ETV Bharat / bharat

হিমাচলে 3 দশক ধরে দাবিহীন মৃতদেহের সৎকার করছেন বাংলার শান্তনু ! - Pitru Paksha 2024

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 3 hours ago

Social worker Shantanu Kumar: 3 দশক ধরে প্রায় 5 হাজার দাবিহীন মৃতদেহ সৎকার করেছেন বাংলা থেকে হিমাচল প্রদেশে যাওয়া শান্তনু কুমার ৷ হরিদ্বারে গিয়ে শ্রাদ্ধের কাজও করেন তিনি ৷ এবারও 2 অক্টোবর হরিদ্বারে গিয়ে সেই কাজ করবেন তিনি ৷

Social worker Shantanu Kumar
3 দশক ধরে হিমাচলে দাবিহীন মৃতদেহ সৎকার (নিজস্ব চিত্র)

হামিরপুর (হিমাচল প্রদেশ), 1 অক্টোবর: কথায় আছে যাদের কেউ নেই, তাদের ভগবান আছেন ৷ মৃত্যুর পর সেই ভগবানই তাদের ব্যবস্থা করে দেন ৷ ঠিক তেমনই এক মানুষ হলেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তনু কুমার ৷ মৃত্যুর পর যাদের মরদেহর কোনও পরিচয় পাওয়া যায়না, গত 3 দশক ধরে তাদের মুখাগ্নি, পিণ্ড দান এবং শ্রাদ্ধের কাজ করে আসছেন এই শান্তনু কুমার ৷

1980 সালে বাবার সঙ্গে হিমাচল প্রদেশে চলে আসেন শান্তনু ৷ 1990 সাল থেকে সমাজের কল্যাণে কাজ করা শুরু করেন তিনি ৷ আর সমাজসেবার অংশ হিসাবেই কারও কাছে কোনও আর্থিক সাহায্য ছাড়া মৃতদেহ সৎকারের কাজ করে চলেছেন শান্তনু ৷

Social worker Shantanu Kumar
হরিদ্বারে শ্রাদ্ধের কাজে শান্তনু (নিজস্ব চিত্র)

এখনও পর্যন্ত প্রায় 5 হাজার মানুষের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন শান্তনু ৷ অর্থের অভাবে কখনই এই কাজ বন্ধ হয়নি তাঁর ৷ হামিরপুরে যেখানেই দাবিহীন মৃতদেহ দেখতে পান, কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন শান্তনু ৷ এরপর সেই ছাই সংগ্রহ করে হরিদ্বারে পিণ্ড দান করেন ৷ শুধু তাই নয়, প্রতি বছর পিতৃপক্ষে তাদের শ্রাদ্ধের কাজও সম্পন্ন করেন শান্তনু ৷

এবারও তার অন্যথা হবে না ৷ রীতি মেনে 2 অক্টোবর হরিদ্বারে কয়েক হাজার অপরিচিত মানুষের শ্রাদ্ধ দেবেন শান্তনু কুমার ৷ এই বিষয়ে তিনি জানান, প্রতিবছরের মতো এবছরও হরিদ্বারে প্রতিপক্ষ অমাবস্যায় 2 অক্টোবর সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে শ্রাদ্ধের কাজ করবেন ৷

আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নন শান্তনু ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত মৃতদেহ সৎকারের কাজে তাঁকে কেউ বাধা দিতে পারেনি ৷ হামিরপুর বাজারে একটি ছোট দোকান চালিয়ে সৎকারের সমস্ত খরচ বহন করেন তিনি । শান্তনু বলেন, "এখনও পর্যন্ত প্রায় 4 হাজার 975 টি দাবিহীন মৃতদেহ সৎকার করেছি ৷"

Social worker Shantanu Kumar
হিমাচল সরকারের কাছে পুরস্কার পেয়েছেন শান্তনু (নিজস্ব চিত্র)

কিন্তু কীভাবে এই কাজ শুরু করেন শান্তনু ?

দীর্ঘদিন আগে দুর্ঘটনায় মৃত এক ব্যক্তির সৎকার করছিল পুলিশ ৷ সেই সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন শান্তনু ৷ পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তনি জানতে পারেন মৃতদেহের কোনও পরিচয় পাওয়া যায়নি ৷ সেই ঘটনার পরই দাবিহীন মৃতদেহ সৎকারে তাঁর আগ্রহ জন্মায় বলে জানিয়েছেন শান্তনু ৷

সমাজসেবার জন্য বিয়ে হয়নি

শান্তনু কুমার সমাজসেবার জন্য অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নেন । যখন তিনি জানতে পারেন, একটি দাবিহীন মৃতদেহ কোথাও পড়ে আছে, তখন তিনি সেই মৃতদেহ দাহ করতে ছুটে যান ৷ এরপর হরিদ্বারে ছাই বিসর্জন দিয়ে ফিরে আসেন । শান্তনুর কথায়, "পরিবার ও সমাজসেবা একসঙ্গে চলতে পারে না । এই কারণেই সারা জীবন বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৷ কোনও বাধা ছাড়াই যাতে সমাজসেবার এই কাজটি চালিয়ে যেতে পারি ৷"

