কলকাতা, 27 মার্চ: রাজ্যে শিক্ষক-সহ বিভিন্ন নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় 3 হাজার কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ সেই টাকা যাঁরা দিয়েছিলেন, তাঁদের তা ফেরানোর ব্যবস্থা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ বুধবার কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাজমাতা অমৃতা রায়কে ফোনে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় এলে এর জন্য আইন তৈরি করে, সেই টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত, লোকসভার প্রচার ও বিজেপি প্রার্থীদের উৎসাহ দিতে বাছাই করা প্রার্থীদের ফোন করছেন নরেন্দ্র মোদি ৷ তেমনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগর রাজপরিবারের বর্তমান রাজমাতা অমৃতা রায়কে ফোন করেছিলেন তিনি ৷ অমৃতা রায়ের প্রচার পর্ব এবং কৃষ্ণনগরের মানুষ কেমন সাড়া দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন মোদি ৷ তারই জবাবে, অমৃতা রায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের প্রতি মানুষের ক্ষোভের বিষয়টি তুলে ধরেন ৷ তিনি বলেন, "অনেক মানুষ চাকরির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, আজ তাঁরা বঞ্চিত ৷ যা নিয়ে সবাই তৃণমূলের উপর রেগে রয়েছে ৷"
বিজেপি প্রার্থীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মোদি তাঁকে বলেন, "আমি আপনাকে একটি আইনি পরামর্শ দিতে পারি ৷ বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতিতে আমাদের ইডি প্রায় 3 হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন সময়ে বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ সেই টাকা আসলে গরিব মানুষের ৷ আমরা সেই টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করব ৷ যাঁরা চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের টাকা ফেরত দিতে কোনও আইন আনা যায় কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখব ৷ ভোটের পর আমাদের যথাসম্ভব সেই টাকা মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করব ৷" অমৃতা রায়ের কাছে মোদি অনুগ্রহ করেন, তাঁর এই বার্তা কৃষ্ণনগরের মানুষের কাছে যাতে তিনি পৌঁছে দেন ৷
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর ইংরেজদের সঙ্গ দেওয়ার প্রসঙ্গে, কৃষ্ণনগরের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল ৷ সেই বিষয়টি নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানালেন অমৃতা রায় ৷ এমনকি কেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এবং তৎকালীন বাংলার অন্যান্য রাজারা সিরাজের বিরোধিতা করেছিলেন, তারও কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি ৷ অমৃতা রায়ের মতে, "সিরাজউদ্দৌলার বিরোধিতা না করলে, 'সনাতন ধর্ম'কে রক্ষা করা যেত না ৷ সেই সময় স্বৈরাচারী সিরাজের বিরুদ্ধে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ইংরেজদের পক্ষে না দাঁড়ালে, সনাতন ধর্মের অস্তিত্ব থাকত না ৷ বাংলা ভাষা ও বাঙালির পোশাক, সব বদলে যেত ৷"
যা নিয়ে মোদির বিজেপি প্রার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, "ভোট রাজনীতির অঙ্গ হিসেবে ভারতীয় সংস্কৃতি রক্ষায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের অবদানকে বাংলায় সবসময় দমিয়ে রাখা হয়েছে ৷ কিন্তু, আমরা ছোটবেলায় তাঁর সেই অবদান সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে পড়েছি ৷ আর লোকের সেইসব অপপ্রচারে কান দেবেন না ৷ আপনার পরিবার যেভাবে মানুষের সেবায় কাজ করে আসছে, তা আপনিও চালিয়ে যান ৷ আমি বিশ্বাস করি আপনি কৃষ্ণনগর থেকে জিতে এখানে আসবেন এবং আমরা একসঙ্গে দেশের উন্নতির স্বার্থে কাজ করব ৷"
আরও পড়ুন: