ETV Bharat / entertainment

শুটিং বন্ধে প্যানিক অ্যাটাক, হাসপাতালে পরিচালক; অভিযোগ-পালটা অভিযোগে সরগরম টলিউড - টলিউড

Paramita Munsi: রাইটার্স গিল্ড-ও জানত না পারমিতা মুন্সীর পরিচালনা করার কথা! বৈঠকে 'হেমা মালিনী'র পরিচালকের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তের কথা জানালেন ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ৷

অভিযোগ ও পালটা অভিযোগে সরগরম টলিউড
Paramita Munsi
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 28, 2024, 12:18 PM IST

কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি: অসুস্থ 'হেমা মালিনী'-ছবির পরিচালক পারমিতা মুন্সী। খবরটি নিজেই সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার পরিচালক নিজেই তাঁর সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লিখেছেন, "যে গিল্ডের কোপে আটকে গিয়েছে তাঁর 'হেমা মালিনী' ছবির শেষ দু'দিনের শুটিং। তাঁর অভিযোগ, সরাসরি ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের দিকে।

পারমিতা মুন্সীর লেখা থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর পরিচালনায় 'হেমা মালিনী' সিনেমার শেষ দু'দিনের শুটিং বন্ধ করা হয়েছে। 24 ফেব্রুয়ারি শুটিংয়ের সমস্ত আয়োজন হয়ে যাওয়ার পরেও, ম্যানেজার গিল্ড থেকে তাঁর ফিল্মের প্রোডাকশন ম্যানেজারকে পরেরদিন শুটিংয়ের কলটাইম দিতে বারণ করা হয়েছে। তার কারণ 23 ফেব্রুয়ারি একটা চান্স ফ্যাক্টরকে কাজে লাগিয়ে, সাউথ সিটি আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তিনটে ফোন কাট শুট করেন তিনি। ওখানে উপস্থিত সব টেকনিশিয়ানই গিল্ড মেম্বার ছিল। প্রোডাকশন ম্যানেজার সব জানা সত্ত্বেও, পারমিতার শুটিং স্পটে লোকজন এসে ঝামেলা করেন।

পরদিন শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা যায় 'ঊর্ধ্বতন অধিনায়ক' অর্থাৎ ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপের নির্দেশ ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। তাঁকে 23 তারিখ রাতে ক্রমাগত ফোন, টেক্সট, ইমেল করে, রফাসূত্রে আসার হাজার অনুরোধের পরেও কোনও সাড়া পাননি পারমিতা। শুটিং বন্ধের টেনশনেই তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে বলে দাবি পারমিতার। এই কারণে হাসপাতালেও ভরতি হতে হয়েছে তাঁকে। ইটিভি ভারত যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, "আমি খুব অসুস্থ। একটাই দাবি কাজটা শেষ করতে চাই।"

  • মঙ্গলবার রাতে এই ব্যাপারে দীর্ঘ বৈঠক হয় ফেডারেশনে। স্বরূপ বিশ্বাসের কাছে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "পারমিতা রাইটার্স গিল্ডের সদস্য। অথচ রাইটার্স গিল্ডের কেউ জানতেনই না যে পারমিতা ছবি বানাচ্ছেন। গোটা কাজটা খুব গোপনে সারতে চেয়েছিলেন। যাকে আমরা 'গুপি কাজ' বলি।"
  • তিনি আরও বলেন, "এটা আমাদের এক মাস আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল যদি কেউ গোপনে শুটিং করে তাহলে তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। দেখা গেল পারমিতা প্রত্যেকটি জায়গাতেই ভুল করেছেন এবং কাউকে কোনওরকম ইনফর্ম করেননি। ম্যানেজারকেও বলেছেন তিনি বুঝে নেবেন, দেখে নেবেন ইত্যাদি। আমাদের সিদ্ধান্ত, তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে এরপর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনি নিজে নিজে যদি শুটিং করেন সেটা আলাদা ব্যাপার। তবে ফেডারেশনের কোনও সদস্য কাজ করবে না ওনার সঙ্গে।"
  • পারমিতার পাঠানো মেইল প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা পারমিতার মেইল দেখেছি। সেখানে তিনি লিখেছেন যে, ব়্যাপ-আপ পার্টি ছিল সাউথ সিটিতে। কিন্তু না। ওটা শুটিং ছিল। তখনও শুটিংয়ের তিন চারদিন বাকি। ব়্যাপ আপ পার্টি হয় কী করে? এই বিষয়টা আমাদের আশ্চর্য লেগেছে। মাত্র চার-পাঁচ জন ছাড়া কোনও টেকনিশিয়ান ছিল না। সাউথ সিটি কর্তৃপক্ষ শুটিংয়ের অনুমতি দেয় না। লুকিয়ে ক্যামেরা, লাইট ঢুকিয়ে চার-পাঁচ জন টেকনিশিয়ানকে নিয়ে গোপনে শুটিং করেন পারমিতা। এমনকী জুতোও বাড়ির ভিতরে রেখেছিলেন সবাই।
  • তাঁর সংযোজন, "ম্যানেজার বলেছেন, আপনি ছোট ইউনিট নিয়ে কাজটা করতে চান এটা নিয়ে ফেডারেশনকে একটা মেইল করুন। স্বরূপ দা অনুমতি দিয়ে দেন জানানো হলে, পারমিতা ম্যানেজারকে উলটে বলেন, যে আগেও আমি ঢাকা কালীবাড়ির সামনেও শুটিং করেছি টেকনিশিয়ান ছাড়া। কেউ জানতে পেরেছে?"
  • স্বরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকেই জানা যায়, ইমপা থেকে জানা গিয়েছে, পারমিতার মায়ের নামে ইমপা'য় রেজিস্টার করা হয়েছে এই ছবির। পারমিতা আট মাস আগে ভেবেছিলেন এটা শর্ট ফিল্ম বানাবেন। পরে ওনার মনে হয় এটাকে ফিচার ফিল্ম বানাবেন। তাই ইমপা'য় গিয়ে রেজিস্টার করান। যিনি হেমা মালিনীর চরিত্রে অভিনয় করছেন সেই পাপিয়া রায় তিনি ইনভেস্টর মাত্র। প্রযোজক পারমিতাই।"
  • তিনি আরও বলেন, "আর্ট ডিরেক্টর গিল্ডের প্রেসিডেন্ট সুদীপ ভট্টাচার্য ওনার স্বামী। পারমিতা তাঁকেও জানাননি কিছু, এমনটাই খবর। উনি রাইটার্স গিল্ডকেও জানাননি যে ছবি বানাচ্ছেন। আগে সেখানে চিঠি দিতে হয়। এরপর রাইটার্স গিল্ড সেটা ফেডারেশনকে জানায় যে, তাদের এক সদস্য ছবি বানাবেন। এরপর অনুমতি ফেডারেশন দেয়। এই সব কোনও নিয়মই মানেননি পরিচালক পারমিতা মুন্সী। রাইটার্স গিল্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন না এই ব্যাপারে কিছু। ডিরেক্টর গিল্ডের প্রেসিডেন্ট সুদেষ্ণা দিও হাজির ছিলেন বৈঠকে। পারমিতা যে প্রযোজক এই ছবির সেটাই উনি লুকিয়ে রেখেছেন। এখন জালে ধরা পড়ে গিয়ে বলছেন আমি কিছু জানি না৷"

বৈঠকে মঙ্গলবার 28টি গিল্ড উপস্থিত ছিল। সকলেই লিখিতভাবে বলেছেন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক এই ব্যাপারে। এই কাজ যেন আর কেউ না করতে পারে। এমনটাই ইটিভি ভার‍তকে জানিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।

আরও পড়ুন:

  1. অনুরাগের ঘটিয়া মন্তব্য নিছক মজা, এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত বাংলা ছবির: গৌতম ঘোষ
  2. এই পুজোয় ফের শিবু-নন্দিতা ধামাকা, আসছে 'বহুরূপী'

কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি: অসুস্থ 'হেমা মালিনী'-ছবির পরিচালক পারমিতা মুন্সী। খবরটি নিজেই সোশাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার পরিচালক নিজেই তাঁর সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে লিখেছেন, "যে গিল্ডের কোপে আটকে গিয়েছে তাঁর 'হেমা মালিনী' ছবির শেষ দু'দিনের শুটিং। তাঁর অভিযোগ, সরাসরি ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের দিকে।

পারমিতা মুন্সীর লেখা থেকে জানা গিয়েছে, তাঁর পরিচালনায় 'হেমা মালিনী' সিনেমার শেষ দু'দিনের শুটিং বন্ধ করা হয়েছে। 24 ফেব্রুয়ারি শুটিংয়ের সমস্ত আয়োজন হয়ে যাওয়ার পরেও, ম্যানেজার গিল্ড থেকে তাঁর ফিল্মের প্রোডাকশন ম্যানেজারকে পরেরদিন শুটিংয়ের কলটাইম দিতে বারণ করা হয়েছে। তার কারণ 23 ফেব্রুয়ারি একটা চান্স ফ্যাক্টরকে কাজে লাগিয়ে, সাউথ সিটি আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তিনটে ফোন কাট শুট করেন তিনি। ওখানে উপস্থিত সব টেকনিশিয়ানই গিল্ড মেম্বার ছিল। প্রোডাকশন ম্যানেজার সব জানা সত্ত্বেও, পারমিতার শুটিং স্পটে লোকজন এসে ঝামেলা করেন।

পরদিন শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা যায় 'ঊর্ধ্বতন অধিনায়ক' অর্থাৎ ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপের নির্দেশ ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। তাঁকে 23 তারিখ রাতে ক্রমাগত ফোন, টেক্সট, ইমেল করে, রফাসূত্রে আসার হাজার অনুরোধের পরেও কোনও সাড়া পাননি পারমিতা। শুটিং বন্ধের টেনশনেই তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে বলে দাবি পারমিতার। এই কারণে হাসপাতালেও ভরতি হতে হয়েছে তাঁকে। ইটিভি ভারত যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, "আমি খুব অসুস্থ। একটাই দাবি কাজটা শেষ করতে চাই।"

  • মঙ্গলবার রাতে এই ব্যাপারে দীর্ঘ বৈঠক হয় ফেডারেশনে। স্বরূপ বিশ্বাসের কাছে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "পারমিতা রাইটার্স গিল্ডের সদস্য। অথচ রাইটার্স গিল্ডের কেউ জানতেনই না যে পারমিতা ছবি বানাচ্ছেন। গোটা কাজটা খুব গোপনে সারতে চেয়েছিলেন। যাকে আমরা 'গুপি কাজ' বলি।"
  • তিনি আরও বলেন, "এটা আমাদের এক মাস আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল যদি কেউ গোপনে শুটিং করে তাহলে তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। দেখা গেল পারমিতা প্রত্যেকটি জায়গাতেই ভুল করেছেন এবং কাউকে কোনওরকম ইনফর্ম করেননি। ম্যানেজারকেও বলেছেন তিনি বুঝে নেবেন, দেখে নেবেন ইত্যাদি। আমাদের সিদ্ধান্ত, তাঁকে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে এরপর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উনি নিজে নিজে যদি শুটিং করেন সেটা আলাদা ব্যাপার। তবে ফেডারেশনের কোনও সদস্য কাজ করবে না ওনার সঙ্গে।"
  • পারমিতার পাঠানো মেইল প্রসঙ্গে বলেন, "আমরা পারমিতার মেইল দেখেছি। সেখানে তিনি লিখেছেন যে, ব়্যাপ-আপ পার্টি ছিল সাউথ সিটিতে। কিন্তু না। ওটা শুটিং ছিল। তখনও শুটিংয়ের তিন চারদিন বাকি। ব়্যাপ আপ পার্টি হয় কী করে? এই বিষয়টা আমাদের আশ্চর্য লেগেছে। মাত্র চার-পাঁচ জন ছাড়া কোনও টেকনিশিয়ান ছিল না। সাউথ সিটি কর্তৃপক্ষ শুটিংয়ের অনুমতি দেয় না। লুকিয়ে ক্যামেরা, লাইট ঢুকিয়ে চার-পাঁচ জন টেকনিশিয়ানকে নিয়ে গোপনে শুটিং করেন পারমিতা। এমনকী জুতোও বাড়ির ভিতরে রেখেছিলেন সবাই।
  • তাঁর সংযোজন, "ম্যানেজার বলেছেন, আপনি ছোট ইউনিট নিয়ে কাজটা করতে চান এটা নিয়ে ফেডারেশনকে একটা মেইল করুন। স্বরূপ দা অনুমতি দিয়ে দেন জানানো হলে, পারমিতা ম্যানেজারকে উলটে বলেন, যে আগেও আমি ঢাকা কালীবাড়ির সামনেও শুটিং করেছি টেকনিশিয়ান ছাড়া। কেউ জানতে পেরেছে?"
  • স্বরূপ বিশ্বাসের কাছ থেকেই জানা যায়, ইমপা থেকে জানা গিয়েছে, পারমিতার মায়ের নামে ইমপা'য় রেজিস্টার করা হয়েছে এই ছবির। পারমিতা আট মাস আগে ভেবেছিলেন এটা শর্ট ফিল্ম বানাবেন। পরে ওনার মনে হয় এটাকে ফিচার ফিল্ম বানাবেন। তাই ইমপা'য় গিয়ে রেজিস্টার করান। যিনি হেমা মালিনীর চরিত্রে অভিনয় করছেন সেই পাপিয়া রায় তিনি ইনভেস্টর মাত্র। প্রযোজক পারমিতাই।"
  • তিনি আরও বলেন, "আর্ট ডিরেক্টর গিল্ডের প্রেসিডেন্ট সুদীপ ভট্টাচার্য ওনার স্বামী। পারমিতা তাঁকেও জানাননি কিছু, এমনটাই খবর। উনি রাইটার্স গিল্ডকেও জানাননি যে ছবি বানাচ্ছেন। আগে সেখানে চিঠি দিতে হয়। এরপর রাইটার্স গিল্ড সেটা ফেডারেশনকে জানায় যে, তাদের এক সদস্য ছবি বানাবেন। এরপর অনুমতি ফেডারেশন দেয়। এই সব কোনও নিয়মই মানেননি পরিচালক পারমিতা মুন্সী। রাইটার্স গিল্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানেন না এই ব্যাপারে কিছু। ডিরেক্টর গিল্ডের প্রেসিডেন্ট সুদেষ্ণা দিও হাজির ছিলেন বৈঠকে। পারমিতা যে প্রযোজক এই ছবির সেটাই উনি লুকিয়ে রেখেছেন। এখন জালে ধরা পড়ে গিয়ে বলছেন আমি কিছু জানি না৷"

বৈঠকে মঙ্গলবার 28টি গিল্ড উপস্থিত ছিল। সকলেই লিখিতভাবে বলেছেন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক এই ব্যাপারে। এই কাজ যেন আর কেউ না করতে পারে। এমনটাই ইটিভি ভার‍তকে জানিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস।

আরও পড়ুন:

  1. অনুরাগের ঘটিয়া মন্তব্য নিছক মজা, এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত বাংলা ছবির: গৌতম ঘোষ
  2. এই পুজোয় ফের শিবু-নন্দিতা ধামাকা, আসছে 'বহুরূপী'
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.