মুজফফরপুর (বিহার), 9 সেপ্টেম্বর: কোটি কোটি টাকার হাসপাতাল আজ ভগ্নপ্রায় ৷ কিন্তু এই বিষয়ে কোনও তথ্যই নেই স্বাস্থ্য দফতর বা এসডিএমের কাছে ৷ দুর্ভাগ্যজনক যে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বড় হাসপাতালটি আজ পর্যন্ত একজন রোগীরও চিকিৎসা করতে পারেনি । কারণ, এটি নির্মাণের পরপরই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় । এই ছবি দেখা গিয়েছে বিহারের মুজফফরপুরের পারু ব্লকের সরাইয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ৷
এই বিষয়ে পশ্চিম মুজফফরপুরের আইএএস কাম সাব-ডিভিশনাল অফিসার শ্রেয়া শ্রী বলেন, "শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই হাসপাতাল সম্পর্কে আমার কাছে কোনও তথ্য নেই । বর্তমানে জেলা অফিসার কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । সিভিল সার্জেন এবং সংশ্লিষ্ট পিএইচসি অফিসার এবং জোনাল অফিসার তাদের নিজ নিজ স্তরে তদন্ত করছেন । তদন্ত রিপোর্ট আসার সঙ্গে সঙ্গে তা জানানো হবে ।"
হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা দেখলে জানতে ইচ্ছে হবে কোন ইঞ্জিনিয়ার এই পরিকল্পনা করেছিলেন ? কী পরিস্থিতিতে এই হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে, তা এখনও জানা নেই প্রশাসনের ৷ কখন এটি সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল ? তা জানা নেই ৷ জানা নেই হাসপাতাল তৈরির টাকা কোন সরকারি খাদ থেকে এসেছিল । শুধুমাত্র গ্রামবাসীদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায় যে, এই ভবনটি একটি সরকারি হাসপাতাল ছিল ৷ যা 15 বছর আগে নির্মিত হয় ।
পুরো হাসপাতাল একসময় আসবাবপত্র, জানালা, দরজা, টাইলস এবং সরঞ্জাম দিয়ে ঝলমল করে উঠত । কিন্তু এখন জানালা বা দরজার ফ্রেমই নিরাপদ নয় । সব চোরেদের দল খুলে নিয়ে চলে গিয়েছে । এমনকি হাসপাতালের মেঝের টাইলসও খুঁড়ে বের করা হয়েছে । হাসপাতালের বাইরের চারপাশে ঝোপঝাড়ে ভর্তি ৷
অবস্থা এমন যে হাসপাতাল চত্বর এখন জুয়াড়ি, মদখোর, মদ চোরাকারবারি ও মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে । স্থানীয় লোকজন তাদের গবাদি পশু চরাতে এসে এখানে বিশ্রাম নেয় । হাসপাতালটি বিহার সরকারের 6 একর জমির উপর নির্মিত । চারিদিকে লম্বা ঘাস গজিয়েছে । এমনকী হাসপাতালে পৌঁছনোর রাস্তার অবস্থাও খারাপ। এত জঙ্গল হয়ে গিয়েছে চারিদিক ৷
15 বছর আগে, এই 30 শয্যার হাসপাতালটি বিহার সরকারের 6 একর জমিতে গ্রামীণ এলাকার মানুষের উন্নত চিকিৎসার জন্য তৈরি হয়েছিল । সেখানে ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের আবাসনও রয়েছে । হাসপাতাল চত্বরে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রও তৈরি করা হয়েছিল ।
কিন্তু ভবন নির্মাণের পরও এই সরকারি হাসপাতালটি স্বাস্থ্য বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে । সেই কারণে 15 বছরেও এখানে কোনও রোগীর চিকিৎসা করা যায়নি । আজও এ এলাকার মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে যেতে বাধ্য হচ্ছে । এলাকার মানুষ প্রশ্ন করছেন, যখন হাসপাতালটি চালু করার কথাই ছিল না তখন কেন নির্মাণ করা হল ? যার উত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও ৷