নয়াদিল্লি, 13 নভেম্বর: 'বুলডোজার বিচার' নিয়ে রায় শোনাল সুপ্রিম কোর্ট ৷ বুধবার শীর্ষ আদালতের রায়, "কোনও ব্যক্তি অভিযুক্ত, এমনকী দোষী প্রমাণিত হলেও তাঁর সম্পত্তি ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই ৷ বুলডোজার বিচার সম্পূর্ণরূপে অসাংবিধানিক ৷"
কোনও ব্যক্তি অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বা দোষী প্রমাণিত হলে, শাস্তিস্বরূপ তাঁর সম্পত্তি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয় ৷ বুধবার সেই মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলেও উপযুক্ত নিয়ম মেনেই এগোতে হবে প্রশাসনকে ৷ বিচারপতি বিআর গাভাই ও কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, "প্রশাসন বিচারক হতে পারে না ৷"
শীর্ষ আদালতের কড়া নির্দেশ, "উপযুক্ত নোটিশ ছাড়া কারও সম্পত্তি ভেঙে ফেলার অধিকার প্রশাসনের নেই ৷ সংশ্লিষ্ট পুরসভা তথা প্রশাসনকে অন্তত 15 দিন আগে নোটিশ দিতে হবে ৷ এই সময়সীমার মধ্য়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি চাইলে পাল্টা মামলা করতে পারেন ৷" সারা ভারতেই এই নির্দেশ লাগু হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই ৷ সেই সঙ্গে তিনি জানান, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হলে সেই ব্যক্তি বা প্রশানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও এদিন জানান শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ৷
এই বিষয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের মনে যে ভয় তৈরি হয়েছে, তা দূর করার প্রসঙ্গে এদিন শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, "সংবিধানের 142 নম্বর ধারার অধীনে আমাদের এই নির্দেশ জারি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আদালত মনে করে ৷"
প্রসঙ্গত, 2019 সালে উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার একটি বাড়ি ভাঙার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মামলার বিষয়ে এর আগেও শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে ৷ গত 10 নভেম্বর মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, বেআইনি দখল বা বেআইনিভাবে নির্মিত কোনও কাঠামো, ভবন অপসারণের জন্য পদক্ষেপ করার আগে রাজ্যকে অবশ্যই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। বুলডোজারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার কোনও সভ্য ব্যবস্থার আইনশাস্ত্রে অজানা ৷ সেই পর্যবেক্ষণের পর বুধবার এই মামলায় রায় শোনাল শীর্ষ আদালত ৷