মুজফ্ফরপুর, 25 জানুয়ারি: বিহারের মুজফ্ফরপুর সাক্ষী থাকল এক অত্যন্ত নৃশংস ঘটনার ৷ বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে দেওরকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল বউদি ৷ নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে বউদিকে সঙ্গ দিয়েছে মৃতের এক ভাইপো ৷ বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ৷
মুজফ্ফরপুরের এসপি জানান, সাকরা থানা এলাকার পিলখি গজপতি গ্রামে তারা থাকতেন ৷ মৃত যুবকের নাম সুধীর কুমার (30) ৷ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ওই অভিযুক্ত মহিলা নীতুকে গ্রেফতার করে। তবে এই খুনের ঘটনার আর এক অভিযুক্ত মৃতের ভাইপো এখনও পলাতক ৷ তাকে খুঁজছে পুলিশ ৷
ঘটনার সূত্রপাত, বৃহস্পতিবার রাত 10টা নাগাদ সুধীর ও বউদির মধ্যে ঝগড়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় সিকিউরিটি গার্ড তাঁদেরকে শান্ত করেন ৷ কিন্তু, রাত বাড়লে সুধীর ও বউদির মধ্য়ে আবার ঝামেলা হয়। এরপর ভাইপোকে সঙ্গে নিয়ে সুধীরকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে ওই অভিযুক্ত মহিলা। পরে রেগে গিয়ে দেওরের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে। স্থানীয়রা জানান, রামচন্দ্র দুবের ছোট ছেলে সুধীর কুমারের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো তাঁর বউদির। এর আগেও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তবে, কখনওই এই বিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছয়নি ৷
প্রতিবেশীরা জানান, সুধীর মানসিকভাবে অসুস্থ ৷ সুধীর বিয়ে করেন 2021 সালে। কিন্তু, কয়েক মাস পর তাঁর স্ত্রী ক্যানসারে মারা যান ৷ অভিযোগ, সুধীর স্ত্রীর ঠিকমতো চিকিৎসা করাতেন না, যার জেরেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। পিলখি গজপতি পঞ্চায়েতের প্রধান প্রজ্ঞা কুমারী বলেন, "মৃত সুধীর কুমার মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। পাশাপাশি প্রচুর মদ্যপান করতেন ৷ নেশাগ্রস্থ অবস্থায় জমি-জায়গা বিক্রি করে দিতেন, যার দাম নিয়ে অশান্তি হতো পরিবারের সঙ্গে ৷"
তিনি আরও বলেন, "গতবছর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিজেদের গমের জমিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন সুধীর, যার জেরে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময়ও সুধীরের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনেক ঝগড়া হয়েছিল। এমনকী তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় ৷ এরপর আমিই তাকে প্রায় 4 থেকে 5 দিন আমার বাড়িতে থাকতে বলি ।" বৃহস্পতিবারের ঘটনায় স্থানীয় লোকজন সাকরা থানার পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ অর্ধদগ্ধ দেহটি উদ্ধার করে ৷ তারপর ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।