কলকাতা, 9 এপ্রিল: রাজ্যপালের সঙ্গে সোমবার সাক্ষাতের পর মঙ্গলবার ফের চিঠি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর অনেকটা সময় কেটে গেলেও ঝড় বিধ্বস্ত মানুষগুলোর বাড়ির জন্য টাকা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অতি সক্রিয়তা নিয়েও সোমবার রাতেই রাজ্যপালের কাছে দরবারের পর সরব হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ এরপর এদিন ফের এই বিষয়গুলি নিয়েই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছয় পাতার চিঠিতে অভিষেক সরাসরি বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির যোগ থাকার অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি উল্লেখ রয়েছে উত্তরবঙ্গের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ঘর দেওয়ার যে উদ্যোগ রাজ্য সরকার নিয়েছে, তাতে অনুমতি দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। ফলে ঝড়বিধ্বস্ত মানুষদের ভোগান্তি আরও বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক। দিল্লিতে তৃণমূল প্রতিনিধি দলের উপর পুলিশি অত্যাচার আদতে দিনের আলোয় গণতন্ত্রের হত্যা বলে সোমবারই অভিযোগ করেছিলেন অভিষেক ৷
ওইদিন রাজভবনে বৈঠকের পর অভিষেক বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আমি মনে করি দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।" একই সঙ্গে, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানিয়েছেন অভিষেক ৷ এদিন রাত ন'টার কিছু আগে 11 সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে রাজভবনে পৌঁছন অভিষেক। প্রায় এক ঘণ্টা তাঁরা রাজভবনে ছিলেন। রাজভবন থেকে বেরিয়ে নির্বাচন কমিশন, বিজেপি, কেন্দ্রীয় সরকারকে এক হাত নিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, "বিজেপির অঙ্গুলি হেলনে চলছে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে কীভাবে নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব ?" তিনি আরও দাবি করেছেন, "নির্বাচন কমিশনার বিজেপির হাতের পুতুল ৷ এই অবস্থায় নির্বাচন অবাধ শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয় ৷ দেশ একনায়কতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে তাই বিরোধীদের উপর এজেন্সি লাগিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে আর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা বিজেপিতে গিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছেন।"
অন্যদিকে, চিঠিতে অভিষেকের বক্তব্যে প্রত্যেক পংক্তিতে ছিল বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ। এমনকী নির্বাচন কমিশনকেও ছেড়ে কথা বলেননি তিনি। এদিন অভিষেক প্রশ্ন তুলেছেন, "দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের বাইরে ধরনা কর্মসূচিতে কী এমন ঘটেছিল ? তাদের সঙ্গে কি অস্ত্র ছিল, বোম বন্দুক ছিল ? শান্তিপূর্ণভাবে যদি 10 জন প্রতিবাদ জানায় তাতে অসুবিধা কোথায় ? দু'মাস আগে সংসদ দোলা সেনের পায়ে অপারেশন হয়েছে তাঁকে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডেরেক ও ব্রায়েন তৃণমূলের তিন বারের রাজ্যসভার সাংসদ তাঁকেও চাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কেন তাদের সঙ্গে এরকম করা হল, কারণ তাঁরা অনুরোধ করতে গিয়েছিল জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ারে যারা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের বাড়িগুলি দ্রুত করে দেওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হোক।"
আরও পড়ুন