নন্দীগ্রাম, 23 মে: বিজেপির মহিলা নেত্রী রথিবালা আড়ি খুনের ঘটনায় ফের অগ্নিগর্ভ নন্দীগ্রাম ৷ বৃহস্পতিবার সকালে মনসাতলা বাজারে একাধিক দোকানে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। এমনকী রাস্তায় গাছ ফেলে, আগুন জ্বালিয়েও বিক্ষোভ শুরু করেছে বিজেপি কর্মীরা ৷ যার জেরে একাধিক দোকান ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই ৷ আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। পুরো ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ কাঁথির জনসভা থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু এদিন বলেন, "রাত দুটোয় রথিবালা আড়িকে খুন করেছে ৷ সারারাত আমি ঘুমাইনি ৷ ভোর চারটেয় সঞ্জয়কে ভরতি করিয়েছি কলকাতার হাসপাতালে ৷ আপনারা এর বদলা নেবেন না ? চিন্তা করবেন না, ভোট শান্তিপূর্ণ হবে ৷"
রাতে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনার পরই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা ৷ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা ৷ বাজারের একাধিক দোকানে আগুনও লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারপরও অবশ্য নন্দীগ্রাম এলাকায় উত্তেজনা কমেনি ৷ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে ৷ এদিন এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "উনি (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) গতকাল বলে গিয়েছিলেন 80টি বুথে প্রতিরোধ করতে ৷ ভাইপোর উস্কানিতেই এই ঘটনা হয়েছে ৷ এফআইআর-এ আমরা ওনার নামও দিয়েছি ৷ ফল ভালো হবে না ৷"
আরও পড়ুন: ভোটের দু'দিন আগে রক্তাক্ত নন্দীগ্রাম, মহিলা বিজেপি কর্মীকে কুপিয়ে খুন
অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান বলেন, "বিজেপির বক্তব্য মিথ্য়াচার ৷ ওখানে তৃণমূলের ঝান্ডা বাঁধার লোক নেই ৷ শুভেন্দু জানে যে ভোটে এরকম একটা কিছু করতে হবে তবেই ভোট বৈতরণী পার করতে পারবে ৷ আদি বিজেপি এবং নব্য বিজেপির মধ্যে মারামারি হয়েছে, তাতেই একজন মারা গিয়েছেন ৷ কোনও মৃত্যু কাম্য নয় ৷ আর অভিষেক কখনও বলেনি মারামারি করতে ৷ বলেছে প্রতিরোধ করতে ৷ আসলে বিজেপি সন্ত্রাস চালাচ্ছে ৷ শতাধিক বাড়ি ভাঙা হয়েছে আমাদের সমর্থকদের ৷ প্রশাসনকে বলব নিরপেক্ষ তদন্ত করতে ৷"
এদিন তিনটি বাসে করে প্রচুর পুলিশ কর্মী সিভিল ড্রেসে যাচ্ছিল বলে খবর ৷ সেইসব বাস আটকেও বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তাদের কাছে কোন সিসি নেই, পুলিশের কোনও প্রমাণ নেই বলেও জানাচ্ছে বিজেপি কর্মীরা। বহিরাগত লোক ঢোকানো হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে বাসগুলোকে বিজেপি কর্মীরা আটকেছে রেয়া পাড়াতে। যা নিয়ে তুমুল উত্তেজনা শুরু হয় ফের। এত পুলিশ নয়, বরং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের নামে কোনও দুষ্কৃতী ঢুকছে কি না, সেই সন্দেহের অভিযোগ তোলা হচ্ছে ৷ অন্যদিকে, বিজেপি মহিলা কর্মী খুনের ঘটনায় সোনাচূড়ার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি দেবু রায়কে গ্রেফতার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। দেবু রায়ের সঙ্গে এক মহিলাকেও আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: 'কখনও আইন মেনে কিছু করেননি', ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল ইস্যুতে মমতাকে তোপ মীনাক্ষীর