নয়াদিল্লি, 18 ফেব্রুয়ারি: সামনেই লোকসভা নির্বাচন ৷ এই আবহে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কমলনাথ বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন বলে খবর ৷ কংগ্রেসি রাজনীতিতে কমলনাথ গান্ধি পরিবারের ঘণিষ্ঠ বলেই পরিচিত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির সঙ্গে কমলনাথের বন্ধুত্বের কথাও সর্বজনবিদিত। এই কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল রাখায়, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মধ্যপ্রদেশের সরকার ভেঙে বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন অতীতে ৷ তবে, এই প্রথম নয় ৷ আগেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷ আর তাঁদের স্বাগতও জানিয়েছে গেরুয়া শিবির ৷
মহারাষ্ট্র
নারায়ণ রানে: নারায়ণ রানে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি শিবসেনার সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন ৷ 1999 সালে কয়েক মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলান। 2005 সালে মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিরোধী দলের নেতাও ছিলেন ৷ এরপর তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ রানে 2017 সালে কংগ্রেস ছেড়ে মহারাষ্ট্র স্বভিমান পক্ষ শুরু করেন তিনি ৷ 2018 সালে বিজেপিকে সমর্থন করেন ৷ আরও পরে 2019 সালের 15 অক্টোবর বিজেপিতে যোগ দেন ৷
অশোক চৌহান: কংগ্রেসের একজন প্রবীণ নেতা এবং মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত অশোক চৌহান মাত্র কয়েকদিন আগে বিজেপিতে যোগ দেন ৷ তাঁর বাবা ছিলেন কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা এবং মহারাষ্ট্রের দু'বারের মুখ্যমন্ত্রী এসবি চৌহান। 2008 সালের ডিসেম্বর থেকে 2010 সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অশোক।
অন্ধ্রপ্রদেশ
কিরণ কুমার রেড্ডি: কিরণ কুমার রেড্ডি অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ৷ 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে নতুন রাজ্য তেলেঙ্গানা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন ইউপিএ সরকার। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি ৷ অনেক পরে 2023 সালের এপ্রিলে বিজেপিতে যোগ দেন কিরণ ৷
পঞ্জাব
ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং: ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে কংগ্রেসে নিয়ে এসেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি। দীর্ঘ সময় পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ৷ 1980 সালে প্রথমবার লোকসভার সদস্য হন ৷ এরপর 2002 থেকে 2007 পর্যন্ত পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন ৷ 2017 সালে আবারও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ৷ তবে এরপর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। তাঁকে পদ থেকে সরে যেতেও বলে কংগ্রেসের হাইকমান্ড। পদ ছেড়ে অমরিন্দর সিং। 2021 সালে পঞ্জাব লোক কংগ্রেস গঠন করেন। পরের বছরের বিধানসভা নির্বাচনে 117টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাঁর দল ৷ ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিজেপিতে যোগ দেন ক্যাপ্টেন।
কর্ণাটক
এসএম কৃষ্ণ: কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ইউপিএ আমলের বিদেশমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণ 2017 সালের মার্চ মাসে বিজেপিতে যোগ দেন ৷ কর্নাটকে তিনি কংগ্রেসের একজন প্রবীণ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন ৷ 1999 সালের অক্টোবর থেকে 2004 সালের মে মাস পর্যন্ত কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন ৷ তিনি বিজেপিতে খুব একটা সক্রিয় নন ৷
গোয়া
দিগম্বর কামাত: গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগম্বর কামাত কংগ্রেসে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন ৷ 1994 সালে তিনি প্রথমবার বিজেপিতে যোগ দেন ৷ 2005 সালে তিনি গণভোটের পছন্দকে সমর্থন করার জন্য আবারও কংগ্রেসে ফেরেন ৷ কিন্তু 2012 সালে ফের বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলেন দিগম্বর ৷
উত্তরাখণ্ড
বিজয় বহুগুনা: উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুনা কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা ছিলেন ৷ 2016 সালের মে মাসে তিনি রাজ্যের আটজন প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন ৷ উল্লেখ্য, একসময় তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন ৷
নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি: তিনি উত্তরপ্রদেশের তিনবার এবং উত্তরাখণ্ডের একবার মুখ্যমন্ত্রী ৷ 1951 সালে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। গণতান্ত্রিক সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৷ 1963 সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন ৷ 2017 সালে নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি ছেলে রোহিত শেখর এবং স্ত্রী উজ্জ্বলার সাথে বিজেপিতে যোগ দেন ৷
উত্তরপ্রদেশ
জগদম্বিকা পাল: জগদম্বিকা পাল 15তম লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ৷ ওই বছরই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ৷ 1998 সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন রাজ্যপাল রমেশ ভাণ্ডারি কল্যাণ সিংয়ের সরকারকে বরখাস্ত করেন। সেই সময় জগদম্বিকা পাল তিনদিনের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন ৷
অরুণাচল প্রদেশ
পেমা খান্ডু: পেমা খান্ডু পিপলস পার্টি অফ অরুণাচলের (পিপিএ) 32 জন বিধায়ক নিয়ে 2016 সালের ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন ৷ পেমা খান্ডুর সরকার জুলাই 2016 থেকে অরুণাচল প্রদেশে ক্ষমতায় রয়েছে ৷
আরও পড়ুন: