বক্সার ও কলকাতা 22 অক্টোবর: বন বিভাগ এবং বিহারের বক্সার পুলিশের একটি বড় অভিযানে বিহার থেকে গ্রেফতার পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতা ৷ হাতির দাঁত পাচার করার সময় পাঁচজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ ৷ তার মধ্যেই রয়েছেন বাংলার শাসক শিবিরের নেতা অশোক কুমার ওঝা ৷
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে 40 কেজি ওজনের দুটি হাতির দাঁত ৷ যার বর্তমান বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা ৷ এই বিষয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বলেন, এই ব্যক্তির সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। ইতিমধ্যেই তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত।
পাশাপাশি জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্তার সঙ্গেও যোগাযোগ চেষ্টা করেছিল ইটিভি ভারত। তিনি বলেন, আমার কাছে যতদূর খবর আছে, ওর বাড়িতে আগে থেকেই হাতি ছিল। কিন্তু করোনার সময় সেই হাতি মারা যায়। তখন লোভের বসবর্তী হয়ে হয়তো সেই হাতির দাঁত আলাদা করে রেখে দেয়। সেটাই পরবর্তী সময় বিক্রির চেষ্টা করলে ধরা পড়েছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। গোটা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই দলনেত্রী কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন । দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি সুদীপদার (উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে ফোন করেছিলেন এবং বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো দলের তরফ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওয়ার্ডসহ অন্যান্য সর্বত্র এই খবর জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতারা যাই বলুন বিজেপি নেতা তথা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর সজল ঘোষের দাবি অশোক ওঝা কলকাতা পুরসভার 42 নম্বর ওর্য়াডে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। পাশপাাশি অশোক ওঝাকে তৃণমূলের বীরাপ্পান বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
পাচারকারীদের নাম জানিয়েছে পুলিশ । অশোক ছাড়া বেগুসরাইয়ের 61 বছরের গণপত শাহ, পিপরা জগদীশপুরের মনোজ কুমার পান্ডে, কারাকাটের বাসিন্দা পারস নাথ রাম, তিরাশি বিঘার রোহতাস এবং ধনঞ্জয় প্রসাদ সিং রোহতাসও গ্রেফতার হয়েছেন ।
বক্সার সিভিল আদালতে হাজির করার পরে জেলে পাঠানো হয়েছে ধৃতদের ৷ বক্সার জেলার ব্রহ্মপুর থানার অন্তর্গত দেবকুলি গ্রাম থেকে ধৃতদের গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ জানা গিয়েছে, ভোজপুর ও বক্সার বন বিভাগের যৌথ অভিযানে ধরা পড়ে চোরাচালানকারীরা ৷ দিল্লি থেকে গোয়েন্দা বিভাগের দল থেকে পাচারের বিষয়ে তথ্য পায় পুলিশ ৷
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয় ৷ যেখানে দেবকুলি গ্রামের বাসিন্দা তথা বাংলার তৃণমূল নেতা অশোক কুমার ওঝার কাছে হাতির দুটি দাঁত পাওয়া গিয়েছে । মনে করা হচ্ছে বাজেয়াপ্ত হওয়া দাঁতগুলি করোনার সময় মৃত হাতির ৷ হাতির দাঁতগুলি বিক্রি করার আগেই তাদের গ্রেফতার করা হয় ৷
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, করোনার সময় দেবকুলি গ্রামে একটি হাতি মারা গিয়েছিল ৷ তারপরে তার দুটি দাঁতই বেআইনিভাবে বিক্রি করার পরিকল্পনা করা হয় । দেবকুলি গ্রামের বাসিন্দা অশোক কুমার ওঝার কাছে এই দাঁতগুলি ছিল ৷ তিনিই সেগুলি বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । এই ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল পাচারকারী চক্র ৷ পুলিশ তাদের ধরতে পেরেছে ৷ তদন্ত শেষ হলেই বিষয়টি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বনরক্ষী রাম কুমার ৷ এই ঘটনার পর বক্সার ও ভোজপুর জেলার বাকি চোরাকারবারিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ।