নয়াদিল্লি, 6 জুলাই: আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মস্কো সফরে যাচ্ছেন ৷ সেখানে তিনি অংশ নেবেন 22তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে ৷ সেখানে আলোচনার জন্য অনেক বিষয় উঠে আসবে ৷ তবে তার মধ্য়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য । যদিও ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কয়েক বছর ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ তবে এটি মূলত ভারসাম্যহীন থেকে গিয়েছে এবং রাশিয়ার পক্ষে প্রবলভাবে ঝুঁকে রয়েছে ।
রাশিয়া যাওয়ার আগে শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা ৷ সেখানে তিনি জানান, ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য 2023-24 সালে তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী শক্তি সহযোগিতার কারণে তা 65 বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে ।
বিনয় কোয়াত্রা বলেন, "আমাদের ভারতীয় রফতানি 4 বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ভারতীয় আমদানি প্রায় 60 বিলিয়ন মার্কিন ডলার ৷ কিন্তু বাণিজ্য ভারসাম্যহীন থেকে যাচ্ছে ৷ এটা আমাদের আলোচনায় অগ্রাধিকারের বিষয় । জ্বালানি, ব্যাংকিং, রেলওয়ে ও স্টিলের ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ সম্পর্ক রয়েছে । এগুলো আমাদের বিনিয়োগ অংশীদারিত্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র ।"
মস্কোতে থাকা ভারতীয় দূতাবাসের মতে, মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উভয়ই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন ৷ দুই নেতা এর আগে 2025 সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ 50 বিলিয়ন ডলার ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য 30 বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন ।
দূতাবাসের তরফে দেওয়া একটি বিবৃতি অনুযায়ী, “বাণিজ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে, 2023-24 অর্থবর্ষে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সর্বকালের সর্বোচ্চ 65.70 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে (2023-24 অর্থবর্ষের জন্য মোট দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্য: 65.70 বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভারতের রফতানি: 4.26 বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ভারতের আমদানি: 61.44 বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ৷ ভারত থেকে রফতানির প্রধান আইটেমগুলির মধ্যে রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যালস, জৈব রাসায়নিক, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও যান্ত্রিক যন্ত্রপাতি, লোহা ও ইস্পাত ৷ অন্যদিকে রাশিয়া থেকে আমদানি করা প্রধান পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্য, সার, খনিজ সম্পদ, মূল্যবান পাথর এবং ধাতু, উদ্ভিজ্জ তেল ইত্যাদি ।"
বিবৃতি অনুসারে, রাশিয়ার অনুকূলে বাণিজ্য ভারসাম্য-সহ গত পাঁচ বছরে পরিষেবা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে । 2021 সালে এর পরিমাণ ছিল 1.021 বিলিয়ন মার্কিন ডলার । বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ শক্তিশালী রয়ে গিয়েছে এবং 2018 সালে 30 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর পূর্ববর্তী লক্ষ্যকে অতিক্রম করেছে, যা 2025 সালের মধ্যে 50 বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর সংশোধিত লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে ৷ ভারতে রাশিয়ার প্রধান দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ হল তেল ও গ্যাস, পেট্রোকেমিক্যালস, ব্যাঙ্কিং, রেলওয়ে এবং ইস্পাত খাতে ৷ অন্যদিকে রাশিয়ায় ভারতীয় বিনিয়োগগুলি মূলত তেল ও গ্যাস ও ওষুধ খাতে ।"
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার জন্য অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক, কাঠামোগত এবং বাজার-নির্দিষ্ট উপাদানগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে বিভিন্ন কারণের জন্য দায়ী করা যেতে পারে ।
ভারত রাশিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অপরিশোধিত তেল, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও কয়লা আমদানি করে । জ্বালানি আমদানি রাশিয়া থেকে ভারতের সামগ্রিক আমদানির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, যার বাণিজ্য ভারসাম্য ব্যাপকভাবে একদিকে ঝুঁকে রয়েছে ৷ ভারতের শক্তির চাহিদা এবং প্রধান শক্তি সরবরাহকারী হিসেবে রাশিয়ার ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে এই দিকটি বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ । রাশিয়া থেকে আমদানির ক্ষেত্রে হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছিল মূলত তেল ও সার নিয়ে আসা ৷ 2022 সালের শুরুর দিকে তা বাড়তে শুরু করে । দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পিছনে এটাই ছিল প্রধান কারণ । পেট্রোলিয়াম তেল ও অন্যান্য জ্বালানি রাশিয়া থেকে ভারতের মোট আমদানির 84 শতাংশ৷ সার আমদানি ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৷
রাশিয়ায় ভারতীয় রফতানি তুলনামূলকভাবে বহুমুখী ৷ এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ, কৃষি পণ্য, যন্ত্রপাতি ও টেক্সটাইল । যাইহোক, এই রফতানির পরিমাণ এবং মূল্য রাশিয়া থেকে শক্তি পণ্যের উল্লেখযোগ্য আমদানির সঙ্গে ভারসাম্য আনার জন্য যথেষ্ট নয় ।
রাশিয়ার উপর পশ্চিম বিশ্বের নিষেধাজ্ঞা বাণিজ্যের ধরনকে পরিবর্তন করেছে ৷ রাশিয়াকে তার রফতানির জন্য ভারত-সহ বিকল্প বাজার খুঁজতে বাধ্য করেছে । এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার নির্দিষ্ট উচ্চমূল্যের পণ্য রফতানি করার ক্ষমতাও সীমিত করেছে, যা ভারসাম্যকে প্রভাবিত করেছে ।
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক রয়েছে ৷ এছাড়া প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বাণিজ্যের দিক থেকেও দুই দেশের সম্পর্ক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ৷ তবে প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বাণিজ্য প্রায়শই নিয়মিত বাণিজ্য পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয় না ৷ কারণ, এটা নিয়ে সাধারণত দুই দেশের সরকারের মধ্য়ে চুক্তি ও আর্থিক বিষয়ক চুক্তির মধ্যে থাকে ৷
এখানে লজিস্টিক চ্যালেঞ্জও আছে। ভৌগলিক দূরত্ব এবং সংশ্লিষ্ট লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে । দুর্বল পরিবহণ পরিকাঠামো, ট্রানজিটের জন্য দীর্ঘ সময় ও উচ্চ পরিবহণ খরচ রাশিয়ান বাজারে ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক বিষয়ের দিক থেকে বাধা তৈরি করতে পারে ৷
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রত্যক্ষ শিপিং রুট ও বিমান যোগাযোগ সীমিত৷ ফলে বিষয়টি আরও জটিল হয়েছে ৷ বাণিজ্যের খরচও বেড়েছে ৷
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা আরও বলেন, "যতদূর বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সংশোধনের বিষয়টিতে ভারত সব ক্ষেত্রেই রফতানি বাড়ানোর চেষ্টা করছে ৷ এর মধ্যে কৃষি, প্রযুক্তি, ওষুধ বা পরিষেবা রয়েছে ৷ এই সমস্ত ক্ষেত্রে ভারত থেকে রাশিয়ায় রফতানি যাতে বৃদ্ধি পায়, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব । এটা যত দ্রুত ঘটবে, তত তাড়াতাড়ি বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সংশোধন করা যাবে ।”
তিনি আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে আলোচনার সময় বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি সবসময়ই গুরুত্ব পায় ৷ তিনি বলেন, "এটাও উল্লেখ করা উচিত যে 2025 সালের মধ্যে দু’টি দেশ দ্বারা নির্ধারিত লক্ষ্যও অতিক্রম করেছে ৷ আগামী বছরগুলিতে একটি উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে ।"
কৃষি ছাড়াও প্রযুক্তি, ওষুধ ও পরিষেবা ক্ষেত্রের কথা বিনয় কোয়াত্রা উল্লেখ করেছেন ৷ পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন যে ভারতকে রাশিয়ার বাজারে তার টেক্সটাইল, রত্ন ও গয়নাশিল্পের বিষয়টি নিয়ে প্রচার করতে হবে ৷ আইটি ও সফ্টওয়্যার ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণ, বিপণন লক্ষ্য নির্ধারণ ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে পর্যটন বৃদ্ধি করে পরিষেবা সংক্রান্ত বাণিজ্যের পরিসর বাড়িয়ে তুলতে পারে ।
ভারত ও রাশিয়া একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা চালাচ্ছে৷ এর লক্ষ্য ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা ৷ কারণ, পশ্চিম বিশ্বের বেশিরভাগ সরকার ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য চাপ দিচ্ছে । ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির অনুপস্থিতি একটি সুষম বাণিজ্য সম্পর্কের সম্ভাবনাকে সীমিত করে রেখেছে । এই চুক্তি বৃহত্তর বাজারে প্রবেশের সুবিধা ও বাণিজ্য বাধা কমাতে পারে ।
বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সংশোধনের একটি উজ্জ্বল দিক হল বাণিজ্যের জন্য স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার বৃদ্ধি ৷ এর মাধ্যমে মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা হ্রাস করা যায় এবং লেনদেনের খরচ কমানো যায় । ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টাকার মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা করার প্রায় দু’বছর পর এই বছরের এপ্রিলে রাশিয়ার প্রধান ব্যাংক এসবেরব্যাংক জানায় যে এটা ভারত থেকে রাশিয়ার আমদানির জন্য টাকা ও রুবেলের মাধ্যমে বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়েছে ৷
এর বাইরেও পরিবহণ সংক্রান্ত পরিকাঠামোর যা উন্নতি হচ্ছে, তা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সংশোধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে । ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডর (আইএনএসটিসি), ইরানের চাবাহার বন্দর যেটিতে ভারত বিনিয়োগ করছে এবং ইস্টার্ন মেরিটাইম করিডর যা রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টকের সঙ্গে চেন্নাইকে সংযুক্ত করছে, সেগুলোও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে ৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই পরিবহণ রুটের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন কোয়াত্রা ।
আইএনএসটিসি হল একটি 7200 কিমি দীর্ঘ মাল্টি-মোড নেটওয়ার্ক ৷ যেখানে জাহাজ, রেল ও সড়ক পথে পণ্য পরিবহণ করা যাচ্ছে ৷ ভারত, ইরান ও রাশিয়া 2000 সালের সেপ্টেম্বরে এই করিডর তৈরির চুক্তি হয় ৷ এই করিডর তৈরির উদ্দেশ্য় ছিল ভারত মহাসাগর ও পারস্য উপসাগরের সঙ্গে কাস্পিয়ান সাগরকে যুক্ত করা এবং ইরান ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা ৷ এই ক্ষুদ্রতম মাল্টিমোড করিডর দিয়ে রাশিয়া হয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে উত্তর ইউরোপ সহজে পৌঁছানো যায় ।
করিডরের আনুমানিক ক্ষমতা প্রতি বছর 20-30 মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহণ । এই রুটে প্রাথমিকভাবে ভারত, ইরান, আজারবাইজান এবং রাশিয়া থেকে জাহাজ, রেল ও রাস্তার মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ করা হয়েছে । করিডোরের উদ্দেশ্য হল মুম্বই, মস্কো, তেহরান, বাকু, বন্দর আব্বাস, আস্ট্রখান ও বন্দর আনজালির মতো প্রধান শহরগুলির মধ্যে বাণিজ্য সংযোগ বৃদ্ধি করা ।
সম্প্রতি, রাশিয়া প্রথমবারের মতো আইএনএসটিসি-এর মাধ্যমে ভারতে কয়লা বহনকারী দু’টি ট্রেন পাঠিয়েছে । সেটি ইরানের বন্দর আব্বাস বন্দর হয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে মুম্বই বন্দর পর্যন্ত 7200 কিলোমিটার পথ এসেছে ৷
ইরানের অনন্য ভৌগলিক অবস্থানের জন্য সেখানকার চাবাহার বন্দর মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান ও ইউরেশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্য ভারত উপকৃত হতে সাহায্য করবে । পাকিস্তানকে বাইপাস করে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় প্রবেশের জন্য এই বন্দর ভারতকে এই অঞ্চলে একটি কৌশলগতভাবে পা রাখার সুযোগ দিচ্ছে ৷
এই বন্দর আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য ভারতীয় পণ্যগুলির জন্য একটি বিকল্প পথ সরবরাহ করছে ৷ পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আরও ব্যয়বহুল ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল রুটের উপর নির্ভরতা কমিয়ে দিচ্ছে । উপরন্তু, চাবাহার ইরানের বিশাল বাজারে প্রবেশের সুবিধাও দিচ্ছে এবং এই অঞ্চলে ভারতীয় ব্যবসার প্রসার ঘটানোর একটি গেটওয়ে হিসাবে কাজ করছে ।
ইস্টার্ন মেরিটাইম করিডর একটি নতুন রুট, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এই বছরের জানুয়ারিতে চেন্নাইতে একটি সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় বন্দর, নৌ-পরিবহণ ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই নিয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করেছিলেন ৷ তিনি জানিয়েছিলেন যে কিভাবে এই রুটটি ভারত ও সুদূর পূর্ব রাশিয়ার মধ্যে কার্গো পরিবহণে সময় ও দূরত্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেবে এই নতুন পথ ৷
সেই সময় সোনেওয়াল বলেছিলেন, "বর্তমানে, সুয়েজ খাল হয়ে পশ্চিম সাগর রুট দিয়ে মুম্বই বন্দর ও রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বন্দরের মধ্যে দূরত্ব 8 হাজার 675 নটিক্যাল মাইল বা 16 হাজার 66 কিমি ৷ সেখানে পূর্ব মেরিটাইম করিডরের মাধ্যমে চেন্নাই বন্দর ও ভ্লাদিভোস্টক বন্দরের মধ্যে দূরত্ব মাত্র 5 হাজার 647 নটিক্যাল মাইল বা 10 হাজার 458 কিমি হবে ৷ এখানে 5 হাজার 608 কিলোমিটারের পথ বেঁচে যাচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি লজিস্টিক খরচ কমিয়ে দেবে ।"
এই প্রেক্ষাপটে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং তাই আগামী সপ্তাহে মস্কোতে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে হবে এটা গুরুত্ব পাবে এই বিষয়টি ।