ETV Bharat / state

মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, বিধিভঙ্গের অভিযোগ মালদা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে; নেপথ্যে কারা - MADHYAMIK EXAM 2025

মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হলেও তা না জানানোয় জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক বাণীব্রত দাসের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ মালদায় ৷ নেপথ্যে কারা, প্রশ্ন দফতরের অন্দরে ৷

ETV BHARAT
মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, বিধিভঙ্গের অভিযোগ মালদা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 24, 2025, 8:03 PM IST

মালদা, 24 ফেব্রুয়ারি: সাতদিনের মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় নিজের অবস্থান পর্ষদকে জানাতে চলেছেন জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক বাণীব্রত দাস ৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এবার তাঁর মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও তিনি নিয়ম মেনে সেকথা পর্ষদকে জানাননি ৷ পরীক্ষা চলাকালীন তিনি নিজের দফতরের কাজ চালিয়ে গিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় তাঁর কাছে লিখিত জবাবদিহি চেয়ে পাঠিয়েছে পর্ষদ ৷ সোমবার এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও জবাব দিতে চাননি ৷

তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে ৷ তদন্ত চলাকালীন এনিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷ আমি আমার জবাব পর্ষদকে পাঠিয়ে দেব ৷”

বিষয়টি নিয়ে এত জলঘোলা কেন ? মাধ্যমিকের বিধি অনুযায়ী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থাকে ট্রেজারি কিংবা থানায় ৷ তার কাস্টডিয়ান হন ট্রেজারি অফিসার কিংবা থানার আইসি অথবা ওসি ৷ পরীক্ষার কনভেনর থাকেন স্কুলের শিক্ষক অথবা শিক্ষিকারা ৷ প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো কিংবা তার সিল খোলার দায়িত্বেও মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক থাকেন না ৷ ইনভিজিলেটরও তিনি নন ৷ তিনি শুধু ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কমিটির সদস্য হিসাবে কাজ করেন ৷

পর্যদের এক কর্তার কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী কোনও কনভেনর, ইনভিজিলেটর, প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা, প্রশ্নপত্রের কাস্টডিয়ান, পর্ষদ কিংবা ডিআই অফিসের আধিকারিকের কোনও আত্মীয় যদি পরীক্ষার্থী হয় তবে সেকথা আগাম পর্ষদকে জানাতে হয় ৷ কিন্তু বাণীব্রতবাবু নিজের মেয়ের পরীক্ষার বিষয়ে পর্ষদকে কিছু জানাননি ৷ এক্ষেত্রে তিনি নিয়মবিধি ভঙ্গ করেছেন ৷”

এদিকে, ডিআই অফিসের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডিআইকেও যে এসব নিয়মাবলী পালন করতে হবে, তা নিয়ে পর্ষদের কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই ৷ বাণীব্রত দাস পরীক্ষা চলাকালীন শুধুমাত্র তাঁর অফিস সামলানো ছাড়া আর কোনও কাজ করেননি ৷ তিনি বেশিরভাগ সময় জেলা প্রশাসনের ওসি (এগজাম) কৌশিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন ৷ তাঁর স্ত্রী একটি সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষিকা ৷ মেয়ের পরীক্ষার জন্য তিনি ছুটিতে ছিলেন ৷ সেটা প্রশাসন এবং পর্ষদের জানা ৷ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে বাণীব্রত দাস ছুটি পাওয়ার অধিকারী নন ৷

তাহলে এত গোল কেন ? জেলা শিক্ষা দফতরের অন্দরমহলে কান পাতলেই এই বিতর্কের উৎস জানা যাচ্ছে ৷ জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শকের পদে যোগ দিয়েই বাণীব্রত দাস এই দফতরে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা দালালরাজের অবসান ঘটিয়েছেন ৷ তাঁরই উদ্যোগে যৌনকর্মীদের ছেলেমেয়েরা স্কুলমুখী হতে শুরু করেছে ৷ এই কাজের জন্য জেলার শিক্ষা মহল-সহ প্রশাসনিক মহলেও তিনি প্রশংসিত ৷ এবার প্রথম থেকে তিনি নিপুণ হাতে পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন ৷ তার ফলও মিলেছে ৷ গত কয়েক বছর বারবার মালদা জেলায় মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলেও এবার সেসব কিছু নেই ৷

কিন্তু কাজ করতে গিয়ে তিনি কখনও কখনও সাপের লেজে পা দিয়ে ফেলেছেন বলে অনেকে মনে করছেন ৷ একসময় মোটা অংকের টাকা দিতে পারলেই মন মতো স্কুলে ভর্তির সুযোগ থাকত ৷ এখনও যে সেই প্রথা চালু নেই তা জোর দিয়ে বলা না গেলেও তার মাত্রা অনেকটাই কমেছে ৷ ফলে দফতরে তথাকথিত দালালচক্রের নিশানায় যে তিনি, তা জানেন দফতরের কর্মীদের অধিকাংশই ৷ যদিও এনিয়ে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি নন ৷

বাণীব্রত দাস জানিয়েছেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাঁর অবস্থান তিনি লিখিতভাবে পর্ষদকে জানিয়ে দেবেন ৷ তাঁর জবাব পাওয়ার পর পর্ষদ কী পদক্ষেপ করে, সেদিকেই তাকিয়ে ডিআই অফিসের কর্মী-আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলার শিক্ষা মহলও ৷

মালদা, 24 ফেব্রুয়ারি: সাতদিনের মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় নিজের অবস্থান পর্ষদকে জানাতে চলেছেন জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক বাণীব্রত দাস ৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এবার তাঁর মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলেও তিনি নিয়ম মেনে সেকথা পর্ষদকে জানাননি ৷ পরীক্ষা চলাকালীন তিনি নিজের দফতরের কাজ চালিয়ে গিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় তাঁর কাছে লিখিত জবাবদিহি চেয়ে পাঠিয়েছে পর্ষদ ৷ সোমবার এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও জবাব দিতে চাননি ৷

তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে ৷ তদন্ত চলাকালীন এনিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷ আমি আমার জবাব পর্ষদকে পাঠিয়ে দেব ৷”

বিষয়টি নিয়ে এত জলঘোলা কেন ? মাধ্যমিকের বিধি অনুযায়ী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থাকে ট্রেজারি কিংবা থানায় ৷ তার কাস্টডিয়ান হন ট্রেজারি অফিসার কিংবা থানার আইসি অথবা ওসি ৷ পরীক্ষার কনভেনর থাকেন স্কুলের শিক্ষক অথবা শিক্ষিকারা ৷ প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো কিংবা তার সিল খোলার দায়িত্বেও মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক থাকেন না ৷ ইনভিজিলেটরও তিনি নন ৷ তিনি শুধু ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কমিটির সদস্য হিসাবে কাজ করেন ৷

পর্যদের এক কর্তার কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী কোনও কনভেনর, ইনভিজিলেটর, প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা, প্রশ্নপত্রের কাস্টডিয়ান, পর্ষদ কিংবা ডিআই অফিসের আধিকারিকের কোনও আত্মীয় যদি পরীক্ষার্থী হয় তবে সেকথা আগাম পর্ষদকে জানাতে হয় ৷ কিন্তু বাণীব্রতবাবু নিজের মেয়ের পরীক্ষার বিষয়ে পর্ষদকে কিছু জানাননি ৷ এক্ষেত্রে তিনি নিয়মবিধি ভঙ্গ করেছেন ৷”

এদিকে, ডিআই অফিসের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ডিআইকেও যে এসব নিয়মাবলী পালন করতে হবে, তা নিয়ে পর্ষদের কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই ৷ বাণীব্রত দাস পরীক্ষা চলাকালীন শুধুমাত্র তাঁর অফিস সামলানো ছাড়া আর কোনও কাজ করেননি ৷ তিনি বেশিরভাগ সময় জেলা প্রশাসনের ওসি (এগজাম) কৌশিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন ৷ তাঁর স্ত্রী একটি সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষিকা ৷ মেয়ের পরীক্ষার জন্য তিনি ছুটিতে ছিলেন ৷ সেটা প্রশাসন এবং পর্ষদের জানা ৷ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে বাণীব্রত দাস ছুটি পাওয়ার অধিকারী নন ৷

তাহলে এত গোল কেন ? জেলা শিক্ষা দফতরের অন্দরমহলে কান পাতলেই এই বিতর্কের উৎস জানা যাচ্ছে ৷ জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শকের পদে যোগ দিয়েই বাণীব্রত দাস এই দফতরে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা দালালরাজের অবসান ঘটিয়েছেন ৷ তাঁরই উদ্যোগে যৌনকর্মীদের ছেলেমেয়েরা স্কুলমুখী হতে শুরু করেছে ৷ এই কাজের জন্য জেলার শিক্ষা মহল-সহ প্রশাসনিক মহলেও তিনি প্রশংসিত ৷ এবার প্রথম থেকে তিনি নিপুণ হাতে পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন ৷ তার ফলও মিলেছে ৷ গত কয়েক বছর বারবার মালদা জেলায় মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠলেও এবার সেসব কিছু নেই ৷

কিন্তু কাজ করতে গিয়ে তিনি কখনও কখনও সাপের লেজে পা দিয়ে ফেলেছেন বলে অনেকে মনে করছেন ৷ একসময় মোটা অংকের টাকা দিতে পারলেই মন মতো স্কুলে ভর্তির সুযোগ থাকত ৷ এখনও যে সেই প্রথা চালু নেই তা জোর দিয়ে বলা না গেলেও তার মাত্রা অনেকটাই কমেছে ৷ ফলে দফতরে তথাকথিত দালালচক্রের নিশানায় যে তিনি, তা জানেন দফতরের কর্মীদের অধিকাংশই ৷ যদিও এনিয়ে তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি নন ৷

বাণীব্রত দাস জানিয়েছেন, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাঁর অবস্থান তিনি লিখিতভাবে পর্ষদকে জানিয়ে দেবেন ৷ তাঁর জবাব পাওয়ার পর পর্ষদ কী পদক্ষেপ করে, সেদিকেই তাকিয়ে ডিআই অফিসের কর্মী-আধিকারিক থেকে শুরু করে জেলার শিক্ষা মহলও ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.