হায়দরাবাদ, 23 অগস্ট: মেয়েদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে সমাজে থেকে সমাজের সঙ্গে লড়াই নতুন নয় ৷ আরজি করের মতো ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের সুনামি ওঠাও নতুন নয় ৷ কিন্তু তাতেও কী থামছে অপরাধ? কেন নতুন বিল এনে কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয় না, প্রশ্ন তুললেন অভিনেত্রী রাইমা সেন, ঋতাভরী চক্রবর্তী ৷ অন্যদিকে 'গরুড়পুরাণ' থেকে ধর্ষকদের অভিনব শাস্তির কথা তুলে ধরলেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ৷
সোশাল মিডিয়ায় তিন অভিনেত্রী নিজেদের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেছেন ৷ তারমধ্যে রাইমা-ঋতাভরী কেন এখনও পর্যন্ত ধর্ষকদের জন্য কড়া আইন প্রণয়ন করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ রাইমা সেন নিজের ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে লেখেন, "2012 সালে তাঁরা শুধু ধর্ষণ করেনি, মেয়েটার অঙ্গ নিয়ে খেলা করেছে ৷ এটা দিল্লির ঘটনা ৷ নাম দেওয়া হল নির্ভয়া ৷ 2017 সালে মেয়েটার শুধু ধর্ষণ করা হয়নি, তাঁকে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ উন্নাওয়ের ঘটনা ৷ আবারও নাম দেওয়া হল নির্ভয়া ৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে বছরের পর বছর মোমবাতি জ্বালানো হয়েছে ৷ ডিপি কালো করা হয়েছে, ফেসবুক পেজে প্রতিবাদ করা হয়েছ ৷ তাপর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা ভুলেও যাওয়া হয়েছে ৷ এমন কত নির্ভয়ার মতো ঘটনা ঘটে চলেছে৷"
রাইমা আরও লেখেন, "2024 সালে তাঁরা ডাক্তারি পড়ুয়াকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করল ৷ তারপর মেরে ফেলল ৷ এবার সময় এসেছে মোমবাতি নয়, যারা দোষী তাদের জ্বালানোর ৷ এটা হাই টাইম, যেখানে সরকারের উচিত ধর্ষকদের জন্য কড়া আইন প্রণয়ন করা ৷ যদি রাতারাতি টাকা বাতিল হতে পারে, রাজনীতিকদের বেতন বাড়ানোর জন্য স্পেশাল সেশন হতে পারে, ট্রাস্ট ভোটের জন্য পার্লামেন্ট রাতে খুলতে পারে তাহলে ধর্ষকদের জন্য একটা আইন আনতে এত দেরি হচ্ছে কেন?"
ঋতাভরী চক্রবর্তী সোশাল মিডিয়ায় আরও এক ভয়ঙ্কর তথ্য তুলে ধরেছেন ৷ তিনি ইন্সটাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন গুগল ট্রেন্ডের কথা ৷ কি বলছে সেই ট্রেন্ড? ঋতাভরীর পোস্ট অনুযায়ী, গুগল অ্যানালাইসিস থেকে নাকি জানা গিয়েছে, 160 থেকে 190 শতাংশ মানুষ, এই সার্চ ইঞ্জিনে আরজি কর কাণ্ডে মৃত চিকিৎসকের নাম খুঁজেছে ৷ এমনকী, নির্যাতিতার নাম নাকি 3 হাজার বার খোঁজা হয়েছে পর্ণ সাইটে ৷ এক সংবাদ পোর্টালের রিসার্চ অনুযাযী এই তথ্য সামনে আনেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ও ৷ যদিও এই সার্চ হওয়া তথ্য যাচাই করে দেখেনি ইটিভি ভারত ৷
শুধু তাই নয়, 'ইন্দুবালা ভাতের হোটেল' অভিনেত্রী পুরাণে ধর্ষকদের কেমন শাস্তি দেওয়া হত, সেই নিদানও সামনে আনেন৷ নিজের ইন্সটা স্টোরিতে তিনি শেয়ার করেন গরুড়পুরাণে ধর্ষকদের কীভাবে শাস্তি দেওয়া হত ৷ তিনি একটি ছবি শেয়ার করেছেন ৷ সেখানে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে জেলের ভিতর বন্দি করে রাখা হয়েছে ৷ পরনে তার একটিও সুতো নেই ৷ তার নিম্নাঙ্গে পাথর ও লোহার খাঁচা চাপা দেওয়া ৷
ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা, "আপনাদের মধ্যে কতজন মনে করছেন ধর্ষকদের এমন শাস্তি হওয়া উচিত ৷ এই শাস্তি গরুড়পুরাণ অনুযায়ী ৷ একমাত্র যদি এইভাবে ধর্ষকদের শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে পাশবিক এই কীর্তি করার আগে তারা ভয় পাবে ৷" উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৷ ধর্ষকদের জন্য কড়া আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন ৷ এখন আইন প্রণয়ন সত্যিই হয় কি না, নির্ভয়া-তিলোত্তমা বিচার পায় কি না, সেই দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ ৷