হায়দরাবাদ, 8 মে: ‘হাম দো, হামারে দো’ ৷ আম্বানি-আদানিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘যোগসাজশ’-এর অভিযোগ তুলতে গিয়ে লোকসভায় দাঁড়িয়ে এই কথাটিই বলেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ৷ লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অবশ্য সেভাবে রাহুলকে আম্বানি-আদানির নাম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করতে দেখা যাচ্ছে না ৷ বুধবার তেলেঙ্গানায় একটি নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে সেই বিষয়টি তুললেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ প্রশ্ন করলেন, ভোটের প্রচারে কেন রাহুলের মুখে আম্বানি-আদানির নাম শোনা যাচ্ছে না ?
এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ধরে কংগ্রেসের ‘শাহজাদা’ (রাহুল গান্ধি) পাঁচজন শিল্পপতির কথা বলতেন ৷ তার পর তিনি আম্বানি ও আদানি, দু’জন শিল্পপতির কথা বলতে শুরু করলেন ৷ এখন তিনি সেই নিয়ে কোনও কথা বলছেন না ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে তাঁরা (রাহুল এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতা) আম্বানি, আদানিকে গালি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন । কেন ? আমি কংগ্রেসের শাহজাদাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, তাঁরা আদানি, আম্বানির কাছ থেকে কত কালো টাকা পেয়েছেন ? নির্বাচনের জন্য কংগ্রেস তাঁদের কাছ থেকে কত (টাকা) পেয়েছে ? এখানে ভুল কিছু হয়েছে বলেই আমার মনে হচ্ছে ৷ এই বিষয়ে সামনে জনগণের কাছে সবটা স্পষ্ট করা উচিত কংগ্রেসের ৷’’
মোদির এই মন্তব্যের পর পালটা তোপ দাগে কংগ্রেস ৷ এই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে,জয়রাম রমেশরা ৷ খাড়গের কটাক্ষ, "সময় বদলাচ্ছে । বন্ধুরা আর বন্ধু নেই ! নির্বাচনের তিন দফা শেষ হওয়ার পর, আজ প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিজের বন্ধুদের আক্রমণ শুরু করেছেন । এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে মোদিজির চেয়ার কাঁপছে । এটাই ফলাফলের আসল প্রবণতা ৷"
অন্যদিকে কংগ্রেসের তরফে সোশাল মিডিয়ায় মোদির দাবি উড়িয়ে দিয়ে জানানো হয়েছে যে গত 3 এপ্রিলের পর থেকে রাহুল গান্ধি 103 বার আদানির নাম উল্লেখ করেছেন ৷ 30 বার আম্বানির নাম উল্লেখ করেছেন ৷
এদিকে শুধু রাহুল নয়, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের রেভন্ত রেড্ডিকে বুধবার নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, ‘‘একজন 'আর' তেলেঙ্গানাকে লুটছে এবং দিল্লিতে অন্য 'আর'-এর কাছে তা পাঠাচ্ছে । তেলেঙ্গানা থেকে দিল্লি পর্যন্ত 'ডাবল আর' (আরআর) ট্যাক্স নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে । 'আরআরআর' নামে একটি (তেলেগু) সিনেমা সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এবং ব্লকবাস্টার হিট হয়েছে । কেউ আমাকে বলেছেন যে 'আরআর' অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে 'আরআরআর'কে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছে ।’’ প্রধানমন্ত্রীর আরও দাবি, 'আরআরআর' সিনেমা থেকে সামগ্রিক আয় 1000 কোটি টাকার বেশি ৷ কিন্তু 'আরআর' (রেভন্ত-রাহুল) ট্যাক্সের মাধ্যমে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে একই পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে ৷
পাশাপাশি ভারত রাষ্ট্র সমিতি বা বিআরএস-কেও আক্রমণ করেছেন তিনি ৷ কেসিআর-এর দলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ একই সূত্রে পরিবারতন্ত্র নিয়ে কংগ্রেসকেও বিঁধেছেন তিনি ৷ আবার সংরক্ষণ ও রাম মন্দির ইস্যুতে বিরোধীদের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে ৷
আরও পড়ুন: