হায়দরাবাদ: গরমকাল এমন একটি ঋতু যখন খাবার খাওয়ার চেয়ে বেশি জল পান করা প্রয়োজন । কারণ এই ঋতুতে হিট স্ট্রোক এবং ডি-হাইড্রেশনের সমস্যা বেশি দেখা দেয় । হাইড্রেটেড থাকার জন্য প্রচুর জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় । তবে জল ছাড়াও এমন কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন যেটি আপনার পেট ঠান্ডা করতে সাহায্য় করবে ৷ এছাড়াও আপনার শরীরে বাড়তি মেদ ঝড়াতে সাহায্য করবে ৷ এই খাবারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন পুষ্টিবিদ ৷
গরমের ডায়েট প্ল্যান: প্রথমেই বলা হয়ে থাকে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে খাওয়া দরকার ডিটক্স ওয়াটার ৷ যেটা আপনার বাড়িতেই ভাবেই বানাতে পারবেন ৷ 3 থেকে 4টে পুদিনা পাতা এবং 2 থেকে 3টে আঙুর হাফ করে কেটে ভিজিয়ে রাখতে হবে ৷ তারমধ্যে দিতে হবে এক চা চামচ জিরে ও শশা ৷ এগুলি দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে ওই জল খাওয়া উপকারী ৷ এরপর কারও যদি ব্ল্যাক টি খেতে ইচ্ছা করে খেতে পারেন ৷ তবে এটা চেষ্টা করা প্রয়োজন যে ব্রেকফাস্ট যেন ঘুম থেকে ওঠার পর 45 মিনিটের মধ্যে হয়ে যায় ৷
ব্রেকফাস্টে এই জিনিসগুলি রাখতে পারেন (You can have these things in breakfast) ৷
- মুড়ি খেতে পারেন ৷ মুড়ির সঙ্গে ছাতু, কিশমিশ, আমন্ড এগুলি দিয়ে খেতে পারেন ৷
- চিড়ের সঙ্গে দই, লেবুর রস অল্প পরিমাণ, কিশমিশ যোগ করে খেতে পারেন ৷
- যারা সকালে ভাত খেতে পারেন তারা রাতে করে রাখা ভাত জল দিয়ে খেতে পারেন ৷ তারসঙ্গে হালকা তেলে কিছু সবজি বা ডিমের সাদা অংশ ভাজা রাখা যেতে পারে ৷
- এছাড়াও সবসময় একটু ঠান্ডা জাতীয় জিনিস খাওয়া প্রয়োজন ৷ যাতে সারাদিন শরীর ঠান্ডা থাকে ৷ এতে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম হওয়া যায় ৷
এরপর মিড মর্নিং সময় অর্থাৎ 10.30 থেকে 11টার মধ্যে ফল খাওয়া বাধ্যতামূলক ৷ মরশুমি ফল খাওয়া জরুরি ৷ যেমন তরমুজ, পাকা পেঁপে খেতে পারেন ৷ এছাড়াও মিক্সড ফ্রুট হিসাবে খেতে পারেন ৷ আঙুর, পেঁপে, তরমুজ চাট মশলা দিয়ে খেতে পারেন ৷ এগুলি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী ৷ এছাড়াও একটা স্বাস্থ্যকর জুস খেতে পারেন ৷ আঙুর, চিয়া সিড, পুদিনা পাতা একসঙ্গে মিক্সিতে দিয়ে জুস বানিয়ে খেতে পারেন ৷ আপনি যদি রাস্তায় থাকেন তাহলে এর বদলে ডাবের জল খেতে পারেন ৷
দুপুরে খাবারে কী কী খেতে পারেন (What can you eat for lunch)?
গরমের সময় পেট ঠান্ডা রাখতে সবসময় ঠান্ডা জিনিস খাওয়া দরকার ৷ এর জন্য টক ডাল খাওয়া খুব ভালো হবে ৷ এই ডালে আমড়া, টমেটো বা আম দিয়ে তৈরি করে খাওয়া প্রয়োজন ৷ এরসঙ্গে ভাত খাওয়া প্রয়োজন ৷ যারা ওজন কমাতে চাইছেন তারা ভাত খেয়েও ওজন কমাতে পারেন ৷ তবে সেটি পরিমাণ মতো খাওয়া প্রয়োজন ৷ আড়াই কাপ মতো ভাত খাওয়া প্রয়োজন ৷ এর সঙ্গে এক কাপ সবজি এবং এর সঙ্গে ডাল, মাছ অথবা চিকেন রাখতে পারেন ৷ তবে চিকেন খুব বেশি নয়, ছোট পিস 3-4টে রাখতে পারেন ৷ এটি ওজন কমাতেও সাহায্য় করবে ৷ এরপর খাওয়ার পর দেড় থেকে দু'ঘণ্টা পর এক কাপ দই খাওয়া প্রয়োজন ৷ এটি ঘরে পাতা হলে ভালো. তবে বাজারজাত দইও কিনে খাওয়া যাবে ৷ বিকেলে 5টা থেকে 5.30 সময় একটা ডিটক্স টি রাখতে পারেন ৷
তবে সন্ধ্যের টিফিনে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা প্রয়োজন ৷ এর বদলে কাঁচা আম গ্রেট করে কেটে ছোলা, শশা চাটমশলা দিয়ে খেতে পারেন ৷ এছাড়াও বেসনের বড়া করে দইয়ের মধ্যে দিয়ে স্ন্যাক্সে খেতে পারেন ৷ এছাড়াও আপনি ডিম খেতে পছন্দ করলে ডিমের একটা সাদা অংশ খেতে পারেন ৷ ছাতুর শরবত, দইয়ের ঘোল এগুলি টিফিনে রাখতে পারেন ৷
এরপর ডিনার সবসময় একটু তাড়াতাড়ি করে নেওয়া ভালো ৷ 6.30 থেকে 8টার মধ্যে করে নেওয়াই ভালো ৷ রাতে যারা রুটি খেতে পছন্দ করেন তারা রুটি রাখতে পারেন ৷ আপনি আটার সঙ্গে ছাতু যোগ করে রুটি বানাতে পারেন ৷ এই রুটির সঙ্গে সবজি রাখতেই হবে ৷ এর সঙ্গে ডাল অথবা ডালের জল ও দইয়ের ঘোল রাখা জরুরি ৷ যারা ভাত পছন্দ করেন তারা ভাত খেতে পারেন ৷ সঙ্গে সবজি আর হালকা পাতলা মাছের ঝোল রাখতে পারেন ৷ ফলে এটি ডাইজেশন প্রোটিন পুরোটা ব্যালেন্স করতে সাহায্য় করবে ৷
যারা চিকেন খেতে পছন্দ করেন তারা সবজির সঙ্গে চিকেন স্যুপ রাখতে পারেন ৷ এরসঙ্গে 2 পিস ব্রাউন ব্রেড খেতে পারেন ৷ এই খাবার্ সঙ্গে প্রচুর জল খাওয়া প্রয়োজন ৷ 3.5 থেকে 4 লিটার জল খাওয়া প্রয়োজন ৷
এছাড়াও তিনি একটা ড্রিঙ্কের রেসিপির কথা বলেন ৷ তিনি বলেন এটি ম্যাজিক ড্রিঙ্ক হিসাবে কাজ করে ৷ ওজন কমাতেও সাহায্য় করে ৷ এর জন্য লাগবে একটি তেজপাতা, এক ইঞ্চি দারুচিনি, এক চা চামচ জিরে, এক লিটার জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তার মধ্যে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে ওই জল সারাদিনে খেতে পারলে ওজন কমাতে যেমন সাহায্য় করবে তেমনি পেটও ঠান্ডা থাকবে ৷
আরও পড়ুন: