ওয়াশিংটন, 3 নভেম্বর: অপেক্ষা মাত্র দু'দিনের ৷ ভারতীয় সময় মঙ্গলবার রাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমেরিকায় ৷ সময় যত এগোচ্ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বনাম রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের লড়াইও ততটাই জমে উঠেছে ৷
শেষ মুহূর্তের প্রচার একেবারে তুঙ্গে ৷ হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা দখলে 538টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে 270টি ভোট পেতে হবে ট্রাম্প বা হ্যারিসকে ৷ আর এখানেই সকলের চোখ আমেরিকার আটটি সুইং স্টেটের দিকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ভোটের খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে- নেভাদা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিন ৷ একটি ওয়েবসাইটের দাবি, এই আট প্রদেশে সামান্য হলেও এগিয়ে আছেন ট্রাম্প।
ওভাল অফিসে (মার্কিন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়) তিনি বসবেন ৷ আত্মবিশ্বাসী বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ৷ স্থানীয় সময় শনিবার উইসকনসিন ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচারের সময় তিনি বলেন, "আমরা জিতবই ৷" সমর্থকদের কাছে তাঁর আর্জি, ইতিহাসের পাতা উল্টাে দেওয়ার এটাই সময় ৷ আমেরিকার নেতৃত্ব দিক নতুন প্রজন্ম ৷ রবিবার ও সোমবার তিনি মিশিগান, জর্জিয়া এবং পেনসিলভেনিয়ায় বক্তৃতা দেবেন বলে জানা গিয়েছে ৷
হ্যারিসের প্রতিপক্ষ আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ নির্বাচনী প্রচারে দু'দুবার তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ তবু তাঁকে দমানো যায়নি ৷ বিশ্বে 'আমেরিকাকে ফের মহান' দেশ করে তুলতে চান তিনি ৷ শনিবার তিনি সালেম-এ বক্তৃতা করছিলেন ৷ তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির একটা নতুন যুগের সূচনা হবে তাঁর নেতৃত্বে ৷
ইজরায়েল ও ইউক্রেনের যুদ্ধে আমেরিকার লাগাতার অনুদান দেওয়া, অভিবাসন নীতি, বাংলাদেশের হিন্দু-সহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার- প্রায় সবকিছুতেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে দায়ী করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প ৷ শুধু তাই নয়, হ্যারিসকে তিনি স্বাধীনচেতা ও চরম বাম মনোভাবাপন্ন বলেও অভিহিত করেছেন ৷
আগামী দু'দিন ডোনাল্ড ট্রাম্পও খুবই ব্যস্ত থাকবেন তাঁর প্রচার কর্মসূচি নিয়ে ৷ পাঁচটি সুইং স্টেট (মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনায়) প্রচার করবেন তিনি ৷ হোয়াইট হাউজের দখল নিতে একজন প্রার্থীকে 272টি ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হবে ৷
ভারতীয় বংশোদ্ভূত অশ্বেতাঙ্গ প্রার্থী কমলা হ্যারিস 226টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবেন ৷ এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই ৷ এই ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্প সামান্য পিছিয়ে। এখনও পর্যন্ত 219টি ভোট নিশ্চিত করতে পেরেছেন ৷ তাই জিততে হলে হ্যারিসের দরকার 44টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট এবং ট্রাম্পের 51 ৷ এখন সুইং স্টেটগুলি কাকে জেতায় আর কাকে হারাবে, সেটাই দেখার ? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, 19টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট নিয়ে পেনসিলভেনিয়া এবং 15টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মিশিগানই সব প্রশ্নের উত্তর জানে ৷ এই দু'টি প্রদেশে কে জিতবে তা বলা যাচ্ছে না ৷
RealClearPolitics.Com অনুযায়ী, এই সুইং স্টেটগুলিতে ট্রাম্প সামান্য এগিয়ে আছেন। শতাংশে বিচারে 1.1 শতাংশ ৷ এই স্টেটগুলিতে ট্রাম্প ও হ্যারিস একের পর এক বড় মিছিল করছেন ৷ তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ এবং ওহিও সেনেটর জেডি ভ্যান্স ৷
এই প্রদেশগুলিতে দু'তরফেই হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন ৷ তাঁরা মানুষের দরজায় গিয়ে কড়া নাড়ছেন ৷ আমেরিকাবাসীর কাছে আর্জি জানাচ্ছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসুন, ভোট দিন ৷ এই প্রচারে সামিল হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকাবাসীরাও ৷ পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং জর্জিয়ায় তাঁরা হ্যারিস ও ট্রাম্পের জন্য প্রচারে নেমেছেন ৷ দেশের সংবাদপত্র, টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, স্থানীয় রেডিয়ো স্টেশন- সর্বত্র প্রচার চলছে ৷ প্রার্থীরা লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করছেন প্রচারে ৷ ট্রাম্প ও হ্যারিস দুই প্রার্থীই রেকর্ড পরিমাণ অনুদান পেয়েছেন ৷