পটনা, 10 জুলাই: দেশের প্রথম ট্রান্সওম্যান সাব-ইন্সপেক্টের হিসেবে পদে আসীন হলেন মানবী মধু কাশ্যপ ৷ বুধবার বিহার পুলিশের সাব-অর্ডিনেট সার্ভিস কমিশনের তরফে 1275টি সাব-ইন্সপেক্টরের শূন্যপদে নিয়োগের ঘোষণা করা হয় ৷ সেই পদে যোগ্যপ্রার্থী হিসাবে পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তিন রূপান্তরকামী ৷ দুই ট্রান্সওম্যান সঙ্গে রয়েছেন একজন ট্রান্সওম্যান , যিনি বিহারের ভাগলপুরের ছোট একটি গ্রামের বাসিন্দা মানবী মধু কাশ্যপ ৷
ইটিভি ভারতের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সাব-ইন্সপেক্টর পদে আসীন হওয়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত মানবী ৷ তিনি জানান, যে ওড়না তিনি নিজের পরিচিতি লোকাতে ব্যবহার করতেন এবার তা গর্বের সঙ্গে নিতে পারবেন ৷ আগে, তাঁর মা গোপনে দেখা করতে আসতেন ৷ এখন তিনি পুলিশের পোশাক করে গ্রামে যাবেন ৷ সকলকে জানাবেন, রূপান্তরকামী লজ্জার বিষয় নয় ৷
মানবী জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে তিনি বুঝতে পারেন, আর পাঁচটা ছেলের মতো তিনি নন ৷ ধীরে ধীরে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি ৷ তাঁর দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে পরিবারে ৷ বিগত ন'বছর ধরে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেননি ৷ এবার তিনি সাব-ইন্সপেক্টরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৷ ট্রেনিং শেষ হলেই তিনি পুলিশের উর্দিতে গ্রামের বাড়ি যেতে চান এবং মাকে স্যালুট জানাতে চান বলে জানান মানবী ৷
তিনি আরও জানান, পরীক্ষার জন্য তিনি দেড়বছর ধরে রোজ 8 ঘণ্টা করে পড়াশোনা করতেন ৷ সকালে গান্ধি ময়দানে দেড় ঘণ্টা এক্সারসাইজ করতেন ৷ ফলে পুলিশের পরীক্ষায় ফিজিক্যাল টেস্টের সময় যে দৌড় হয়, সেখানে তিনি সময় নিয়েছিলেন মাত্র 4 মিনিট 24 সেকেন্ড ৷ মানবীর এই কৃতিত্বকে বাহবা জানিয়েছেন অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরাও ৷
জানা যায়, 2022 সালে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলেও শারীরিক পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি মানবী ৷ শরীর এতটাই খারাপ হয়েছিল যে তাঁর অস্ত্রোপচার হয় ৷ 6 মাস বিশ্রামে থাকতে হয় ৷ তখনই তিনি এক গুরুকুলে শিক্ষাবিদ গুরু রেহমানের সংস্পর্শে আসেন ৷ তিনিই নাকি তাঁকে সাব-ইন্সপেক্টর পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সাহায্য করেন ৷ কোনওরকম পারিশ্রমিক ছাড়াই মানবীকে গুরু রেহমান সাহায্য করেন বলে জানা গিয়েছে ৷