কলকাতা: কথায় কথায় রেগে যাচ্ছেন ? যত বেশি রাগ একজন মানুষকে তত বেশি সব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । অহেতুক রাগ জীবনে অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে । একইসঙ্গে রাগ কখনও কখনও প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা । গবেষকরা জানান, যাঁরা সবসময় রাগে ডুবে থাকেন তাঁদের হার্টের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে ।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি আরভিং মেডিক্যাল সেন্টার, ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিন ডা. ইয়ান এম ক্রোনিশ, ড. কারিনা ডব্লিউ ডেভিডসনের গবেষণায় বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন । এই গবেষণার অংশ হিসাবে, 18 থেকে 73 বছর বয়সি 280 জন সুস্থ মানুষের উপর গবেষণা করা হয়েছিল । 280 জনকে 4 টি দলে ভাগ করা হয়েছিল । যারফলে রাগ, ব্যথা, উদ্বেগ এবং চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল । গবেষণাটি প্রায় 8 মিনিট ধরে প্রতিটি গ্রুপের সদস্যদের উপর পরিচালিত হয়েছিল । এরপর সংশ্লিষ্ট গ্রুপের সদস্যদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয় । প্রতিটি গ্রুপের সদস্যদের রক্তে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে । উদ্বিগ্ন এবং চাপগ্রস্ত গ্রুপের সদস্যদের তুলনায় রাগান্বিত গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পাওয়া গিয়েছে ।
গবেষকরা লক্ষ করেছেন, রাগান্বিত গ্রুপে রক্তনালীগুলির প্রসারিত করার ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে । মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য রাগ করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায় । তাছাড়া, এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, খুব বেশি আবেগ হার্টের উপর গভীর প্রভাব ফেলে । বিজ্ঞানীরা জানান, এই গবেষণা রাগ এবং হার্ট অ্যাটাকের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্রের উপর আলোকপাত করেছে । এই বিবরণগুলি 2017 সালে সাইকোসোম্যাটিক মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল । এনআইএইচ- এর গবেষকরাও একই বিষয় প্রকাশ করেছেন ।
মনোবিজ্ঞানীরা কী বলে থাকেন ?
উত্তরাখণ্ডের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ রেণুকা শর্মা বলেন, "খুব বেশি রাগ সমস্যা হতে পারে । রাগ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য নয়, শারীরিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে । রাগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং মাথাব্যথার সমস্যা দেখা যায় । এই ধরনের মানুষদের মধ্যে হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি । হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় । সেজন্য রাগকে যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় ।"
কীভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন ?
ডঃ রেণুকা শর্মা বলেন, "ব্যায়াম, যোগাসন এবং ধ্যান করা রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষভাবে সহায়ক । এছাড়াও আপনার প্রিয় শখগুলির মধ্যে একটি বেছে নিন এবং এতে ফোকাস করুন যেমন নাচ, একটি বই পড়া, গান শোনা বা পেইন্টিং করা । এটি করলে কিছুটা উপকার হবে ।"
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য পুষ্টিবিদ-বিশেষজ্ঞের ব্যক্তিগত মতামত ও প্রচলিত ধারণার উপর ভিত্তি করে লেখা ৷ শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)