নয়াদিল্লি, 1 জুলাই: সপ্তদশ লোকসভার শেষ শীতকালীন অধিবেশনে ‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’ কাণ্ডে সাংসদ পদ হারিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র ৷ অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে প্রথমবার ভাষণ দিতে উঠে সাংসদ পদ হারানোর ইস্যুতে আরও একবার সরব হলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ ৷ এই নিয়ে তিনি নিশানা করেন কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে ৷ মহুয়ার দাবি, তাঁর কণ্ঠরোধ করতে গিয়ে বড় মূল্য দিতে হল বিজেপিকে ৷ এর জেরে 63টি আসনে হারতে হয়েছে মোদির দলকে ৷
লোকসভায় এখন চলছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণের উপর ধন্যবাদজ্ঞাপক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ৷ সোমবার সেই আলোচনায় অংশ নেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ৷ সেখানে তিনি বলেন, "গতবার আমি দাঁড়িয়েছিলাম, আমাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি । ক্ষমতাসীন দলকে একজন সাংসদের কণ্ঠস্বরকে দমন করার জন্য খুব বড় মূল্য দিয়েছে । আমাকে চুপ করার চেষ্টায়, জনসাধারণ তাদের চুপ করিয়ে দিয়েছে, যার ফলে তাদের 63 জন সাংসদ হেরেছেন ৷’’
এছাড়াও একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব হন মহুয়া ৷ লোকসভায় সেঙ্গল রাখা নিয়ে আপত্তি তোলেন তিনি ৷ তাঁর দাবি, সেঙ্গল রাজতন্ত্রের প্রতীক ৷ গণতন্ত্রে রাজতন্ত্রের কোনও জায়গা নেই ৷ পাশাপাশি বিজেপিকে যে এবার সরকার চালাতে শরিকদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷
রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রসঙ্গ তুলে তিনি দাবি করেন যে সেখানে মণিপুর-সহ একাধিক বিষয় নেই ৷ এছাড়া সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল চালু নিয়ে বিজেপির সদিচ্ছার উপর প্রশ্ন তোলেন মহুয়া ৷ তিনি জানান, এবার লোকসভায় 74 জন মহিলা সাংসদ ৷ এঁদের মধ্যে 37 জন তৃণমূলের ৷ বিজেপির 240 জনের মধ্যে মাত্র 30 জন মহিলা সাংসদ ৷ তিনি বলেন, "যদিও আমরা তিন লক্ষ 'লাখপতি দিদি'র ক্ষমতায়ন করেছেন, বিজেপি 'আরবপতি দাদা' তৈরিতে মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে ৷"
এছাড়া সংবিধানের 370 ধারার অবলুপ্তি নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেন তিনি ৷ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ করেন মহুয়া ৷ ট্রেনযাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন বলে তিনি অভিযোগ করেন ৷ তিনি বলেন, "মানুষ আমাকে বলতেন, 'মহুয়া, তুমি অনেক হারিয়েছ । তুমি তোমার সদস্যপদ, তোমার বাড়ি হারিয়েছ ।' আমিও আমার জরায়ু হারিয়েছি, আমি কী পেয়েছি, জানেন ? আমি ভয় থেকে মুক্তি পেয়েছি ৷’’