দিঘা, 25 ডিসেম্বর: বড়দিনে সেজে উঠেছে দিঘা ৷ একদিকে ক্রিসমাস, অন্যদিকে বছর শেষের আনন্দে মাতোয়ারা বঙ্গবাসী। রাতভর দিঘায় উপচে পড়া ভিড় ৷ সকালেও পর্যটকদের ঢল নেমেছে সমুদ্র সৈকতে ৷ মেঘলা আবহাওয়ায় পিকনিক মেতেছেন আট থেকে আশি ৷
বড়দিন ও বর্ষবরণকে সামনে রেখে দিঘায় বসেছে বাতিস্তম্ভ ৷ লাগানো হয়েছে নানা রঙের আলোকসজ্জা ৷ পুরনো দিঘার বিশ্ব বাংলা উদ্যান ও দিঘার জোড়া প্রবেশদ্বারকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ৷ একদিকে সৈকত নগরীর অপরূপ রূপ, তার উপর শীতের আবহে বড়দিনের সঙ্গে বর্ষবরণ উদযাপন। সব মিলিয়ে নয়া মাত্রা যোগ হয়েছে দিঘায় ৷ নয়া সেলফি জোন ও আধুনিক সব রাইড বসানো হয়েছে ৷
প্রশাসনের তরফ থেকে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ রক্ষায় ৷ বিগত দিনে ঝড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, মন্দারমণি-সহ সমুদ্র উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলি ৷ রাস্তাঘাট, সৈকতের সৌন্দার্যায়নের কাজ অনেকাংশে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে নবরূপে ও নবসাজে দিঘা আরও বেশি সুন্দরী হয়ে উঠেছে । সবমিলিয়ে নতুন বছরের আগে নতুন সাজে হাজির দিঘা ৷
বড়দিনে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে সমুদ্র সৈকতে । তাই মহিলাদের সুরক্ষায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে । আগের মতো আর যত্রতত্র বসে পিকনিক করা যাবে না । প্লাস্টিকমুক্ত দিঘা ঘোষণা করা হয়েছে আগেই । নজরদারির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে । ওয়াচ টাওয়ারের পাশাপাশি, নজরদারির কাজে ব্যবহার হচ্ছে ড্রোনও ।
দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় খুশি এখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরাও ৷ দিঘা হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও স্থানীয় প্রধান অশোক চন্দ্র বলেন, "আমরা আশা করছি এবার ভালো ব্যবসা হবে ৷ ইতিমধ্যেই বুক হয়ে গিয়েছে দিঘার প্রায় সমস্ত হোটেল ৷ পর্যটকদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয় বাড়তি নজরদারি রাখা হবে । কোনও পর্যটকদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না । যদি আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসে তার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"
এই নিয়ে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পরিষদের এক্সিকিউটিভ অফিসার অপূর্বকুমার বিশ্বাসের বক্তব্য, "ইতিমধ্যে আমরা সমস্ত দফতরের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি নিয়ে মিটিং করেছি । যাতে করে কোন পর্যটকের অসুবিধা না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে ৷ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে । দিঘাকে দূষণমুক্ত রাখতে বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে ।"
তিল ধারণের জায়গা নেই দিঘায় ৷ শীতের মধ্যে সমুদ্রে ডুব দিচ্ছেন ছোট থেকে বড় সকলে ৷ পাশাপাশি পিকনিকের আমাজে গা ভাসাচ্ছেন অনেকেই ৷ দিঘার রূপে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা ৷ কলকাতা থেকে যাওয়া পর্যটক পূজা দাসের কথায়, "চার বছর পর আমি এখানে এসেছি ৷ খুব ভালো লাগছে । নতুনভাবে আবার দিঘা সেজে উঠেছে । তবে দিঘার সমুদ্র ঘাটে শৌচালয়ের ব্যবস্থা হলে খুব ভালো হয় । কেন না সমুদ্রে স্নান করে ভিজা কাপড় নিয়ে হোটেলে যেতে খুব খারাপ লাগে ।"
আরেকজন পর্যটক অরূপ কাঞ্জিলাল বলেন, "দিঘাকে অপূর্ব সুন্দর লাগছে । নতুনভাবে আলোয় সেজে উঠেছে । দু-তিন দিনের ছুটি কাটানো জন্য দিঘা খুব সুন্দর ।"