ETV Bharat / international

শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সেনার হাতে বাংলাদেশ, কীভাবে এই পরিস্থিতি ? জানুন... - Bangladesh Unrest

Anti-government Protests in Bangladesh: শনিবার মধ্যরাত থেকে নতুন করে জ্বলছে বাংলাদেশ ৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন ৷ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দখল নিয়েছে দেশে সাধারণ মানুষ ৷ যেখানে সেনার হাতে চলে গিয়েছে শাসন ব্যবস্থা ৷ এরপর কী ? কোন দিকে যেতে চলেছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ?

Anti-government Protests in Bangladesh
অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ ৷ (ছবি- এএফপি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 5, 2024, 8:23 PM IST

ঢাকা, 5 অগস্ট: সরকারি চাকরি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পড়ুয়াদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তাঁর ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ দলের বিরুদ্ধে একটি নজিরবিহীন বিদ্রোহে পরিণত হয়েছে ৷ আর সরকারি বিরোধী এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার রাস্তায় রুট মার্চ শুরু করেছে আন্দোলনকারীরা ৷

কিন্তু, বিষয়টি এই মুহূর্তে আর কোনও সাধারণ আন্দোলনে থেমে নেই ৷ বাংলাদেশের যুবসমাজের হাসিনা ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের চূড়ান্ত ছবি হল, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন দখল ৷ বঙ্গ বন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি পর্যন্ত ভাঙা হয়েছে সেখানে ৷ এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা ৷ তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন ৷ সেখানে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনা রাজপথের দখল নিয়েছে ৷ বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ঘোষণা করেছেন, 48 ঘণ্টার মধ্যে সর্বদল বৈঠক করবেন ৷ সেই বৈঠকের পর, সেনা সরকার পরিচালনা করবে ৷

এখনও পর্যন্ত কী হয়েছে বাংলাদেশে ?

শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত উভয়পক্ষে তিনশোর বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ৷ তবে, এই বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল গত জুলাই মাস থেকে ৷ জুলাই মাসে বাংলাদেশের পড়ুয়ারা বিতর্কিত সংরক্ষণ পদ্ধতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছিল ৷ সরকারি চাকরি-সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে সংরক্ষণ প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হয় সেই বিক্ষোভ ৷ যেখানে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি সমর্থন জানিয়েছিল ৷

16 জুলাই থেকে সেই আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠে ৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা, নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারপন্থী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ৷ যার জেরে সরকার টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ার নির্দেশ দেয় ৷ কিন্তু, তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় হাসিনা সরকার কার্ফু জারি করে বাংলাদেশ জুড়ে ৷ সঙ্গে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ যার পরেই রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠে বাংলাদেশের সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন ৷

সরকার জানিয়েছিল জুলাই মাসে 150 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায় দু’শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ৷ তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করায় ৷ বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, বিতর্কিত সংরক্ষণ পদ্ধতি বিলোপ করা হচ্ছে ৷ এরপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে ৷ এই অবস্থায় কার্ফু প্রত্যাহার করে নেয় হাসিনা সরকার ৷

কিন্তু, এর পরবর্তী সময়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ আরও বাড়তে শুরু করে ৷ সর্বস্তরের লোকজন সেই আন্দোলনে সামিল হয় ৷ বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলগুলির সমর্থন পেতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা ৷ গত সপ্তাহের শেষের দিকে সরকার বিরোধী আন্দোলন নতুন করে মাথাচাড়া দিতে শুরু করে ৷ সুসংগঠিতভাবে নতুন করে সহিংস আন্দোলন শুরু হয় বাংলাদেশ জুড়া ৷

কেন এই প্রতিবাদ ও আন্দোলন ?

প্রথমে এই আন্দোলন ছিল সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ৷ যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 1971 সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করা সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৷ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য 30 শতাংশ পর্যন্ত সরকারি চাকরি বরাদ্দ করা হয় এই সংরক্ষণে ৷

বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগের সমর্থকদের সাহায্য় করছে ৷ আর সেই অভিযোগই, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের অধিকাংশকে একত্রিত করে ৷ এই অশান্তির মাঝেই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় বিতর্কিত সংরক্ষণ ব্যবস্থা কমিয়ে 5 শতাংশ করতে হবে ৷ যেখানে 93 শতাংশ চাকরি যোগ্যতা বিচারের মাধ্যমে দিতে হবে ৷ বাকি 2 শতাংশ চাকরি বরাদ্দ থাকবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, রূপান্তরকামী এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ৷

শেখ হাসিনা সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মেনেও নেয় ৷ এরপর ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করা ও কার্ফু প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন ৷ সরকার ভেবেছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে ৷ কিন্তু, এরপরও আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নেয় ৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা এবার দাবি করে, তাঁরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া অন্য কিছু চায় না ৷ সঙ্গে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার পদত্যাগও দাবি করে আন্দোলনকারীরা ৷ আর এই মন্ত্রিসভাকেই হিংসার জন্য দায়ী করে আন্দোলনকারীরা ৷

বাংলাদেশ সরকার কী বলছে ?

শেখ হাসিনা সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ এনে এবং অস্থিরতা প্রশমিত করার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ও কার্ফু ঘোষণা করেন ৷ হাসিনা জানান, যে আন্দোলনকারীরা হিংসার পথ বেছে নিচ্ছেন, তাঁরা কোনও মতে ছাত্র হতে পারেন না ৷ এরা অপরাধী ছাড়া আর কিছুই নয় ৷ এদের শক্ত হাতে দমন করা হবে ৷ হাসিনার এই ঘোষণার পরেই আন্দোলনকারীরা রবিবার দিনভর বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে তাণ্ডব চালায় ৷ ঢাকার নামী সরকারি হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করে ৷ গাড়ি ও সরকারি অফিসগুলিতে ভাঙচুর, আগুন ধরানোর মতো ঘটনা ঘটে ৷

এরপর আওয়ামি লিগের তরফে বলা হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে চলা এই সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে বিরোধী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বা বিএনপি এবং বর্তমানে নিষিদ্ধ জামাত-এ-ইসলামের মতো সংগঠনগুলি ৷ যারা পরিকল্পিতভাবে হিংসায় মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় ৷

তবে, বিরোধী দলগুলি দাবি করে, তারা আন্দোলনকারীদের সমর্থন করলেও, হিংসায় মদত দিচ্ছে না ৷ বদলে সরকারকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেয় বিরোধী দলগুলি ৷ আর তাতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে দাবি করে বিএনপি-র মতো দলগুলি ৷ অন্যদিকে, শেখ হাসিনা শতাধিক মৃত্যু ও অশান্তির জন্য দায়ী মূল অপরাধীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেন ৷ এমনকি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন হাসিনা ৷ কিন্তু, তা প্রত্যাখান করা হয় ৷

ঢাকা, 5 অগস্ট: সরকারি চাকরি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পড়ুয়াদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং তাঁর ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগ দলের বিরুদ্ধে একটি নজিরবিহীন বিদ্রোহে পরিণত হয়েছে ৷ আর সরকারি বিরোধী এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার রাস্তায় রুট মার্চ শুরু করেছে আন্দোলনকারীরা ৷

কিন্তু, বিষয়টি এই মুহূর্তে আর কোনও সাধারণ আন্দোলনে থেমে নেই ৷ বাংলাদেশের যুবসমাজের হাসিনা ও তাঁর প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের চূড়ান্ত ছবি হল, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন দখল ৷ বঙ্গ বন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি পর্যন্ত ভাঙা হয়েছে সেখানে ৷ এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা ৷ তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন ৷ সেখানে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনা রাজপথের দখল নিয়েছে ৷ বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ঘোষণা করেছেন, 48 ঘণ্টার মধ্যে সর্বদল বৈঠক করবেন ৷ সেই বৈঠকের পর, সেনা সরকার পরিচালনা করবে ৷

এখনও পর্যন্ত কী হয়েছে বাংলাদেশে ?

শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত উভয়পক্ষে তিনশোর বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ৷ তবে, এই বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল গত জুলাই মাস থেকে ৷ জুলাই মাসে বাংলাদেশের পড়ুয়ারা বিতর্কিত সংরক্ষণ পদ্ধতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছিল ৷ সরকারি চাকরি-সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে সংরক্ষণ প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হয় সেই বিক্ষোভ ৷ যেখানে লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি সমর্থন জানিয়েছিল ৷

16 জুলাই থেকে সেই আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠে ৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা, নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারপন্থী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ৷ যার জেরে সরকার টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ার নির্দেশ দেয় ৷ কিন্তু, তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় হাসিনা সরকার কার্ফু জারি করে বাংলাদেশ জুড়ে ৷ সঙ্গে গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ যার পরেই রক্তক্ষয়ী হয়ে ওঠে বাংলাদেশের সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন ৷

সরকার জানিয়েছিল জুলাই মাসে 150 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ কিন্তু, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায় দু’শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন ৷ তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করায় ৷ বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, বিতর্কিত সংরক্ষণ পদ্ধতি বিলোপ করা হচ্ছে ৷ এরপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে ৷ এই অবস্থায় কার্ফু প্রত্যাহার করে নেয় হাসিনা সরকার ৷

কিন্তু, এর পরবর্তী সময়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ আরও বাড়তে শুরু করে ৷ সর্বস্তরের লোকজন সেই আন্দোলনে সামিল হয় ৷ বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলগুলির সমর্থন পেতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা ৷ গত সপ্তাহের শেষের দিকে সরকার বিরোধী আন্দোলন নতুন করে মাথাচাড়া দিতে শুরু করে ৷ সুসংগঠিতভাবে নতুন করে সহিংস আন্দোলন শুরু হয় বাংলাদেশ জুড়া ৷

কেন এই প্রতিবাদ ও আন্দোলন ?

প্রথমে এই আন্দোলন ছিল সংরক্ষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ৷ যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 1971 সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করা সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৷ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য 30 শতাংশ পর্যন্ত সরকারি চাকরি বরাদ্দ করা হয় এই সংরক্ষণে ৷

বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগের সমর্থকদের সাহায্য় করছে ৷ আর সেই অভিযোগই, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের অধিকাংশকে একত্রিত করে ৷ এই অশান্তির মাঝেই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় বিতর্কিত সংরক্ষণ ব্যবস্থা কমিয়ে 5 শতাংশ করতে হবে ৷ যেখানে 93 শতাংশ চাকরি যোগ্যতা বিচারের মাধ্যমে দিতে হবে ৷ বাকি 2 শতাংশ চাকরি বরাদ্দ থাকবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, রূপান্তরকামী এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ৷

শেখ হাসিনা সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মেনেও নেয় ৷ এরপর ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করা ও কার্ফু প্রত্যাহার করে নেয় প্রশাসন ৷ সরকার ভেবেছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে ৷ কিন্তু, এরপরও আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নেয় ৷ আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা এবার দাবি করে, তাঁরা শেখ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া অন্য কিছু চায় না ৷ সঙ্গে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার পদত্যাগও দাবি করে আন্দোলনকারীরা ৷ আর এই মন্ত্রিসভাকেই হিংসার জন্য দায়ী করে আন্দোলনকারীরা ৷

বাংলাদেশ সরকার কী বলছে ?

শেখ হাসিনা সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ এনে এবং অস্থিরতা প্রশমিত করার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ও কার্ফু ঘোষণা করেন ৷ হাসিনা জানান, যে আন্দোলনকারীরা হিংসার পথ বেছে নিচ্ছেন, তাঁরা কোনও মতে ছাত্র হতে পারেন না ৷ এরা অপরাধী ছাড়া আর কিছুই নয় ৷ এদের শক্ত হাতে দমন করা হবে ৷ হাসিনার এই ঘোষণার পরেই আন্দোলনকারীরা রবিবার দিনভর বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে তাণ্ডব চালায় ৷ ঢাকার নামী সরকারি হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করে ৷ গাড়ি ও সরকারি অফিসগুলিতে ভাঙচুর, আগুন ধরানোর মতো ঘটনা ঘটে ৷

এরপর আওয়ামি লিগের তরফে বলা হয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে চলা এই সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে বিরোধী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি বা বিএনপি এবং বর্তমানে নিষিদ্ধ জামাত-এ-ইসলামের মতো সংগঠনগুলি ৷ যারা পরিকল্পিতভাবে হিংসায় মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় ৷

তবে, বিরোধী দলগুলি দাবি করে, তারা আন্দোলনকারীদের সমর্থন করলেও, হিংসায় মদত দিচ্ছে না ৷ বদলে সরকারকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেয় বিরোধী দলগুলি ৷ আর তাতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে দাবি করে বিএনপি-র মতো দলগুলি ৷ অন্যদিকে, শেখ হাসিনা শতাধিক মৃত্যু ও অশান্তির জন্য দায়ী মূল অপরাধীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেন ৷ এমনকি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন হাসিনা ৷ কিন্তু, তা প্রত্যাখান করা হয় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.