট ও 142টি ওয়ান-ডে উইকেটের মালিক ৷