কলকাতা, 24 মার্চ: রবিবার রাজ্যে দ্বিতীয় দফার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করতে চলেছে বিজেপি ৷ তার আগে বাংলার লোকসভা নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেস 30 থেকে 35টি আসন পেতে পারে বলেও সাফ জানিয়েছেন কুণাল। শুধু তাই নয়, তার পূর্বাভাস যদি সত্যি হয় তাহলে আরও একবার বাংলায় শূন্য হতে চলেছে বাম-কংগ্রেস। এক্ষেত্রে কুণাল ঘোষের অনুমান বিজেপির আসন সংখ্যা হতে পারে 5 থেকে 11।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাজ্যের বাকি আসনের প্রার্থী দিতে চলেছে বিজেপি ৷ তার আগে এদিন সকালে সোশাল মিডিয়ায় রাজ্যের 42 আসনের ভবিষ্যদ্বাণী করলেন কুণাল ঘোষ ৷ তিনি দাবি করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কংগ্রেস এবার বাংলায় 30-35 আসন পাবে ৷ সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। ভোট শতাংশে গড়ে 58-62 শতাংশ যাবে তৃণমূলের ঘরে। বিজেপির ভোট শতাংশ হতে পারে কমবেশি 30-32। আসন পাঁচ থেকে 11'র মধ্যে থাকবে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাম এবং কংগ্রেসের আসন শূন্য থাকবে বলেই মত কুণালের। আর সবকিছুই কুণাল বলছেন চলতি বছরের আজকের দিনের পরিস্থিতি অনুযায়ী।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেতা এই বক্তব্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। সবটাই তাঁর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং জনগণ যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে স্বাগত জানাচ্ছে প্রচারে, সাড়া দিচ্ছে তার উপর ভিত্তি করেই বলেছেন। কুণাল ঘোষ বলেন, "আমরা বুথে বুথে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছি। মানুষ বিপুলভাবে আমাদের সাড়া দিচ্ছে। সেই জায়গা থেকেই এই পর্যবেক্ষণ। রাজ্যের 100 শতাংশ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। আমরা যেভাবে মানুষের সারা পাচ্ছি তাতে একটা জিনিস বলা যায়, প্রত্যেক বুথেই আমরা 50 শতাংশের বেশি মানুষের সমর্থন পাব।"
তাঁর দাবি, "মানুষের সমর্থন শুধুমাত্র আসন ভিত্তিক নয়, বুধ ভিত্তিকভাবেও আমরা লক্ষ্য করছি। মানুষ যে উপকার পেয়েছে, সরকার যে কাজ করেছে, তৃণমূল যে মানুষের পাশে আছে এ সমস্ত কিছুর প্রতিফলন প্রত্যেক বুথে হবে। আর সেই জায়গা থেকেই আমরা ধরে নিচ্ছি 30 থেকে 35টি আসন ন্যূনতম আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জিতবে। আমরা সেটাকে আরও বাড়ানোর চেষ্টা করব।" অন্যদিকে, এদিন তিনি বিজেপিকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। কুণাল ঘোষ বলেন, "আমরা যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি এই 24 তারিখ ভরদুপুরেও বিজেপি সমস্ত কেন্দ্রে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। হয় ওরা প্রার্থী পাচ্ছে না, না হলে ওদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। সব কিছু মিলে বিজেপির ছত্রখান অবস্থা। একে তো নীতির লড়াইতে ওরা পিছিয়ে গিয়েছে। বাংলার প্রতি বৈষম্য প্রতি হিংসা বাংলার সন্মানে আঘাত হেনেছে ওরা। বিজেপি প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না, এই অবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে এদিক ওদিক থেকে এনে প্রার্থী করা হচ্ছে।"
এদিকে কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কুণাল ঘোষ টিয়া পাখি নিয়ে জ্যোতিষ চর্চা করতেন বলে আমার জানা নেই। তবে এটা আমি বিশ্বাস করি কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করেছেন, তাঁর একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ আছে। তিনি রাজনৈতিক উত্থান পতনটা সাংবাদিকতার কারণেই সামনে থেকে দেখেছেন। এক্ষেত্রে কুণাল ঘোষ আপ্রাণ চেষ্টা করছেন এই ধরনের বিবৃতি দিয়ে তৃণমূলের নিচু তলার কর্মীদের মনবলকে চাঙ্গা করতে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায় ঘন্টা বেজে গিয়েছে। তৃণমূল স্বাভাবিক মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করেছে।"
আরও পড়ুন: