কাটোয়া, 11 অক্টোবর: পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া 2 নম্বর ব্লকের সিঙ্গি গ্রাম ৷ এই গ্রামকে জেলার অধিকাংশ মানুষই একডাকে চেনেন ৷ কথিত আছে, এখানেই জন্মেছিলেন মহাভারতের রচয়িতা মহাকবি কাশীরাম দাস ৷ এই সিঙ্গি গ্রামের ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো এবার 111 বছরে পা দিল ৷ গ্রামে একাধিক পারিবারিক দুর্গাপুজো হলেও, ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো অন্যতম আকর্ষণ বলি প্রথা ৷ সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী, তিনদিন পাঁঠাবলি দেওয়ার রীতি রয়েছে এখানে ৷
ভোরের আলো ফোটার আগেই ঢাকের আওয়াজ, মানুষের কোলাহল, ধুনোর গন্ধে ভরে যায় সিঙ্গি গ্রাম ৷ শুক্লাসপ্তমী তিথিতে নবপত্রিকা স্নানের মধ্যে দিয়ে পুজোর সূচনা হয় ৷ পারিবারিক হলেও সিঙ্গি গ্রামে যতগুলি দুর্গাপুজো হয়, তার বেশিরভাগ পুজোর নবপত্রিকা একসঙ্গেই আনা হয় স্থানীয় একটি পুকুরে ৷ গ্রামের সেই পুকুরে সকলে সারিবদ্ধ ভাবে কলা বউকে স্নান করান ৷ তারপর যে যার নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়ে নবপত্রিকা স্থাপন করেন ৷
ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো এবার একশো এগারো বছরে পদার্পণ করেছে ৷ পারিবারিক রীতি মেনে আজও পুজোর তিনদিন পাঁঠাবলি দেওয়া হয় ৷ ভট্টাচার্য বাড়ির পাশেই আছে মনসা মন্দির ৷ সপ্তমীতে এখানে জোড়া পাঁঠাবলি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে ৷ একটা দুর্গাপুজোতে ৷ অপরটি মনসা মন্দিরে ৷ এছাড়া অষ্টমী ও নবমী পুজোতেও চলে পাঁঠাবলি। সন্ধিপুজো দেখার জন্য এখানে গ্রামবাসীদের ভিড় উপচে পড়ে ৷
ভট্টাচার্য পরিবারের প্রবীণ সদস্য সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, "একশো এগারো বছরের পুজো ৷ এটা পারিবারিক পুজো হলেও মহাসপ্তমীর দিন গ্রামের প্রায় বেশিরভাগ বাড়ির পুজোগুলির একসঙ্গে নবপত্রিকা স্নান করানো হয় ৷ পরে সেই নবপত্রিকা বাড়িতে এনে গণেশের পাশে স্থাপন করা হয় ৷ এছাড়া পাশে আছে মনসা বাড়ি ৷ সেখানেও পুজো করা হয় ৷ সেখানেই হয় পাঁঠাবলি ৷ দাদুর দাদা এই গ্রামে বাড়ি তৈরি করার পরে, গ্রামে কিছু মানুষের অনুরোধে পুজো শুরু হয় ৷ প্রথম থেকেই এখানে বলি প্রথা চলে আসছে ৷"