নিউইয়র্ক, 25 ফেব্রুয়ারি: একেবারে 'উলোট পুরাণ' ৷ একদিকে যখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ ৷ ঠিক তখনই পূর্বের সমস্ত অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়ে সোমবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষপূর্তীতে রাষ্ট্রসংঘের ভোটাভুটি থেকে সরে দাঁড়িয়ে মস্কোকে সমর্থন জানাল আমেরিকা ৷
সোমবার রাষ্ট্রসংঘে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করে ইউরোপীয় দেশগুলি ৷ সেই সঙ্গে, দীর্ঘ 3 বছর ধরে চলতে থাকা এই যুদ্ধে ইতি টানার জন্য রুশ সেনা প্রত্যাহারের জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করা হয় ৷ এই নিয়ে একটি ভোটাভুটির আয়োজন করা হয় ৷ ইউরোপীয় শরিকি দেশগুলির সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধি ৷ সেই সঙ্গে, ভোট দান থেকেও বিরত থাকে আমেরিকা ৷ স্বভাবতই, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত তির্যক নজরেই দেখছেন আন্তর্জাতিক মহলের কূটনীতিকরা ৷

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইতি টানতে ওয়াশিংটনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ এই আবহে বিশ্বের 193 সদস্যের রাষ্ট্রসংঘে আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত মোটেই ভালোভাবে নেওয়া হবে না, তা স্পষ্ট ৷ আমেরিকার বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় 93টি দেশ ৷ তবে, ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে ভারত ও চিন ৷
অবশ্য, রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও, নিরাপত্তা কাউন্সিলে প্রস্তাবের মূল খসড়ার উপর ভোটের জন্য জোড়াজুড়ি করে আমেরিকা ৷ যদিও, 15 সদস্যের এই কাউন্সিলেও প্রস্তাবের সপক্ষে 10টি ভোট পড়ে ৷ সেখানে ভোটদান থেকে বিরত থাকে ব্রিটেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, গ্রিস ও স্লোভেনিয়া ৷
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রথম থেকেই ইউক্রেনকে সমর্থন করেছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৷ বেশ কয়েকবার অত্য়াধুনিক যুদ্ধাস্ত্র দিয়েও সাহায্য করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ৷ আমেরিকার পাশাপাশি, ইউক্রেনের উপর রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় ন্যাটোর সদস্যরা ৷ ফলে, স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে আমেরিকার ৷ তবে, মার্কিন মসনদে দ্বিতীয়বার আসীন হওয়ার আগে এই সম্পর্ক উন্নতির ইঙ্গিত দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ল আমেরিকার, তা বলাই বাহুল্য ৷ এদিকে, মস্কোর সঙ্গে আলোচনার সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে 'একনায়ক' বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প ৷