হিমাচল সরকারের অনুপ্রেরণার উৎস সম্মানে ভূষিত শান্তনু

সমাজে তাঁর অবদানের জন্য হিমাচল শান্তনুকে অনুপ্রেরণার উৎস সম্মানে ভূষিত করেছে হিমাচল সরকার ৷ এছাড়া, একাধিক সামাজিক সংগঠনের কাছ থেকেও পুরস্কার পেয়েছেন তিনি ৷ পুরস্কার হিসাবে পাওয়া হাজার হাজার টাকাও শান্তনু নিজের কাছে না রেখে দান করে দেন ।

হামিরপুর (হিমাচল প্রদেশ), 1 অক্টোবর: কথায় আছে যাদের কেউ নেই, তাদের ভগবান আছেন ৷ মৃত্যুর পর সেই ভগবানই তাদের ব্যবস্থা করে দেন ৷ ঠিক তেমনই এক মানুষ হলেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তনু কুমার ৷ মৃত্যুর পর যাদের মরদেহর কোনও পরিচয় পাওয়া যায়না, গত 3 দশক ধরে তাদের মুখাগ্নি, পিণ্ড দান এবং শ্রাদ্ধের কাজ করে আসছেন এই শান্তনু কুমার ৷

1980 সালে বাবার সঙ্গে হিমাচল প্রদেশে চলে আসেন শান্তনু ৷ 1990 সাল থেকে সমাজের কল্যাণে কাজ করা শুরু করেন তিনি ৷ আর সমাজসেবার অংশ হিসাবেই কারও কাছে কোনও আর্থিক সাহায্য ছাড়া মৃতদেহ সৎকারের কাজ করে চলেছেন শান্তনু ৷

Social worker Shantanu Kumar
হরিদ্বারে শ্রাদ্ধের কাজে শান্তনু (নিজস্ব চিত্র)

এখনও পর্যন্ত প্রায় 5 হাজার মানুষের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন শান্তনু ৷ অর্থের অভাবে কখনই এই কাজ বন্ধ হয়নি তাঁর ৷ হামিরপুরে যেখানেই দাবিহীন মৃতদেহ দেখতে পান, কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন শান্তনু ৷ এরপর সেই ছাই সংগ্রহ করে হরিদ্বারে পিণ্ড দান করেন ৷ শুধু তাই নয়, প্রতি বছর পিতৃপক্ষে তাদের শ্রাদ্ধের কাজও সম্পন্ন করেন শান্তনু ৷

এবারও তার অন্যথা হবে না ৷ রীতি মেনে 2 অক্টোবর হরিদ্বারে কয়েক হাজার অপরিচিত মানুষের শ্রাদ্ধ দেবেন শান্তনু কুমার ৷ এই বিষয়ে তিনি জানান, প্রতিবছরের মতো এবছরও হরিদ্বারে প্রতিপক্ষ অমাবস্যায় 2 অক্টোবর সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে শ্রাদ্ধের কাজ করবেন ৷

আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছল নন শান্তনু ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত মৃতদেহ সৎকারের কাজে তাঁকে কেউ বাধা দিতে পারেনি ৷ হামিরপুর বাজারে একটি ছোট দোকান চালিয়ে সৎকারের সমস্ত খরচ বহন করেন তিনি । শান্তনু বলেন, "এখনও পর্যন্ত প্রায় 4 হাজার 975 টি দাবিহীন মৃতদেহ সৎকার করেছি ৷"

Social worker Shantanu Kumar
হিমাচল সরকারের কাছে পুরস্কার পেয়েছেন শান্তনু (নিজস্ব চিত্র)

কিন্তু কীভাবে এই কাজ শুরু করেন শান্তনু ?

দীর্ঘদিন আগে দুর্ঘটনায় মৃত এক ব্যক্তির সৎকার করছিল পুলিশ ৷ সেই সময় সেখানেই উপস্থিত ছিলেন শান্তনু ৷ পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তনি জানতে পারেন মৃতদেহের কোনও পরিচয় পাওয়া যায়নি ৷ সেই ঘটনার পরই দাবিহীন মৃতদেহ সৎকারে তাঁর আগ্রহ জন্মায় বলে জানিয়েছেন শান্তনু ৷

সমাজসেবার জন্য বিয়ে হয়নি

শান্তনু কুমার সমাজসেবার জন্য অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নেন । যখন তিনি জানতে পারেন, একটি দাবিহীন মৃতদেহ কোথাও পড়ে আছে, তখন তিনি সেই মৃতদেহ দাহ করতে ছুটে যান ৷ এরপর হরিদ্বারে ছাই বিসর্জন দিয়ে ফিরে আসেন । শান্তনুর কথায়, "পরিবার ও সমাজসেবা একসঙ্গে চলতে পারে না । এই কারণেই সারা জীবন বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ৷ কোনও বাধা ছাড়াই যাতে সমাজসেবার এই কাজটি চালিয়ে যেতে পারি ৷"

হিমাচল সরকারের অনুপ্রেরণার উৎস সম্মানে ভূষিত শান্তনু

সমাজে তাঁর অবদানের জন্য হিমাচল শান্তনুকে অনুপ্রেরণার উৎস সম্মানে ভূষিত করেছে হিমাচল সরকার ৷ এছাড়া, একাধিক সামাজিক সংগঠনের কাছ থেকেও পুরস্কার পেয়েছেন তিনি ৷ পুরস্কার হিসাবে পাওয়া হাজার হাজার টাকাও শান্তনু নিজের কাছে না রেখে দান করে দেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.