বহরমপুর, 30 এপ্রিল: বাংলায় রামনবমীতে হিংসা ছড়ানোর ঘটনাকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির যোগী আদিত্যনাথ ৷ উত্তরপ্রদেশের এই ধরনের ঘটনা ঘটলে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিতেন, সেই কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি ৷
মঙ্গলবার বহরমপুর লোকসভা আসনে বিজেপির নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেন যোগী আদিত্যনাথ ৷ সেখানে বিজেপির প্রার্থী ড. নির্মলকুমার সাহা ৷ বিজেপির প্রার্থী লড়ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ইউসুফ পাঠান ও কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৷ এ দিন যোগীর ভাষণে বিজেপির প্রতিপক্ষ দলের কোনও প্রার্থীরই নাম শোনা যায়নি ৷ এমনকী, বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদ অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটা শব্দ খরচ করেননি তিনি ৷ বরং আগাগোড়া আক্রমণ করেছেন রাজ্য সরকার ও রাজ্য়ের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ৷
গত কয়েক বছরে রাজ্যে একাধিকবার হিংসার ঘটনা ঘটেছে ৷ গত বছর রামনবমীর সময় রাজ্যের দু’টি জায়গার পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে ৷ এ দিন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে ৷ তাঁর দাবি, রামনবমী-নবরাত্রীতে কোনও হিংসা হয় না উত্তরপ্রদেশ ৷ তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই সময়গুলিতে বাংলায় কেন হিংসা হয় ? তাঁর আরও প্রশ্ন, কেন হিংসা ছড়ানোদের বিরুদ্ধে বাংলায় ব্যবস্থা নেওয়া হয় না ৷ এর পরই তিনি বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে এমন হল উলটো করে ঝুলিয়ে ঠিক করে দিয়ে এমন হাল করে দিতাম যে এদের সাত প্রজন্ম ভুলে যেত যে হিংসা কিভাবে করতে হয় ৷’’
পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, 2017 সালে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার আগে সেখানে বাংলার মতো পরিস্থিতি ছিল ৷ কিন্তু তাঁর সরকার আসার পর গত সাত বছরে উত্তরপ্রদেশে কোনও হিংসা হয়নি ৷ কোনও কারফিউ জারির ঘটনা ঘটেনি ৷ সেখানে কেউ হিংসা ছড়াতে পারে না ৷
একই সঙ্গে তিনি বাংলার অতীত গৌরবের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন তুলেছেন, যে বাংলা ভারতের সংস্কৃতির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, সেই বাংলা আজ দিশাহীন কেন ? যে বাংলা রাষ্ট্রগীত, রাষ্ট্রগান দেশকে দিয়েছে, সেই বাংলায় আজ শুধু কান্নার আওয়াজ কেন শোনা যাচ্ছে ? যে বাংলায় দেবীদুর্গার পুজো হয়, সেখানে সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটছে ?
তাঁর দাবি, আজকের বাংলা আর সোনার বাংলা নেই ৷ তিনি স্বামী বিবেকানন্দের কথার অংশ তুলে ধরে প্রশ্ন করেছেন, যে বাংলা বলেছিল গর্ব করে বলো আমি হিন্দু, সেই বাংলায় কেন হিন্দুরা আজ অত্যাচারিত ? যোগী আদিত্যনাথের দাবি, বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের এনে এখানকার ডেমোগ্রাফি বা জনবিন্যাস বদলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল ৷ কংগ্রেস ও তৃণমূলকে তিনি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলেও কটাক্ষ করেছেন ৷
তাঁর বক্তব্য, বাংলা এখন উন্নয়ন দূরে সরে যাচ্ছে ৷ সোনার বাংলা চাইলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জেতাতে হবে ৷ বাংলায় বিজেপির সরকার হলে এখানে যারা হিংসা ছড়ায় ও সন্দেশখালিতে যারা অভিযুক্ত, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
আরও পড়ুন: