নয়াদিল্লি, 30 নভেম্বর: নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্ত মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধের আবেদন জানাল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ ৷ ধৃত হিন্দু নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তি চেয়ে শনিবার একটি বিবৃতি জারি করেন আরএসএস-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিক দত্তাত্রেয়া হোসাবেলা ৷
গত 5 অগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সব সংখ্য়ালঘুদের উপরে অত্যাচারের খবর সামনে আসতে থাকে ৷ দিনে দিনে এই ঘটনাগুলি আরও বেড়েছে ৷ পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে ৷ এদিকে এই অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকার হিংসার ঘটনাগুলি নিয়ন্ত্রণে যথাযোগ্য ব্যবস্থা না নিয়ে শুধুমাত্র নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, বিবৃতিতে মহম্মদ ইউনুস সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে আরএসএস ৷
Statement issued by Dattatreya Hosabale Ji, Sarkaryavah, Rashtriya Swayamsevak Sangh: https://t.co/wrxCLjfUIH
— RSS (@RSSorg) November 30, 2024
এই পরিস্থিতিতে অসহায় বাংলাদেশি হিন্দুরা আর কোনও রাস্তা না-পেয়ে নিজেদের সুরক্ষিত করতে গণতান্ত্রিক উপায়ে সরব হয়েছে ৷ সেখানেও তাঁদের নিষ্পেষণের চেষ্টা চলছে ৷ অবিচার এবং দমন-পীড়নের যে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে, তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তীব্র ভর্ৎসনা করেছে আরএসএস ৷
এরপর সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের তরফে তাঁর এখনই মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে ৷ বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত সরকারের কাছেও প্রতিবেশী দেশটিতে হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই হিংসার ঘটনাগুলি বন্ধে সব দিক দিয়ে চেষ্টা চালানোর আর্জি জানিয়েছে সংঘ ৷ এবিষয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে যা যা করা দরকার, তা যেন করে মোদি সরকার, বিবৃতিতে আবেদন আরএসএস-এর ৷ এই সংকটকালে ভারত, আন্তর্জাতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলির উচিত বাংলাদেশের নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো ৷ তাঁদের সমবেদনা জানানো, বিবৃতি দিয়েছে আরএসএস ৷
এদিকে শুক্রবারই সকালে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর সংসদের নিম্নকক্ষে স্পষ্ট করেছেন যে, দেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়-সহ প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারেরই ৷ এদিন বিকেলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে নিরাপদে রাখার দায়িত্ব পালন করা উচিত ৷ চরমপন্থী কাজকর্ম দিনে দিনে বেড়ে চলেছে, হিংসা, উসকানিমূলক ঘটনাও ঊর্ধ্বমুখী ৷ এতে আমরা উদ্বিগ্ন ৷ এগুলিকে শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের বাড়াবাড়ি বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ৷"
বাংলাদেশ এদিন পাল্টা দাবি করে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ভারত দ্বিচারিতা করছে ৷ ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলি ভূরি ভূরি মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে ৷ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের আইনি উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লেখেন, ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে অযথা নাক গলিয়েই চলেছে ৷
গত 25 নভেম্বর ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ৷ তিনি সম্মিলত সনাতনী জাগরণ জোট-এর মুখপাত্র ৷ আগে বাংলাদেশের ইসকন-এর সদস্য ছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ৷ হিন্দু ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ ওঠে ৷ চট্টগ্রামের একটি আদালতে তিনি জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায় ৷ এর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলতে থাকে ৷ এমনকী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস-সহ 17 জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ৷