কলকাতা, 3 মার্চ: দল ছাড়ছেন কি তাপস রায়? তাপস রায়কে নিয়ে জোর জল্পনা। দলের তরফ থেকে ব্রিগেড নিয়ে জোরদার প্রচার শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত ময়দানে দেখা যায়নি তাপস রায়কে। এমনকী এটাও শোনা যাচ্ছে, তাপস রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিক্ষোভের মাঝে দল ছাড়তে পারেন তিনি। গতকাল কুণাল ঘোষ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন তাপস। তারপরও অবশ্য সরাসরি তাঁকে আর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে দেখা যায়নি। তবে রবিবার রাতেই তাপস রায়ের বাড়িতে রাজ্যের এক মন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে ৷
এরইমাঝে তৃণমূল কংগ্রেসের একটা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, তাপস রায় প্রত্যেক বছর দলের যে কোনও বড় কর্মসূচিতে দূরবর্তী জেলা থেকে আসা মানুষজনদের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে রাখা হলে তাঁদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। খুব স্বাভাবিকভাবে এবারও তার ঘাড়েই সেই দায়িত্ব পড়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত সে দায়িত্ব নেননি তিনি, এমনটাই তৃণমূল সূত্রে খবর। এখানেই শেষ নয়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আক্রমণের পর্বের পর বিতস্রদ্ধ তাপস রায় দল ছাড়তে পারেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
যতদূর জানা যাচ্ছে তাঁর বাড়িতে ইডি আসার পর রাজনৈতিক জীবনে যে কলঙ্ক তাঁর হয়েছে তাতে রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে তিনি কোনওকিছুতে যুক্ত ছিলেন না এই অবস্থায় তাঁর বাড়িতে কেন ইডি আসবে? এই প্রশ্ন বারবার তিনি তুললেও দল তাঁর হয়ে যে সরব হয়েছে এমনটা নয়। এই অবস্থায় 12 জানুয়ারি থেকে 51 দিন হয়ে গেলেও তাঁকে সেভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। এবার শীতকালীন অধিবেশনেও সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তাপস রায়কে। যদিও সেসময় তাপস রায়ের বক্তব্য ছিল, সাম্প্রতিক তাঁর চোখের অপারেশন হয়েছে এই অবস্থায় খুব একটা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
তাৎপর্যপূর্ণ হল- এটাই যে, 21 ফেব্রুয়ারির পর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বরানগরেও আর যাননি তাপস রায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে, তিনি দল ছাড়তে পারেন। এক্ষেত্রে উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তিনি সরাসরি এমন অভিযোগও করেছেন যে তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠানোর ক্ষেত্রে সুদীপেরই হাত রয়েছে। মোটের উপর এই ঘটনাক্রমকে সামনে রেখেই তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আসলে তিনি রাজনীতি ছাড়বেন না তৃণমূল ছাড়বেন সবটাই আগামিদিনে পরিষ্কার হতে পারে। তবে আজ বারংবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি। ইটিভি ভারতের সঙ্গে টেলিফোনিক বার্তায় তিনি স্পষ্ট বলেন, "আমি এই বিষয় নিয়ে কিছুই বলব না। আমার 52 বছরের রাজনীতির জীবনে একটি নির্দিষ্ট নীতি-আদর্শ মেনে সবসময় চলেছি। এর বাইরে আমি যাব না। অনেকেই আমাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খবর করছে, কোথাও তাতে আমার প্রতিক্রিয়া নেই। তবে এটাও বাস্তব যেহেতু গত 12 জানুয়ারির পর দীর্ঘ সময় আমাকে সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি তাই এধরনের জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে এনিয়ে আমি কোনও মতামত এই মুহূর্তে দেব না।"
আরও পড়ুন: