ETV Bharat / health

স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে গ্লুটেন অ্যালার্জি, কী বলছেন চিকিৎসক ? - gluten can be harmful for health

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 10, 2024, 1:24 PM IST

Allergy to Gluten: খাদ্য অ্যালার্জি একটি খুব সাধারণ সমস্যা । বিশেষ করে দুগ্ধজাত দ্রব্য বা বিভিন্ন ধরনের বাদাম সম্পর্কে অনেকের মধ্যে খাদ্য অ্যালার্জি দেখা যায় । গ্লুটেনের প্রতি অ্যালার্জিও এক ধরনের খাদ্য অ্যালার্জি যা বিশেষ করে গম বা বার্লির সঙ্গে সম্পর্কিত ।

Allergy for Gluten News
গ্লুটেন থেকে অ্যালার্জি স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা: অনেকের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্যের কারণে অ্যালার্জি দেখা যায় । যদি খাদ্যাভ্যাসে সতর্ক না-হন, তবে কখনও কখনও গুরুতর সমস্যা হতে পারে । সাধারণ খাদ্য উপাদান যা সাধারণত মানুষের মধ্যে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে তারমধ্যে রয়েছে ল্যাকটোজ-সমৃদ্ধ খাবার যেমন- দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য, পোল্ট্রি পণ্য যেমন- ডিম, মাংস, কিছু শাকসবজি, চিনাবাদাম এবং কিছু অন্যান্য বাদাম, তেল, এমনকী কিছু ফল ও অ্যালকোহল রয়েছে ৷ এছাড়াও বলা হয় গ্লুটেন যুক্ত খাদ্য অ্যালার্জির কারণ হতে পারে ৷

গ্লুটেন কী (What Is Gluten)?

নয়াদিল্লির ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডাঃ দিব্যা শর্মা বলেন, "গ্লুটেন হল এক ধরনের প্রোটিন যা গম, বার্লি অন্যান্য কিছু শস্যে পাওয়া যায় । এই প্রোটিন ময়দাকে নরম করে তোলে ৷ ফলে বেকারি পণ্যগুলি নরম হয় ।"

গ্লুটেন দু’টি প্রধান প্রোটিন দ্বারা গঠিত: গ্লিয়াডিন এবং গ্লুটেনিন । ময়দায় জল যোগ করা হলে একটি প্রোটিন তৈরি হয় ৷ যা ময়দাকে নরম এবং প্রসারিত করে । এটি রুটি ও অন্যান্য বেকারি পণ্যতে ব্যবহার করা হয় ।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, গ্লুটেন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও এটি ক্ষতিকারক নয় ৷ তবে এটি কিছুজনের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে । বিশেষ করে সিলিয়াক রোগ, নন-সিলিয়াক গ্লুটেন গমের অ্যালার্জিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ।

তিনি আরও বলেন, "যদি একজন ব্যক্তি রুটি, পাস্তা, ময়দা, বার্লি থেকে তৈরি খাবার খাওয়ার পরে নির্দিষ্ট লক্ষণগুলি অনুভব করেন যেমন-পেটে ব্যথা, খিঁচুনি, বদহজম, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, নাক বন্ধ হওয়া, হাঁচি, মাথাব্যথা, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে অস্বস্তি বা আমবাত ও ফুসকুড়ি ইত্যাদি তাহলে অবশ্যই একবার অ্যালার্জি পরীক্ষা করানো উচিত ।"

সিলিয়াক রোগ: সিলিয়াক ডিজিজ হল একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম গ্লুটেনকে ক্ষতিকর মনে করে অন্ত্রের প্রাচীর ক্ষতি করতে পারে । এটি অন্ত্রে প্রদাহ এবং ক্ষতির কারণ হয় ৷ যা পুষ্টির শোষণে বাধা দেয় । সিলিয়াক রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, ক্লান্তি, ওজন হ্রাস এবং ত্বকের ফুসকুড়ি হতে পারে ।

তবে কিছু জনের সিলিয়াক রোগ নেই ৷ তবে তারা যখন গ্লুটেন খায় তখন তাদের সমস্যা হয় । একে বলা হয় নন-সেলিয়াক গ্লুটেন সংবেদনশীলতা । এর লক্ষণগুলি সিলিয়াক রোগের মতো হতে পারে তবে এটি অন্ত্রের ক্ষতি করে না । এর লক্ষণগুলির মধ্যে পেট ব্যথা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং পেশী ব্যথা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ।

গমের অ্যালার্জি: গমের অ্যালার্জি হল একটি অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া যেখানে শরীর গ্লুটেন-সহ গমের মধ্যে পাওয়া প্রোটিনগুলিকে ক্ষতিকারক বলে মনে করে । এর লক্ষণগুলির মধ্যে ত্বকে চুলকানি, শ্বাস নিতে অসুবিধা, পেটে ব্যথা ও কখনও কখনও অ্যানাফিল্যাক্সিস অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ।

গ্লুটেন অ্যাটাক্সিয়া: এটি একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার ৷ যা নির্দিষ্ট স্নায়ু এবং টিস্যুকে প্রভাবিত করে ৷ পেশী নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্য ইত্যাদিতে সমস্যা সৃষ্টি করে ।

ডাঃ দিব্যা শর্মা বলেন, "চিকিৎসকরা অনেকসময় গ্লুটেন এবং এর ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি নির্ণয়ের জন্য কিছু বিশেষ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন ।"

রক্ত পরীক্ষা: সিলিয়াক রোগ সনাক্ত করতে রক্তে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয় ।

অন্ত্রের বায়োপসি: সিলিয়াক রোগ নিশ্চিত করার জন্য অন্ত্রের বায়োপসি করা হয় এবং অ্যালার্জি সনাক্ত করতে স্কিন প্রিক টেস্ট বা রক্ত ​​পরীক্ষা ইত্যাদি ।

সতর্কতা ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন:

ডাঃ দিব্যা শর্মা আরও জানান, খাবারের অ্যালার্জি কখনও কখনও স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কিছু অ্যালার্জি এমনকি জীবন-ঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে । অতএব এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে এবং কোনও অস্বাভাবিক লক্ষণ উপেক্ষা না করে । ফলে এটি পরীক্ষা করা প্রয়োজন ৷

গ্লুটেন থেকে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা ও ওষুধ, খাদ্য সম্পর্কে তার পরামর্শ অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এজন্য চিকিৎসকরা গ্লুটেন-মুক্ত খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন । যার মধ্যে গ্লুটেন যুক্ত খাবার খাদ্য থেকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া হয় ।

গ্লুটেন মুক্ত খাদ্য: তিনি বলেন "আমরা যদি গ্লুটেন মুক্ত খাদ্যের কথা বলি, তাহলে এতে ফল, শাকসবজি, ডিম, প্রক্রিয়াজাত মাংস, মাছ, মুরগির মাংস, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, ভুট্টার আটা, অ্যারারুট, পোলেন্টা, চাল, সয়াবিন, শিম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত । ময়দা, বাজরা এবং কুইনোয়া ইত্যাদি । কিন্তু খাদ্যতালিকায় এসব অন্তর্ভুক্ত করার আগে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি ।

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে)

কলকাতা: অনেকের মধ্যে বিভিন্ন খাদ্যের কারণে অ্যালার্জি দেখা যায় । যদি খাদ্যাভ্যাসে সতর্ক না-হন, তবে কখনও কখনও গুরুতর সমস্যা হতে পারে । সাধারণ খাদ্য উপাদান যা সাধারণত মানুষের মধ্যে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে তারমধ্যে রয়েছে ল্যাকটোজ-সমৃদ্ধ খাবার যেমন- দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য, পোল্ট্রি পণ্য যেমন- ডিম, মাংস, কিছু শাকসবজি, চিনাবাদাম এবং কিছু অন্যান্য বাদাম, তেল, এমনকী কিছু ফল ও অ্যালকোহল রয়েছে ৷ এছাড়াও বলা হয় গ্লুটেন যুক্ত খাদ্য অ্যালার্জির কারণ হতে পারে ৷

গ্লুটেন কী (What Is Gluten)?

নয়াদিল্লির ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডাঃ দিব্যা শর্মা বলেন, "গ্লুটেন হল এক ধরনের প্রোটিন যা গম, বার্লি অন্যান্য কিছু শস্যে পাওয়া যায় । এই প্রোটিন ময়দাকে নরম করে তোলে ৷ ফলে বেকারি পণ্যগুলি নরম হয় ।"

গ্লুটেন দু’টি প্রধান প্রোটিন দ্বারা গঠিত: গ্লিয়াডিন এবং গ্লুটেনিন । ময়দায় জল যোগ করা হলে একটি প্রোটিন তৈরি হয় ৷ যা ময়দাকে নরম এবং প্রসারিত করে । এটি রুটি ও অন্যান্য বেকারি পণ্যতে ব্যবহার করা হয় ।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, গ্লুটেন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও এটি ক্ষতিকারক নয় ৷ তবে এটি কিছুজনের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে । বিশেষ করে সিলিয়াক রোগ, নন-সিলিয়াক গ্লুটেন গমের অ্যালার্জিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ।

তিনি আরও বলেন, "যদি একজন ব্যক্তি রুটি, পাস্তা, ময়দা, বার্লি থেকে তৈরি খাবার খাওয়ার পরে নির্দিষ্ট লক্ষণগুলি অনুভব করেন যেমন-পেটে ব্যথা, খিঁচুনি, বদহজম, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, নাক বন্ধ হওয়া, হাঁচি, মাথাব্যথা, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে অস্বস্তি বা আমবাত ও ফুসকুড়ি ইত্যাদি তাহলে অবশ্যই একবার অ্যালার্জি পরীক্ষা করানো উচিত ।"

সিলিয়াক রোগ: সিলিয়াক ডিজিজ হল একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম গ্লুটেনকে ক্ষতিকর মনে করে অন্ত্রের প্রাচীর ক্ষতি করতে পারে । এটি অন্ত্রে প্রদাহ এবং ক্ষতির কারণ হয় ৷ যা পুষ্টির শোষণে বাধা দেয় । সিলিয়াক রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, ক্লান্তি, ওজন হ্রাস এবং ত্বকের ফুসকুড়ি হতে পারে ।

তবে কিছু জনের সিলিয়াক রোগ নেই ৷ তবে তারা যখন গ্লুটেন খায় তখন তাদের সমস্যা হয় । একে বলা হয় নন-সেলিয়াক গ্লুটেন সংবেদনশীলতা । এর লক্ষণগুলি সিলিয়াক রোগের মতো হতে পারে তবে এটি অন্ত্রের ক্ষতি করে না । এর লক্ষণগুলির মধ্যে পেট ব্যথা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং পেশী ব্যথা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ।

গমের অ্যালার্জি: গমের অ্যালার্জি হল একটি অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া যেখানে শরীর গ্লুটেন-সহ গমের মধ্যে পাওয়া প্রোটিনগুলিকে ক্ষতিকারক বলে মনে করে । এর লক্ষণগুলির মধ্যে ত্বকে চুলকানি, শ্বাস নিতে অসুবিধা, পেটে ব্যথা ও কখনও কখনও অ্যানাফিল্যাক্সিস অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ।

গ্লুটেন অ্যাটাক্সিয়া: এটি একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার ৷ যা নির্দিষ্ট স্নায়ু এবং টিস্যুকে প্রভাবিত করে ৷ পেশী নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাস্থ্য ইত্যাদিতে সমস্যা সৃষ্টি করে ।

ডাঃ দিব্যা শর্মা বলেন, "চিকিৎসকরা অনেকসময় গ্লুটেন এবং এর ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি নির্ণয়ের জন্য কিছু বিশেষ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন ।"

রক্ত পরীক্ষা: সিলিয়াক রোগ সনাক্ত করতে রক্তে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয় ।

অন্ত্রের বায়োপসি: সিলিয়াক রোগ নিশ্চিত করার জন্য অন্ত্রের বায়োপসি করা হয় এবং অ্যালার্জি সনাক্ত করতে স্কিন প্রিক টেস্ট বা রক্ত ​​পরীক্ষা ইত্যাদি ।

সতর্কতা ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন:

ডাঃ দিব্যা শর্মা আরও জানান, খাবারের অ্যালার্জি কখনও কখনও স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কিছু অ্যালার্জি এমনকি জীবন-ঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে । অতএব এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে মানুষ তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে এবং কোনও অস্বাভাবিক লক্ষণ উপেক্ষা না করে । ফলে এটি পরীক্ষা করা প্রয়োজন ৷

গ্লুটেন থেকে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা ও ওষুধ, খাদ্য সম্পর্কে তার পরামর্শ অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এজন্য চিকিৎসকরা গ্লুটেন-মুক্ত খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন । যার মধ্যে গ্লুটেন যুক্ত খাবার খাদ্য থেকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া হয় ।

গ্লুটেন মুক্ত খাদ্য: তিনি বলেন "আমরা যদি গ্লুটেন মুক্ত খাদ্যের কথা বলি, তাহলে এতে ফল, শাকসবজি, ডিম, প্রক্রিয়াজাত মাংস, মাছ, মুরগির মাংস, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, ভুট্টার আটা, অ্যারারুট, পোলেন্টা, চাল, সয়াবিন, শিম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত । ময়দা, বাজরা এবং কুইনোয়া ইত্যাদি । কিন্তু খাদ্যতালিকায় এসব অন্তর্ভুক্ত করার আগে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি ।

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে)

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.