নয়াদিল্লি, 29 মে: জাতির জনক মহাত্মা গান্ধিকে অবহেলা করা হয়েছে ৷ তাঁকে চিনিয়েছেন ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক রিচার্ড অ্যাটেনবরো ৷ 1982 সালে ব্রিটিশ চিত্রপরিচালকের পরিচালনায় মুক্তি পায় 'গান্ধি' সিনেমাটি ৷ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে বিট্রিশ শাসনাধীন ভারতে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন মহাত্মা গান্ধি, সেই ইতিহাসই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমাটিতে ৷ এই সিনেমাটি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পায় ৷
এই সিনেমাটির আগে স্বাধীন ভারতে কেউ জাতির জনককে জানত না বলেই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার জাতির জনক সম্পর্কে প্রচারে তেমন একটা গুরুত্বই দেয়নি ৷ একটি সাক্ষাৎকারে পরোক্ষে এই অভিযোগ তুলে কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷
তিনি বলেন, "মহাত্মা গান্ধি একজন বিরাট মাপের মানুষ ছিলেন ৷ বিশ্ব তাঁকে চিনুক, জানুক ৷ গত 75 বছরে সেই ভাবে প্রচার করাটা কি আমাদের দায়িত্ব ছিল না ? কেউ জানত না ৷ প্রথমবার যখন গান্ধি সিনেমাটি তৈরি হয়, তখন তাঁকে নিয়ে বিশ্বে কৌতূহল তৈরি হয়, তিনি কে ? আমাদের যতটা করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি ৷ দুনিয়া যদি মার্টিন লুথার কিং, নেলসন ম্যান্ডেলাকে চিনতে পারে, তাহলে গান্ধি তো তাঁদের থেকে কোনও অংশে কম নন ? এটা আপনাকে মানতেই হবে ৷ আমি বিশ্বে ঘুরে বেড়িয়েছি ৷ তারপর এই কথাটা বলছি ৷ ভারতের তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ছিল ৷" এই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ভারতের বহু সমস্যার সমাধান ছিল গান্ধিজির কাছে ৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে ৷ তিনি ওই প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, "নরেন্দ্র মোদি একথাই বলেছেন ৷ দুর্ভাগ্য যে, এমন একজন মানুষ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ৷"
উল্লেখ্য, মহাত্মা গান্ধিকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়িনি ৷ তবে 1937 সাল থেকে 1948 সাল পর্যন্ত পাঁচ বার তাঁর নাম পাঠানো হলেও নোবেল পুরস্কার অধরাই থেকে গিয়েছে ৷ 1869 সালে গুজরাতের পোরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি ৷ আইন নিয়ে পড়াশোনা করে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যান ৷ সেখান থেকেই তাঁর সত্যাগ্রহের মাধ্য়মে আন্দোলনের সূচনা ৷ পরে 1915 সালের 9 জানুয়ারি তিনি ভারতে ফিরে আসেন ৷ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করেন ৷ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর 1948 সালের 30 জানুয়ারি নাথুরাম গডসে মহাত্মা গান্ধিকে গুলি করে হত্যা করেন ৷