ওটাওয়া, 9 নভেম্বর: কানাডায় খালিস্তানপন্থীরা বসবাস করেন ৷ তারা সবাই শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নন ৷ দু'দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যে প্রথম বার এ কথা স্বীকার করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ৷ সম্প্রতি সংসদে দীপাবলীর বক্ততা দিচ্ছিলেন তিনি ৷ সেখানেই এ কথা বলেন তিনি ৷
সংসদে দাঁড়িয়ে ট্রুডো বলেন, "কানাডায় খালিস্তানের বহু সমর্থক রয়েছেন ৷ তাঁরা সবাই শিখ সম্প্রদায়ের নয় ৷ একইভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমর্থকরাও আছেন কানাডায় ৷ তাঁরা সবাই হিন্দু-কানাডিয়ান নন ৷"
খালিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জারের খুনকে কেন্দ্র করে ভারত-কানাডা সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে ৷ 2023 সালের জুন মাসে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সুরিতে একটি গুরুদ্বারার বাইরে খুন হন নিজ্জার ৷ এই মৃত্যুতে ভারত সরকারের হাত রয়েছে বলে বারবার অভিযোগ করেছে কানাডা সরকার ৷ সম্প্রতি সেই সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়। কানাডার এক মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জড়িত ৷
যদিও নিজ্জর খুনের নেপথ্যে ভারতীয় যোগকে বারংবার অস্বীকার করেছে দিল্লি ৷ এ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরে কানাডার ছ'জন কূটনীতিককে বহিষ্কারও করেছে ভারত ৷ অন্যদিকে, দেশে ফিরে এসেছেন কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় বর্মা-সহ বেশ কয়েকজন কূটনীতিক ৷ এঁদের বিরুদ্ধে নিজ্জরের খুনে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ করেছিল কানাডা। শুধু তাই নয়, ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্তও করতে চেয়েছিল ট্রডো প্রশাসন ।
এদিকে, গত সপ্তাহে খালিস্তানি সমর্থকরা ব্রাম্পটনের একটি মন্দিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ৷ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল ভারতীয় কনসুলেট এবং হিন্দু সভা ৷ এই হিংসার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ৷ তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, "কানাডার প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদে তাঁদের ধর্মাচরণ করার অধিকার রয়েছে ৷" এই ঘটনায় ভারতের বিদেশমন্ত্রকও উদ্বেগ প্রকাশ করে ৷
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার, 7 নভেম্বর বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাংবাদিক বৈঠকে জানান, গত এক বছর ধরে কানাডায় থাকা ভারতীয় কূটনীতিকদের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে, যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় ৷ তিনি বলেন, "গত বছর থেকে ভারতীয় কূটনীতিকদের হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো, হেনস্তা করার মতো ঘটনাগুলি ঘটে চলেছে এবং তা দিনে দিনে বাড়ছে ৷"