জলপাইগুড়ি, 24 ফেব্রুয়ারি: বাংলায় বসে একাধিক জাল সিম কার্ড ব্যবহার করে দেশজুড়ে সাইবার প্রতারণা ও ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ! উদ্ধার 35টি সিম কার্ড, বায়োমেট্রিক ডিভাইস ও পয়েন্ট অফ সেল মেশিন (POS)-সহ 3 ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল জলপাইগুড়ি পুলিশ ৷ সেই সঙ্গে, আটক আরও এক ব্যক্তি ৷ ধৃতদের সোমবার জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে ৷ তাঁদের নিজেদের হেপাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করবে পুলিশ বলে জানা গিয়েছে ।
ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, সাইবার প্রতারণার পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে ৷ রাজ্যের বিভিন্ন থানা ও সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে এই নিয়ে অভিযোগের কোনও শেষ নেই ৷ এই আবহে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন থানায় 172টি জাল সিম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ ৷
তদন্তে দেখা যায়, মালবাজার, মেটেলি, নাগরাকাটা ও জলপাইগুড়ির বিভিন্ন দোকানে আঙুলের ছাপ ও আধারকার্ড ব্যবহার করে জাল সিম কার্ড ইস্যু করা হয় ৷ সেই সিমকার্ডগুলিকে কলকাতার বিভিন্ন কলসেন্টারে পাঠিয়ে জালিয়াতির কাজে ব্যবহার করা হয় ৷ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মালবাজার থানা এলাকায় সব থেকে বেশি সিমকার্ড ইস্যু করা হয়েছে ৷ এরপরই মালবাজার থানা এলাকার ক্ষুদিরাম পল্লীর বাসিন্দা অর্ণব দত্ত, মেটলি থানা এলাকার বাসিন্দা নরেন্দ্র ঠাকুর ও নাগরাকাটা থানা এলাকার বাসিন্দা সুনীল প্রসাদ নামে তিন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি শহরের এক ব্যাবসায়ীকে আটক করেছে সাইবার থানার পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত 35টি জাল সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে ৷ কেবল ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা নয় ৷ কোনও নাশকতার কাজে এই জাল সিমকার্ডগুলি ব্যবহার করা হয়েছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷
এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, "জলপাইগুড়ি 1030 পোর্টালে জেলার 172টি সিমকার্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে ৷ অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা তদন্ত শুরু করি । চারটি মামলায় জাল সিম কার্ড বিক্রির বিরুদ্ধে আমরা তিন জন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছি । তাঁদের কাছ থেকে 35টি জাল সিম কার্ড, বায়োমেট্রিক ডিভাইস ও POS মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে ।"
পুলিশ সুপার আরও বলেন, "সারা দেশজুড়ে সাইবার জালিয়াতি হয়েছে । এডিজি সাইবার ও জেলার সাইবার পুলিশ তদন্তে নামে ৷ তদন্তে দেখা যায়, জলপাইগুড়ি থেকে সবচেয়ে বেশি জাল সিম কার্ড বিক্রি করা হয়েছে । মালবাজার থেকে বেশি জাল সিম কার্ড বিক্রি করা হয়েছে । আমরা ধৃতদের রিমান্ডে নিয়ে এই প্রতারণা চক্রের শিকর পর্যন্ত পৌঁছতে চাইছি ।"