বর্ষাপাড়া, 26 জানুয়ারি: নিষ্ফলা তিনটি ড্র'য়ের পরে অবশেষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা বাংলার । অসমের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে প্রথমে ব্যাট করতে বাংলা দিনের শেষে 4 উইকেটে 242 । অপরাজিত অনুস্টুপ মজুমদার এবং অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি । দিনের শেষে বাংলার ইনিংস শক্তপোক্ত ভীতের উপর দাঁড়ালেও শুরুটা মোটেই আশা জাগানো ছিল না । ইনিংস শুরু করতে নেমে শ্রেয়াংশ ঘোষ (13), সৌরভ পাল (12) দ্রুত ফিরে যান। তিন নম্বরে মহম্মদ কাইফ থিতু হতে পারেননি । ব্যক্তিগত দুই রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান । সুদীপ ঘরামিও (10) ব্যর্থ ।
অসমের বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে একটা সময় বাংলা 4 উইকেট হারিয়ে 57 রানে ধুঁকছিল । এই অবস্থায় ফের 'মধুসূদন দাদা' অনুস্টুপ মজুমদার । গত দুই মরশুম ধরে অনুস্টুপ দলের বিপদে ভগীরথ হয়ে বিপদমুক্ত করার ভার বহন করেছেন । যা অসমের বিরুদ্ধেও ফের প্রমাণিত । দিনের শেষে 39 বছর বয়সি ব্যাটার 120 রানে অপরাজিত । 197 বলে 16টি বাউন্ডারিতে সাজানো অনুস্টুপের ইনিংস । চলতি রঞ্জি মরশুমে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন । অধিনায়ক মনোজ তিওয়াড়ির সঙ্গে জুটিতে 185 রানের ইনিংস বাংলাকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে । দলের বর্ষীয়ান ব্যাটারের জ্বলে ওঠার প্রশংসা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির মুখে ।
"রুকু সত্যিই ভালো ব্যাট করছে । যেভাবে ব্যাট করছে তাতে আরও বড় ইনিংস ওর ব্যাট থেকে আশা করছি", প্রশংসা মনোজের । অনুস্টুপের সেঞ্চুরির দিনে একই রকম উজ্জ্বল বাংলা দলের অধিনায়ক । দিনের শেষে 68 রানে অপরাজিত মনোজ । হাফ সেঞ্চুরি করার দিনে রঞ্জি ট্রফির কেরিয়ারে 10 হাজার রানের ক্লাবে ঢুকে পড়লেন । গত মরশুম থেকে দশহাজারি ক্লাবের প্রবেশ দ্বারে অপেক্ষা করছিলেন । এই রঞ্জি মরসুমে তিনটে ম্যাচে লক্ষ্যপূরণ হয়নি । অবশেষে তা হল অসমের বিরুদ্ধে । এদিন 182 বলে 7টি বাউন্ডারিতে সাজানো মনোজ তিওয়ারির ব্যাটে দেখা গিয়েছে পুরনো ঝলক । ছন্দ ফিরে পেতে নতুন স্ট্যান্সে ছত্তিশগড় ম্যাচ থেকে ব্যাটিং করছেন । ইডেনে সেই ম্যাচে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি । শুক্রবার অসমের মাটিতে অনুস্টুপের সঙ্গে জুটি বেঁধে ইনিংস গড়লেন ।
ব্যক্তিগত নজিরের দিনে অধিনায়ক মনোজের মুখে অবশ্য দলের কথা । "আপাতত চারশো রান করার পরিকল্পনা রয়েছে । এই ম্যাচ থেকে 6 পয়েন্ট পেতেই হবে । পরের পর্বে যেতে হলে আমাদের বাকি ম্যাচগুলো নক আউটের মানসিকতায় খেলতে হবে । শুরুতে বেকায়দায় পড়লেও সামলে নেওয়া গিয়েছে । সিনিয়র জুনিয়রের বিষয় নয় । আমরা উইকেটে পড়ে থাকতে চেয়েছিলাম । সেটাই করেছি । কালও সেটাই করতে হবে," বলছিলেন মনোজ ।
রঞ্জি ট্রফিতে 10 হাজার রান করার নজির । মনোজ বলছেন, "এই কৃতিত্বটা যদি ইডেনে করতে পারতাম ভালো লাগত । ছত্তিশগড়ের বিরুদ্ধে আচমকা বলটা ঢুকে এসেছিল । নইলে ওখানেই পৌঁছে করে ফেলতাম । আমি যতটুকু ক্রিকেট খেলছি তাঁর জন্য কোচ মানবেন্দ্র ঘোষের অবদান ভোলা যাবে না ।" এই কৃতিত্ব কাকে দিতে চান মন্ত্রী মশাই ? "আমার স্ত্রী সুস্মিতাকে উৎসর্গ করছি এই সাফল্য । আমার যাবতীয় সুখ-দুঃখের সঙ্গী । আমি যখন অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তখন সুস্মিতা বারণ করেছিল । ওর কথা শুনে ফিরে এসেছিলাম । সেই সিদ্ধান্ত এই কৃতিত্বে পৌঁছতে সাহায্য করল," বলছিলেন মনোজ ।
আরও পড়ুন: