ETV Bharat / opinion

গ্রিন হাইড্রোজেন বিপ্লব, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ এবং আগামী - INDIAS GREEN HYDROGEN REVOLUTION

বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে চলেছে । শুধু তাই নয়, গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিশ্ব মানচিত্রে নিজের জায়গাও করে নিতে পারবে ভারত।

Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন বিপ্লব, (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 6, 2025, 6:25 PM IST

প্রদীপ কারুতুরি

ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন প্রজেক্ট কে নতুন দিশা দেখিয়েছে এনটিপিসি। অন্ধ্রপ্রদেশের পুদিমাডাকায় 1.8 লক্ষ কোটি বিনিয়োগে তৈরি হয়েছে গ্রিন হাইড্রোজেন হাব । ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে । শুধু তাই নয়, গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিশ্ব মানচিত্রে নিজের জায়গাও করে নিতে পারবে ভারত। আর কীভাবে এই প্রজেক্ট দেশকে সাহায্য করবে? এই প্রতিবেদেনে সে কথাই তুলে ধরা হল ।

গ্রিন হাইড্রোজেনের গুরুত্ব?

হাইড্রোজনেকে সর্বাধিক ব্যবহার করা যায় এই পদ্ধতিতে । গ্রে বা ব্লু হাইড্রোজেন অনেকাংশে নির্ভর করে অপরিশোধিত তেলের উপর । স্বভাবতই এগুলি হয়ে ওঠে দূষণের উৎস। গ্রিন হাইড্রোজেনে এই সমস্যা নেই। আর ঠিক সেই কারণে স্টিলের উৎপাদন থেকে শুরু করে সার, পরিবহণ এবং বিভিন্ন সংশোধনের কাজে গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহার করা যায় । ভারত 2070 সালের মধ্যে দূষণ মুক্ত হতে চায় । সেদিক থেকে এই হাইড্রোজনের ব্যবহার খুবই জরুরি ।

Indias Green Hydrogen
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

এনটিপিসির প্রজেক্ট: বদলাতে পারে ভবিষ্যৎ

অন্ধ্রপ্রদেশের এই হাবটি 1,600 একর জায়গার উপর অবস্থিত । এখানে গ্রিন কেমিক্যাল থেকে শুরু করে আরও নানা কিছু উৎপাদন করা যাবে । পাশাপাশি সমুদ্রের জল পরিশোধন করে সেখান থেকে নুন বের করে ব্যবহার যোগ্য করার ব্যবস্থাও আছে এখানে। প্রতিবছর দেড় হাজার টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রিন মেথানলের মতো সামগ্রী বছরে সাড়ে সাত হাজার টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আর এই সমস্ত কারণে দক্ষিণের রাজ্যটিতে 1.85 লক্ষ কোটির বিনিয়োগ আসতে চলেছে ।

জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন

2023 সালে শুরু হয় জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন। এর মাধ্যমে 2030 সালের মধ্যে বছরে 5 মিলিয়ন মেট্রিক টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে 60 হাজার চাকরির ব্যবস্থা হবে। পাশাপাশি 8 লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে । এক লক্ষ কোটি টাকার অপিরোশোধিত তেলের রফতানিও কমবে। গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহারে ভারতকে 'বিশ্বগুরু' করার কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে ।

Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

সামনে বিবিধ চ্যালেঞ্জ

গ্রিন হাইড্রোজনের ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হল খরচ-সংক্রান্ত । এক কেজি গ্রে বা ব্লু হাইড্রোজেন তৈরি করতে খরচ হয় 1.9 থেকে 2.4 মার্কিন ডলার । সেখানে গ্রিন হাইড্রোজনের জন্য খরচ হয় 3.5 থেকে 5.5 মার্কিন ডলার । ইলেকট্রোলাইজার প্রযুক্তি ছাড়া গ্রিন হাইড্রোজেন তৈরি করা যায় না । প্রতি কিলোওয়াট ইলেকট্রোলাইজারের জন্য খরচ 500 থেকে 1,800 মার্কিন ডলার । এর পাশাপাশি ভারতে ইলেকট্রোলাইজার উৎপাদনের ব্যবস্থাও তেমন শক্তপোক্ত নয় । এর জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হয় । যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন তাঁদের দিক থেকে এটি অবশ্যই আশঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে । তাঁদের মনে হবে, প্রথমত এই বিনিয়োগ একটা বড় সময়ের জন্য করতে হবে । সেদিক থেকে টাকা ফেরত আসার আগেই কোনও কারণে যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গোটা বিষয়টাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে । এখান থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন । প্রথমত হাইড্রোজেন কারা কিনবেন সেটা চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদের জন্য চুক্তি করতে হবে । পাশাপাশি এই ধরনের কাজ করতে সংশ্লিষ্ট সকলেরই মোটা অর্থের প্রয়োজন হয় । সেদিক থেকে ব্যাঙ্কের লোনের ক্ষেত্রে গ্যারেন্টার পাওয়া খুব জরুরি ।

India's Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

ভারতের সম্ভাবনা

কৌশলী বিনিয়োগের সাহায্যে ভারত গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে পারে । তাছাড়া সরকারি তরফে গ্রিন স্টিল উৎপাদনের উদ্যোগও সহায়ক হতে পারে । হাইড্রোজনের সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তি নিয়ে আরও বেশি করে গবেষণা করা দরকার । তা থেকে নতুন পথের সন্ধান মিলতে পারে । পাশাপাশি কার্বনের ব্যবহার কমাতে অনেক দেশ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। সেই সমস্ত দেশ ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে । সেই সমস্ত দেশে গ্রিন স্টিল থেকে শুরু করে বিমাণ পরিবহণের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে ভারত । সেটাও রোজগারের পথ হয়ে উঠতে পারে ।

India's Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

গ্রিন হাইড্রোজেন এবং শক্তি-নিরাপত্তা

শক্তি-নিরাপত্তার পথে হাঁটতে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনা করছে । ভারত মোট যে পরিমাণ তেল রফতানি করে তার 80 শতাংশই অপরিশোধিত । গ্রিন হাইড্রোজেন এই প্রয়োজন কমিয়ে দিতে পারে । তাছাড়া হাইড্রোজেন ফুয়েল ব্যবহার করে ইলেকট্রিল ভেহিকেলও ব্যবহার করা যেতে পারে । স্টিল থেকে সিমেন্টের ক্ষেত্রেও গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহার বড় পরিবর্তন আনতে পারে ।

আগামিদিনে কী কী হতে পারে ?

আবারও ব্যবহার করা যায় এমন শক্তি: 2030 সালের মধ্যে বছরে 5 মিলিয়ন টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে গেলে আবারও ব্যবহার করা যায় এমন শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজন বাড়বে । 100 থেকে 125 গিগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়বে। সেদিকে নজর দেওয়া দরকার ।

দেশে উৎপাদনের ব্যবস্থা: ইলেকট্রোলাইজার দেশে উৎপাদন করা খুবই দরকারি ।

সরকারি নীতি এবং নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা: গ্রিন হাইড্রোজেন সংক্রান্ত নীতিতে বদল আনা দরকার । রফতানির ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে ।

সাধারণের সঙ্গে সহযোগ: সরকার থেকে শুরু করে যাঁরা গ্রিন হাইড্রোজেন নিয়ে চর্চা করছেন তাঁদের সঙ্গে সংযোগ রাখা খুব জরুরি ।

অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন: কীভাবে খরচ কমিয়ে গ্রিন হাইড্রোজেন তৈরি করা যায় সেটা বার করতে বিস্তারিত অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে । সেই কাজ নিরলসভাবেই করে যেতে হবে ।

উপসংহার

এনটিপিসির এই উদ্যোগ প্রযুক্তির দুনিয়ায় একটি মাইলফলক । দেশকে এক স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ দেওয়া এর লক্ষ্য । গ্রিন হাইড্রোজন নিয়ে কাজ করে ভারত শক্তি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পাবে । পাশাপাশি, গোটা দুনিয়া যেভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়ছে তাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারে । আর্থিক ক্ষেত্রে নতুন দিশাও খুলে দিতে পারে ।

(ডিসক্লেইমার: এই নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব । এখানে প্রকাশিত তথ্য এবং বিশ্লেষণ ইটিভি ভারতের মতামতকে প্রতিফলিত করে না)

প্রদীপ কারুতুরি

ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন প্রজেক্ট কে নতুন দিশা দেখিয়েছে এনটিপিসি। অন্ধ্রপ্রদেশের পুদিমাডাকায় 1.8 লক্ষ কোটি বিনিয়োগে তৈরি হয়েছে গ্রিন হাইড্রোজেন হাব । ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে । শুধু তাই নয়, গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিশ্ব মানচিত্রে নিজের জায়গাও করে নিতে পারবে ভারত। আর কীভাবে এই প্রজেক্ট দেশকে সাহায্য করবে? এই প্রতিবেদেনে সে কথাই তুলে ধরা হল ।

গ্রিন হাইড্রোজেনের গুরুত্ব?

হাইড্রোজনেকে সর্বাধিক ব্যবহার করা যায় এই পদ্ধতিতে । গ্রে বা ব্লু হাইড্রোজেন অনেকাংশে নির্ভর করে অপরিশোধিত তেলের উপর । স্বভাবতই এগুলি হয়ে ওঠে দূষণের উৎস। গ্রিন হাইড্রোজেনে এই সমস্যা নেই। আর ঠিক সেই কারণে স্টিলের উৎপাদন থেকে শুরু করে সার, পরিবহণ এবং বিভিন্ন সংশোধনের কাজে গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহার করা যায় । ভারত 2070 সালের মধ্যে দূষণ মুক্ত হতে চায় । সেদিক থেকে এই হাইড্রোজনের ব্যবহার খুবই জরুরি ।

Indias Green Hydrogen
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

এনটিপিসির প্রজেক্ট: বদলাতে পারে ভবিষ্যৎ

অন্ধ্রপ্রদেশের এই হাবটি 1,600 একর জায়গার উপর অবস্থিত । এখানে গ্রিন কেমিক্যাল থেকে শুরু করে আরও নানা কিছু উৎপাদন করা যাবে । পাশাপাশি সমুদ্রের জল পরিশোধন করে সেখান থেকে নুন বের করে ব্যবহার যোগ্য করার ব্যবস্থাও আছে এখানে। প্রতিবছর দেড় হাজার টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রিন মেথানলের মতো সামগ্রী বছরে সাড়ে সাত হাজার টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আর এই সমস্ত কারণে দক্ষিণের রাজ্যটিতে 1.85 লক্ষ কোটির বিনিয়োগ আসতে চলেছে ।

জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন

2023 সালে শুরু হয় জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশন। এর মাধ্যমে 2030 সালের মধ্যে বছরে 5 মিলিয়ন মেট্রিক টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে 60 হাজার চাকরির ব্যবস্থা হবে। পাশাপাশি 8 লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে । এক লক্ষ কোটি টাকার অপিরোশোধিত তেলের রফতানিও কমবে। গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহারে ভারতকে 'বিশ্বগুরু' করার কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে ।

Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

সামনে বিবিধ চ্যালেঞ্জ

গ্রিন হাইড্রোজনের ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হল খরচ-সংক্রান্ত । এক কেজি গ্রে বা ব্লু হাইড্রোজেন তৈরি করতে খরচ হয় 1.9 থেকে 2.4 মার্কিন ডলার । সেখানে গ্রিন হাইড্রোজনের জন্য খরচ হয় 3.5 থেকে 5.5 মার্কিন ডলার । ইলেকট্রোলাইজার প্রযুক্তি ছাড়া গ্রিন হাইড্রোজেন তৈরি করা যায় না । প্রতি কিলোওয়াট ইলেকট্রোলাইজারের জন্য খরচ 500 থেকে 1,800 মার্কিন ডলার । এর পাশাপাশি ভারতে ইলেকট্রোলাইজার উৎপাদনের ব্যবস্থাও তেমন শক্তপোক্ত নয় । এর জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হয় । যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন তাঁদের দিক থেকে এটি অবশ্যই আশঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে । তাঁদের মনে হবে, প্রথমত এই বিনিয়োগ একটা বড় সময়ের জন্য করতে হবে । সেদিক থেকে টাকা ফেরত আসার আগেই কোনও কারণে যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গোটা বিষয়টাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে । এখান থেকে মুক্তি পেতে কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন । প্রথমত হাইড্রোজেন কারা কিনবেন সেটা চিহ্নিত করে দীর্ঘমেয়াদের জন্য চুক্তি করতে হবে । পাশাপাশি এই ধরনের কাজ করতে সংশ্লিষ্ট সকলেরই মোটা অর্থের প্রয়োজন হয় । সেদিক থেকে ব্যাঙ্কের লোনের ক্ষেত্রে গ্যারেন্টার পাওয়া খুব জরুরি ।

India's Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

ভারতের সম্ভাবনা

কৌশলী বিনিয়োগের সাহায্যে ভারত গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে পারে । তাছাড়া সরকারি তরফে গ্রিন স্টিল উৎপাদনের উদ্যোগও সহায়ক হতে পারে । হাইড্রোজনের সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তি নিয়ে আরও বেশি করে গবেষণা করা দরকার । তা থেকে নতুন পথের সন্ধান মিলতে পারে । পাশাপাশি কার্বনের ব্যবহার কমাতে অনেক দেশ ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। সেই সমস্ত দেশ ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে । সেই সমস্ত দেশে গ্রিন স্টিল থেকে শুরু করে বিমাণ পরিবহণের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে ভারত । সেটাও রোজগারের পথ হয়ে উঠতে পারে ।

India's Green Hydrogen Revolution
গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ভারতের সম্ভাবনা (ইটিভি ভারত)

গ্রিন হাইড্রোজেন এবং শক্তি-নিরাপত্তা

শক্তি-নিরাপত্তার পথে হাঁটতে ভারত দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনা করছে । ভারত মোট যে পরিমাণ তেল রফতানি করে তার 80 শতাংশই অপরিশোধিত । গ্রিন হাইড্রোজেন এই প্রয়োজন কমিয়ে দিতে পারে । তাছাড়া হাইড্রোজেন ফুয়েল ব্যবহার করে ইলেকট্রিল ভেহিকেলও ব্যবহার করা যেতে পারে । স্টিল থেকে সিমেন্টের ক্ষেত্রেও গ্রিন হাইড্রোজনের ব্যবহার বড় পরিবর্তন আনতে পারে ।

আগামিদিনে কী কী হতে পারে ?

আবারও ব্যবহার করা যায় এমন শক্তি: 2030 সালের মধ্যে বছরে 5 মিলিয়ন টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন করতে গেলে আবারও ব্যবহার করা যায় এমন শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজন বাড়বে । 100 থেকে 125 গিগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়বে। সেদিকে নজর দেওয়া দরকার ।

দেশে উৎপাদনের ব্যবস্থা: ইলেকট্রোলাইজার দেশে উৎপাদন করা খুবই দরকারি ।

সরকারি নীতি এবং নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা: গ্রিন হাইড্রোজেন সংক্রান্ত নীতিতে বদল আনা দরকার । রফতানির ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে ।

সাধারণের সঙ্গে সহযোগ: সরকার থেকে শুরু করে যাঁরা গ্রিন হাইড্রোজেন নিয়ে চর্চা করছেন তাঁদের সঙ্গে সংযোগ রাখা খুব জরুরি ।

অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন: কীভাবে খরচ কমিয়ে গ্রিন হাইড্রোজেন তৈরি করা যায় সেটা বার করতে বিস্তারিত অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে । সেই কাজ নিরলসভাবেই করে যেতে হবে ।

উপসংহার

এনটিপিসির এই উদ্যোগ প্রযুক্তির দুনিয়ায় একটি মাইলফলক । দেশকে এক স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ দেওয়া এর লক্ষ্য । গ্রিন হাইড্রোজন নিয়ে কাজ করে ভারত শক্তি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পাবে । পাশাপাশি, গোটা দুনিয়া যেভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়ছে তাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারে । আর্থিক ক্ষেত্রে নতুন দিশাও খুলে দিতে পারে ।

(ডিসক্লেইমার: এই নিবন্ধে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব । এখানে প্রকাশিত তথ্য এবং বিশ্লেষণ ইটিভি ভারতের মতামতকে প্রতিফলিত করে না)

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.