রঘুনাথগঞ্জ, 24 এপ্রিল: রঘুনাথগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অধীররঞ্জন চৌধুরীকে 'গদ্দার' বলে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি তোপ দাগলেন কংগ্রেসের জোটসঙ্গী বামেদের নেতা মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধেও ৷ তাঁকে পরিযায়ী নেতা বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷
রঘুনাথগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী খলিলুর রহমানের সমর্থনে প্রচারে গিয়ে আগাগোড়াই জেলার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অভিষেকের কথায়, মালদা ও মুর্শিদাবাদের মানুষ বিজেপিকে উৎখাত করতে একসময়ে কংগ্রেসের উপর আস্থা রেখেছিল ৷ আর সেই কংগ্রেস এখন বিজেপির হাত শক্ত করছে ৷ এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের কথা টেনে অভিষেক বলেন, রাহুল গান্ধি ও সোনিয়া গান্ধি ইন্ডিয়া জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা মেনে নিলেও বাংলায় তার উলটো পথে হেঁটেছেন কংগ্রেসের 'ব্রাঞ্চ ম্যানেজার' অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷
তিনি এ দিন বলেন, "আমার দিনটি মনে আছে ৷ 2 সেপ্টেম্বর আমরা মুম্বইতে ছিলাম ৷ সেদিন ইন্ডিয়া জোটের মিটিং-এ গিয়েছিলাম ৷ কে কোন আসনে দাঁড়াবে সেটা ঠিক করছিলাম ৷ সেই বৈঠকে রাহুল ও সোনিয়া মমতাকে পাশে বসিয়ে বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তৃণমূল কংগ্রেসকে তাঁদের প্রয়োজন ৷ এ ব্যাপারে তৃণমূল অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে ৷ আর ওই একইদিনে ধূপগুড়ির উপনির্বাচনে অধীর চৌধুরী আর মহম্মদ সেলিম তৃণমূলের বাপ-বাপান্ত করেছেন ৷" আসনরফার বিষয়টি কংগ্রেস করছি করব বলে ঝুলিয়ে রেখেছিল বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক ৷
রঘুনাথগঞ্জবাসীর কাছে অভিষেকের প্রশ্ন, "কারা গদ্দার এ বার চিনেছেন তো ?" তাঁর দাবি, সিপিআইএম-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা করে বিজেপির হাত শক্ত করছেন অধীর ৷ অভিষেকের কথায়, "লোকেরা আসল গদ্দারকে চিহ্নিত করেছে, যাঁরা এখানে বিজেপিকে শক্তিশালী করছে ।" 100 দিনের কাজের বকেয়া টাকা, মাছ খাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অধীর কেন মুখ খোলেননি, তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
এ দিন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির তীব্র বিরোধিতা করে তিনি বলেন, "বিজেপি এক দেশ এক নির্বাচনের কথা বলেছে তাদের ইস্তাহারে ৷ এ বার মোদি জিতে গেলে 5-6 বছরে একবার করে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন আপনারা ৷ এখন একজন বছরে 5-6 বার ভোট দেওয়ার সুযোগ পান ৷ সেই অধিকার কেড়ে নিয়ে এরা এর বদল করতে চায় ৷ সংবিধান বদল করতে চায় ৷ প্রগতিশীল সরকার আমরা গঠন করব ৷ ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বাংলা কত আসন পেল তার উপর ৷"
অভিষেক এ দিন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও তুলোধোনা করেছেন ৷ তাঁর নির্দেশেই অভিষেককে ইডি-সিবিআই দিয়ে নানাভাবে বিব্রত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ তাঁর কটাক্ষ, "আগে বিচারপতির নির্দেশে চোরেরা চুরি করে জেলে যেত ৷ এখন বিচারপতিরা বিচারব্যবস্থা ছেড়ে চোরেদের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে ৷ ওরা আমায় দিল্লিতে ডেকেছে ৷ আমার স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মাকেও ছাড়েনি ৷ আমার হেলিকপ্টারও রেইড করে ৷ দুদিন আগে আমাকে মারার পরিকল্পনা করেছিল ৷ আমি আমার প্রাণ নিয়ে চিন্তিত নই ৷"
আরও পড়ুন: