কলকাতা: বর্ষাকাল শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ৷ তবে সঠিক সতর্কতা ও চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি এড়ানো যায় । বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে শ্বাসকষ্টের রোগীরা সুস্থ থাকতে পারবেন ৷
বর্ষায় শ্বাসকষ্ট: দিল্লির লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ আশরির কোরেশি বলেন, "বর্ষাকালে পরিবেশে আর্দ্রতা এবং ঠান্ডা লাগা অ্যাজমা রোগীদের জন্য মারাত্মক সমস্যার কারণ হতে পারে । একইসঙ্গে আর্দ্রতার কারণে পরিবেশে ছত্রাক ও ধূলিকণা বেড়ে যায় যা হাঁপানি রোগীদের অ্যাজমা অ্যাটাক বাড়াতে পারে ।"
একইসঙ্গে এই মরশুমে অ্যালার্জির প্রকোপও বেড়ে যায় । প্রকৃতপক্ষে, এই মরশুমে পরিবেশে ছত্রাক ও ধুলোবালি ছাড়াও মশা, মাছি, মাকড়সা এবং আরও অনেক পোকামাকড়ের প্রকোপও বেড়ে যায় ৷ যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শ্বাসকষ্টের রোগীদের এমনকি অনেক সময় সাধারণ মানুষের মধ্যেও অ্যালার্জির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এছাড়া যাদের বাড়িতে কুকুর বা বিড়ালের মতো পোষা প্রাণী আছে বা যারা এই মরশুমে পশুপাখির সংস্পর্শে বেশি থাকেন তাদের মধ্যেও পশুর কারণে অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া বাড়তে পারে । এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, চোখে জ্বালাপোড়া, নাক দিয়ে জল পড়া এবং শ্বাস নিতে অসুবিধার মতো অনেক সমস্যা হতে পারে ।
এছাড়া বর্ষাকালে যেহেতু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায় । যা শ্বাসকষ্ট এবং অ্যালার্জির প্রভাবকে আরও খারাপ করতে পারে ।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা: ডাঃ আশির কোরেশি ব্যাখ্যা করেছেন, যারা হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস বা অন্য যে কোনও ফুসফুসের রোগের মতো শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন বা যারা অ্যালার্জির প্রতি বেশি সংবেদনশীল তাদের এই ঋতুতে আরও সতর্ক হওয়া দরকার । এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে এই ধরনের মানুষের ওষুধ, খাদ্য ও আচরণের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ।
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: আপনার ঘর পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন । এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করাও সহায়ক হতে পারে ।
সংক্রমণ এড়িয়ে চলুন: বর্ষাকালে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে ৷ তাই নিয়মিত হাত ধোবেন এবং ভিড়ের জায়গা এড়িয়ে চলুন । আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা এড়িয়ে চলুন ।
ইনহেলার ও ওষুধ সম্পর্কিত সতর্কতা: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, নিয়মিত ইনহেলার এবং ওষুধ ব্যবহার করুন । এর পাশাপাশি হাঁপানি রোগীদের সবসময় জরুরি ওষুধ ও ইনহেলার ডাক্তারের পরামর্শে রাখতে হবে । যাতে অ্যাজমা অ্যাটাক হলে অবস্থার অবনতি রোধ করা যায় ।
আপনার খাদ্যের যত্ন নিন: খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন । তাজা ফল, শাকসবজি এবং ভেষজ চা খান । মশলাদার ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন ।
যোগব্যায়াম: নিয়মিত যোগব্যায়াম শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য উপকারী । এটি শ্বাসযন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে । প্রাণায়াম এবং অনুলোম-বিলোমের মতো শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে ।
পরিণামদর্শী হত্তয়া: আবহাওয়ার পরিবর্তনের দিকে মনোযোগ দিন এবং আপনার শরীরের সংকেতগুলি বুঝুন । অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন ।