কলকাতা, 22 অক্টোবর: গতবছর উত্তরপ্রদেশকে বাগে পেয়েও পুরো পয়েন্ট পাওয়া যায়নি বৃষ্টির গেরোয় ৷ ইডেনে অনুষ্ঠিত হলেও বৃষ্টির কারণে ম্যাচ সম্পূর্ণ করা যায়নি। চলতি বছরে বাংলার রঞ্জি অভিযানে ফের কাঁটা ছড়িয়ে দিল বৃষ্টি। তবে গতবছরের মত ইডেনে নয়, বিহারের বিরুদ্ধে বাংলার খেলা ছিল কল্যাণী স্টেডিয়ামে। সেখানে একদিন বৃষ্টির জেরে চারদিনে একটিও বল না-গড়ানোয় সামনে আসছে একাধিক বিতর্ক ৷ পারস্পরিক দোষারোপে অনুষ্টুপ অ্যান্ড কোম্পানির রঞ্জি জয়ের দৌড়ে বাধা পড়ার কারণ লুকোনোর চেষ্টা চলছে।
আদতে বাংলার ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় সিএবি'র ফস্কা গেরো দশা সামনে চলে আসছে। ইডেনে মহিলা টুর্নামেন্টের কারণে কল্যাণীতে বাংলা বনাম বিহারের ম্যাচটি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে চারদিনই খেলা ভেস্তে গেলেও খেলার মাঝে বৃষ্টি হয়নি একদিনও। বৃষ্টি হয়েছিল খেলা শুরুর আগের দিন এবং প্রথমদিন শেষবেলায়। ফলত মাঠে জল জমে থাকে। যা পরবর্তী সময়ে সরানো যায়নি। বহু চেষ্টা সত্ত্বেও শুকনো করা যায়নি মাঠ। কেন মাঠকে খেলার উপযুক্ত করা গেল না? তা নিয়েই চলছে চাপানউতোর। অথচ সিএবি সূত্র বলছে, ইডেনের মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের তুলনায় কল্যাণী স্টেডিয়ামের মাঠ রক্ষণাবেক্ষণে বেশি অর্থ ব্যয় হয়। ইডেনে যেখানে 15 লক্ষ টাকা খরচ হয়, সেখানে কল্যাণীর জন্য বরাদ্দ নাকি প্রায় 39 লক্ষ টাকা। তাহলেও কেন এই অবস্থা?
রঞ্জি ট্রফির নিয়ম অনুসারে পিচ এবং তিরিশ গজ বৃত্তে যতটুকু মাঠ ততটুকুই ঢাকা দেওয়ার নিয়ম। কল্যাণীতেও তাই করা হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি হলে কী উপায় অবলম্বন করা হবে, তা নিয়ে ভাবাই হয়নি। আসলে বর্ষা বিদায়ের পরেও বৃষ্টি এভাবে যে ম্যাচ পরিত্যক্ত করতে পারে, তা কেউ কল্পনাই হয়তো করেননি। অথচ সিএবির যুগ্ম সচিব নরেশ ওঝা, কোষাধ্যক্ষ প্রবীর চক্রবর্তীরা কল্যাণীতে প্রথম দিন গিয়েছিলেন। সেখানে তারা অভিমন্যু ঈশ্বরণের হাতে শততম প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার স্বীকৃতি স্বরূপ স্মারক তুলে দেন। অথচ ম্য়াচে টস পর্যন্ত না-হওয়ায় ঈশ্বরণ দাঁড়িয়ে রইলেন নিরানব্বইয়েই ৷
Bengal vs Bihar - Match Abandoned #BENvBIH #RanjiTrophy #Elite Scorecard:https://t.co/IcHUzwsfsI
— BCCI Domestic (@BCCIdomestic) October 21, 2024
কিন্তু কেন করা গেল না ম্যাচ। সিএবি'র গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মদন মোহন ঘোষ বলছেন, "বাংলা বনাম বিহার ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ায় খুবই খারাপ লেগেছে। তবে প্রকৃতি বিরূপ হলে কেই বা কী করতে পারে। তবে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে বা সল্টলেকে টোয়েন্টি-টু ইয়ার্ডস অ্যাকাডেমির মাঠে খেললে এত সমস্যা হত না।" ইডেনে মেয়েদের ক্রিকেটের সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট চলছে। ভারতীয় বোর্ডের নির্দেশে তা নৈশালোকে করতে হবে। তাই বাংলা-বিহার ম্যাচ ইডেনে করা যায়নি। বাংলা দলের আপত্তিতে যাদবপুরে সিএবি ম্যাচ আয়োজন করেনি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ঘরের মাঠে বাংলার পরবর্তী ম্য়াচ সঞ্জু স্যামসন সমৃদ্ধ কেরলের বিরুদ্ধে কল্যাণীতেই ৷ ম্যাচের আগে দক্ষিণবঙ্গের দুয়ারে দুর্যোগ। এবারও যদি বৃষ্টি কাঁটা ছড়ায় তাহলে অনুষ্টুপ-সুদীপদের রঞ্জি অভিযান বড়সড় ধাক্কা খাবে। সিএবি'র সর্বোৎকৃষ্ট পরিকাঠামো নিয়ে গর্বের ফানুস চুপসে যাবে ৷ এমতাবস্থায় অগত্যা বাংলা বনাম কেরল ম্য়াচটি যাদবপুরে সরানোর চিন্তাভাবনা চলছে ৷