সন্দেশখালি, 22 ফেব্রুয়ারি: ডিজি রাজীব কুমার সন্দেশখালি ছাড়তেই ফের অ্যাকশনে পুলিশ । এতদিন যাঁর বিরুদ্ধে মাঠ দখলের অভিযোগ করেও কোনও সুরাহা মেলেনি, সেই শেখ শাহজাহান ফ্যান ক্লাবের দখলে থাকা মাঠই আজ দখলমুক্ত করা হল ৷ তাও আবার কয়েক মিনিটের মধ্যে ।
বৃহস্পতিবার সকালে সন্দেশখালির কর্ণখালিতে গিয়ে শাহজাহান বাহিনীর দখলে থাকা খেলার মাঠ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগী হন বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার হোসেন মেহেদি রহমান । তিনি তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এ দিন সেখানে যান । এরপর তালা ভেঙে সেই মাঠ দখলমুক্ত করে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের । তার আগে মাঠের প্রাচীরে সাদা চুনকাম দিয়ে মুছে ফেলা হয় শেখ শাহজাহান ফ্যান ক্লাবের নামও । দীর্ঘদিন পর মাঠ ফিরে পেয়ে যারপরনাই খুশি গ্রামের বাসিন্দারা ।
সন্দেশখালির কর্ণখালিতে কয়েক একর জমির উপর রয়েছে এই খেলার মাঠটি । মাঠটির মালিকানা রয়েছে ঋষি অরবিন্দ মিশন নামে একটি সংস্থার কাছে । তারাই মূলত মাঠটি দেখাশোনা করত । কিন্তু,কয়েক বছর আগে হঠাৎই দলবল নিয়ে এসে সেই খেলার মাঠটি শাহজাহান দখল করে নেয় বলে অভিযোগ । মাঠের একদিকে প্রাচীরও তুলে দেওয়া হয় । সেই প্রাচীরে লিখে দেওয়া হয়,'শেখ শাহজাহান ফ্যান ক্লাব'। এখানে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের যাবতীয় খেলাধূলা বন্ধ থাকলেও শাহজাহান ফ্যান ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট কিন্তু চলেছে বছরের পর বছর ধরে । যা নিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ ছিল, কিন্তু প্রতিবাদের কোনও উপায় ছিল না । কারণ প্রতিবাদ করলেই জুটত মারধর এবং হুমকি । ফলে, মুখ বুজেই সবকিছু সহ্য করতে হত গ্রামবাসীদের ।
আরও অভিযোগ,খেলার মাঠের পাশেই বড় বড় গাছ নির্বিচারে কেটে পাচার করা থেকে শুরু করে চাষিদের জমি কেটে সেখানে নোনাজল ঢুকিয়ে ফসল নষ্ট করা হত । সবেতেই সিদ্ধহস্ত ছিল শাহজাহান বাহিনী । তাদের দাপটে, অন্যায়-অত্যাচারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন গ্রামের পুরুষ থেকে মহিলা সকলেই ।
এ দিকে, সন্দেশখালি কাণ্ডে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মূলেও ছিল দখল হয়ে যাওয়া এই মাঠটি । 'বাঘ'-এর দখল থেকে মাঠ ফেরানোর দাবিতে অভিযোগও জমা পড়েছিল সরকারের সমস্যা সমাধান জনসংযোগ কর্মসূচিতে । সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই শাহজাহান বাহিনীর হাত থেকে সেই মাঠ এ বার দখলমুক্ত করতে তৎপর হল পুলিশ প্রশাসন । এবং তা ঘটল ডিজি রাজীব কুমার সন্দেশখালি ছাড়তেই । যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে । তবে, শেখ শাহজাহান এখনও অধরা থাকায় আতঙ্ক কিন্তু রয়েই গিয়েছে গ্রামবাসীদের মনে ।
অন্যদিকে, ওই মাঠেই এ দিন বৃক্ষরোপণ করেন সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাত । আনা হয় নীল-সাদা বেলুনও । সেই বেলুন দিয়ে সাজানো হয় মাঠ । এমনকি কচিকাঁচাদের জার্সিও উপহার দেন বিধায়ক । যদিও, তিনি দাবি করেন, মাঠ দখল করা হয়নি । টুর্নামেন্টের জন্যই দেওয়াল লিখন হয়েছিল ।" কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, "ওই মাঠে প্রবেশের অধিকারই ছিল না তাঁদের ।"
আরও পড়ুন: