কলকাতা, 2 মার্চ: লোকসভা ভোট যখন দোরগোড়ায়, তখন শহর কলকাতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ প্রথমে নাম না করে, পরে একেবারে সরাসরি কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ ৷ এই পরিস্থিতি আচমকাই ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে ৷
রাজ্যের মন্ত্রী, কলকাতার মেয়র, সেই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষসারির নেতা ফিরহাদ হাকিম শনিবার বলেন, "দেখুন এই নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না । বলতে গেলে আরও একটা বিস্ফোরণ হবে ।" তিনি খুব বেশি কিছু বলেননি যদিও ৷ তার পরও যেটুকু বলেছেন, তা নিয়ে রাজনীতির অন্দরে বিস্ফোরণ হতে বাধ্য ৷ হয়েছেও তাই৷ প্রশ্ন উঠেছে, কী এমন বলতে পারেন ফিরহাদ হাকিম, যা বললে একেবারে বিস্ফোরণ হয়ে যাতে পারে ! উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক মহল ৷
যদিও তৃণমূলের অন্দরের কাজিয়ার আসল কারণ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই খুঁজছে রাজনৈতিক মহল ৷ ওই সন্ধ্যায় কুণাল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় নাম না করে দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷ পরদিন শুক্রবার জানিয়ে দেন যে তিনি আর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকতে চান না ৷ এমনকী মুখপাত্রের পদ থেকেও ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন ৷
কেন তিনি এমন পদক্ষেপ করছেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় ৷ যেদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলায় সভা করবেন, সেদিনই কুণালের এমন পদক্ষেপে অনেকে দলত্যাগের ‘আভাস’ দেখতে শুরু করেন ৷ কুণাল অবশ্য জানিয়ে দেন তিনি তৃণমূলেই আছেন ও থাকবেন ৷
এর পর তিনি কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগতে শুরু করেন ৷ সুদীপ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা ৷ তার পরও বিজেপির হয়ে সুদীপ কাজ করেন বলে অভিযোগ করেন কুণাল ৷ শনিবার সকালে আবার সুদীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সরব হন তিনি ৷ সিবিআই ও ইডি-কে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন ৷ না হলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন ৷
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের গ্রেফতারির দাবিও তোলেন কুণাল ৷ আর সেই প্রসঙ্গেই এ দিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, "দেখুন এই নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না । বলতে গেলে আরও একটা বিস্ফোরণ হবে ।" বাকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমি কিছু শুনিনি ৷ শুনলে বলব ।"
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, কলকাতা উত্তর লোকসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়েই দ্বন্দ্ব কুণালের বক্তব্যের মাধ্যমে সামনে চলে এল ? এটা কি তৃণমূলের মূল সংগঠন ও যুব সংগঠনের মধ্যে লড়াই ? ওই আসনে সুদীপের বদলে কি অন্য কেউ প্রার্থী হতে চান ? লড়াই যে কারণেই হোক, লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার মুখে কুণাল ঘোষের বিভিন্ন বক্তব্য শাসক দলের অন্দরে যে অস্বস্তি বাড়িয়েছে, তা বলাই বাহুল্য ৷
আরও পড়ুন: