ETV Bharat / politics

রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিয়ে ফিরছেন পুরনো পেশায়, জানালেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Harsh Vardhan Quits Politics: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চাঁদনি চক লোকসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট দেয়নি বিজেপি ৷ আর তার 24 ঘণ্টার মধ্যেই রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছা অবসর নিলেন তিনি ৷ আজ সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ একটি বিবৃতিতে সে কথা জানালেন হর্ষ বর্ধন ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 3, 2024, 5:38 PM IST

নয়াদিল্লি, 3 মার্চ: 2022 সালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ তারপর জাতীয় রাজনীতি থেকে খানিকটা দূরেই সরে গিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন ৷ আজ পুরোপুরিভাবে রাজনীতি থেকেই নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানালেন রাষ্ট্রী স্বয়ং সেবক সংঘের এই সদস্য ৷ জানালেন, তিনি নিজের মূলে ফিরছেন ৷ অর্থাৎ, 55 বছর আগে মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে চিকিৎসা শাস্ত্রকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ৷ 55 বছর পর রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে ফের চিকিৎসক হিসেবে জীবন শুরু করতে চলেছেন বলে জানান হর্ষ বর্ধন ৷

আজ সোশাল মিডিয়া সাইটে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছেন এনিয়ে ৷ উল্লেখ্য, দিল্লির চাঁদনি চক লোকসভা থেকে জিতে সাংসদ হয়ে সংসদে গিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন ৷ এরপর মোদির মন্ত্রিসভায় দু’বারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন ৷ কিন্তু, এবার তাঁকে চাঁদনি চক থেকে বিজেপি প্রার্থী করেনি ৷ এরপরেই আজ এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন চাঁদনি চক লোকসভার বিদায়ী সাংসদ ৷

তিনি লেখেন, "তিরিশ বছরের গৌরবময় রাজনৈতিক কেরিয়ারকে আমি বিদায় জানাচ্ছি ৷ এই দীর্ঘ সময়ে আমি পাঁচবার বিধানসভা ও দু’বার লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেছি এবং প্রত্যেকবার বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছি ৷ এমনকি দলের সংগঠনে ও সরকারে একাধিক সম্মানীয় পদ সামলেছি ৷ অবশেষে আমার শিকড়ে ফিরে যাচ্ছি ৷" এই শিকড় আর কিছু না, ডক্টর হর্ষ বর্ধনের আসল পরিচয়, চিকিৎসক ৷ সেই চিকিৎসার জগতে ফিরে যাওয়ার কথাই জানালেন তিনি ৷ কৃষ্ণ নগরে তাঁর চেম্বারে ফিরে গিয়ে মানুষের সেবা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৷

এখানেই শেষ নয়, হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, কানপুরের জিএসভিএম মেডিক্যাল কলেজে যখন ভরতি হয়েছিলেন, তখন মানুষের সেবার কাজে নিজেকে নিযুক্ত করার শপথ নিয়েছিলেন ৷ 50 বছর আগে গরিব ও দুঃস্থ মানুষের সেবার জন্য সেই শপথ নিয়েছিলেন তিনি ৷ পরবর্তী সময়ে স্বয়ং সেবক সংঘের সদস্য হিসেবে সেই কাজে আরও বেশি করে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন তিনি ৷ জানিয়েছেন, সবসময় দীনদয়াল উপাধ্যায়ের চিন্তাধারাকে নিজের আদর্শ হিসেবে মেনে চলেছেন ৷ তাই সর্বদা গরিব ও দুঃস্থদের অন্নের সংস্থান করেছেন ৷

আরএসএস নেতৃত্বের কথাতেই প্রথমবার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ তাই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন, যাতে ক্ষমতার অলিন্দে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন ৷ এমনকি তিনি বিশ্বাস করতেন রাজনীতিতে থেকে দেশের সবচেয়ে বড় তিন শত্রু- দারিদ্রতা, রোগ ও অবহেলার বিরুদ্ধে লড়াই করে কাজ করতে পারবেন ৷

হর্ষ বর্ধনের লম্বা পোস্টে তিনি করোনা অতিমারির সময়ের কথাও উল্লেখ করেছেন ৷ যে সময় তিনিই ছিলেন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৷ করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হিসেবে সবরকম চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন ৷ তিনি লেখেন, "পোলিও মুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে প্রথম সাফল্য লাভ করার বিরল সুযোগ আমার কাছে এসেছিল ৷ এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে করোনার সময় আমার দেশের সমস্ত মানুষের দেখভাল করেছি প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৷ মনুষ্য় সেবার দীর্ঘ ইতিহাসে খুব কমজনের কাছেই সেই কঠিন সময়ে সকল দেশবাসীর পাশে থাকার সুযোগ এসেছিল ৷ আর আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, সেই দায়িত্বটা আমার কাঁধে এসেছিল ৷ সেই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে, চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করে কাজ করেছি ৷"

সবশেষে বিজেপির প্রথমসারির একজন নেতা হিসেবে দলের সকল সহকর্মী এবং কার্যকর্তাদের ধন্যবাদ জানান হর্ষ বর্ধন ৷ সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির মতো একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে বলে জানান তিনি ৷ তবে, চিকিৎসা জগতের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে তামাক বিরোধী অভিযান, পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তন-সহ নানান বিষয়ে তিনি আগের মতোই কাজ করে যাবেন ৷ সঙ্গে কৃষ্ণনগরে নিজের ইএনটি ক্লিনিকে চিকিৎসক হিসেবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের সেবা করবেন বলে উল্লেখ করেছেন ডক্টর হর্ষ বর্ধন ৷

আরও পড়ুন:

  1. প্রথম প্রার্থী তালিকায় নেই বর্তমান 33 সাংসদ, নতুন মুখে আস্থা রাখছে বিজেপি
  2. 'দেশ গঠনে দান করুন', দলকে 2000 টাকা দিয়ে নাগরিকদের কাছে আর্জি মোদির
  3. বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইস্তফা, ভোটের মুখে দরজা খোলা রাখছে বঙ্গ সিপিএম

নয়াদিল্লি, 3 মার্চ: 2022 সালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ তারপর জাতীয় রাজনীতি থেকে খানিকটা দূরেই সরে গিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন ৷ আজ পুরোপুরিভাবে রাজনীতি থেকেই নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানালেন রাষ্ট্রী স্বয়ং সেবক সংঘের এই সদস্য ৷ জানালেন, তিনি নিজের মূলে ফিরছেন ৷ অর্থাৎ, 55 বছর আগে মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে চিকিৎসা শাস্ত্রকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ৷ 55 বছর পর রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে ফের চিকিৎসক হিসেবে জীবন শুরু করতে চলেছেন বলে জানান হর্ষ বর্ধন ৷

আজ সোশাল মিডিয়া সাইটে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছেন এনিয়ে ৷ উল্লেখ্য, দিল্লির চাঁদনি চক লোকসভা থেকে জিতে সাংসদ হয়ে সংসদে গিয়েছিলেন হর্ষ বর্ধন ৷ এরপর মোদির মন্ত্রিসভায় দু’বারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন ৷ কিন্তু, এবার তাঁকে চাঁদনি চক থেকে বিজেপি প্রার্থী করেনি ৷ এরপরেই আজ এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন চাঁদনি চক লোকসভার বিদায়ী সাংসদ ৷

তিনি লেখেন, "তিরিশ বছরের গৌরবময় রাজনৈতিক কেরিয়ারকে আমি বিদায় জানাচ্ছি ৷ এই দীর্ঘ সময়ে আমি পাঁচবার বিধানসভা ও দু’বার লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেছি এবং প্রত্যেকবার বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছি ৷ এমনকি দলের সংগঠনে ও সরকারে একাধিক সম্মানীয় পদ সামলেছি ৷ অবশেষে আমার শিকড়ে ফিরে যাচ্ছি ৷" এই শিকড় আর কিছু না, ডক্টর হর্ষ বর্ধনের আসল পরিচয়, চিকিৎসক ৷ সেই চিকিৎসার জগতে ফিরে যাওয়ার কথাই জানালেন তিনি ৷ কৃষ্ণ নগরে তাঁর চেম্বারে ফিরে গিয়ে মানুষের সেবা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৷

এখানেই শেষ নয়, হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, কানপুরের জিএসভিএম মেডিক্যাল কলেজে যখন ভরতি হয়েছিলেন, তখন মানুষের সেবার কাজে নিজেকে নিযুক্ত করার শপথ নিয়েছিলেন ৷ 50 বছর আগে গরিব ও দুঃস্থ মানুষের সেবার জন্য সেই শপথ নিয়েছিলেন তিনি ৷ পরবর্তী সময়ে স্বয়ং সেবক সংঘের সদস্য হিসেবে সেই কাজে আরও বেশি করে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন তিনি ৷ জানিয়েছেন, সবসময় দীনদয়াল উপাধ্যায়ের চিন্তাধারাকে নিজের আদর্শ হিসেবে মেনে চলেছেন ৷ তাই সর্বদা গরিব ও দুঃস্থদের অন্নের সংস্থান করেছেন ৷

আরএসএস নেতৃত্বের কথাতেই প্রথমবার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ তাই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন, যাতে ক্ষমতার অলিন্দে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন ৷ এমনকি তিনি বিশ্বাস করতেন রাজনীতিতে থেকে দেশের সবচেয়ে বড় তিন শত্রু- দারিদ্রতা, রোগ ও অবহেলার বিরুদ্ধে লড়াই করে কাজ করতে পারবেন ৷

হর্ষ বর্ধনের লম্বা পোস্টে তিনি করোনা অতিমারির সময়ের কথাও উল্লেখ করেছেন ৷ যে সময় তিনিই ছিলেন দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৷ করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হিসেবে সবরকম চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন ৷ তিনি লেখেন, "পোলিও মুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে প্রথম সাফল্য লাভ করার বিরল সুযোগ আমার কাছে এসেছিল ৷ এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে করোনার সময় আমার দেশের সমস্ত মানুষের দেখভাল করেছি প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৷ মনুষ্য় সেবার দীর্ঘ ইতিহাসে খুব কমজনের কাছেই সেই কঠিন সময়ে সকল দেশবাসীর পাশে থাকার সুযোগ এসেছিল ৷ আর আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, সেই দায়িত্বটা আমার কাঁধে এসেছিল ৷ সেই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে না নিয়ে, চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করে কাজ করেছি ৷"

সবশেষে বিজেপির প্রথমসারির একজন নেতা হিসেবে দলের সকল সহকর্মী এবং কার্যকর্তাদের ধন্যবাদ জানান হর্ষ বর্ধন ৷ সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির মতো একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে বলে জানান তিনি ৷ তবে, চিকিৎসা জগতের সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে তামাক বিরোধী অভিযান, পরিবেশ ও আবহাওয়া পরিবর্তন-সহ নানান বিষয়ে তিনি আগের মতোই কাজ করে যাবেন ৷ সঙ্গে কৃষ্ণনগরে নিজের ইএনটি ক্লিনিকে চিকিৎসক হিসেবে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত মানুষের সেবা করবেন বলে উল্লেখ করেছেন ডক্টর হর্ষ বর্ধন ৷

আরও পড়ুন:

  1. প্রথম প্রার্থী তালিকায় নেই বর্তমান 33 সাংসদ, নতুন মুখে আস্থা রাখছে বিজেপি
  2. 'দেশ গঠনে দান করুন', দলকে 2000 টাকা দিয়ে নাগরিকদের কাছে আর্জি মোদির
  3. বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইস্তফা, ভোটের মুখে দরজা খোলা রাখছে বঙ্গ সিপিএম
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.