মিরাট, 26 জানুয়ারি: আজ দেশজুড়ে 75তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হচ্ছে ৷ দেশের প্রতিটি কোনায় তেরঙা পতাকা উড়ছে ৷ স্বাধীন ভারতের প্রথম পতাকা তৈরি হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের মিরাটে ৷ সেই সুযোগ পেয়েছিলেন নত্থে সিং ৷ স্থানীয় শ্রী খাদি গান্ধি আশ্রম তাঁকে তেরঙা তৈরির অর্ডার দিয়েছিল ৷ নত্থে সিংয়ের তৈরি তেরঙা লালকেল্লায় উত্তোলন করা হয়েছিল ৷ এরপর সারা জীবন ধরে শুধু তেরঙা পতাকাই তৈরি করে গিয়েছেন নত্থে সিং ৷ তাঁর তৈরি খাদির পতাকা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে ৷
তাঁর পর এই তেরঙা তৈরির ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন তাঁর ছেলে ৷ আজও নত্থে সিংয়ের ছেলে তেরঙা পতাকা তৈরি করেই দিন গুজরান করেন ৷ নত্থে সিংয়ের ছেলে রমেশ জানালেন, 4 বছর আগে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে ৷ তেরঙা তৈরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংসদ ভবনে একটি বৈঠক হয় ৷ এরপর দিল্লি থেকে একটি প্রতিনিধি দল মিরাটের গান্ধি আশ্রমে আসে ৷ তাঁরা আমার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে তেরঙা তৈরির অর্ডার দেয় ৷"
রমেশ আরও জানালেন, তাঁর বাবা এবং তাঁর জেঠুরাও গান্ধি আশ্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৷ তখন স্বাধীন ভারতের প্রথম পতাকা তৈরির দায়িত্ব নত্থে সিংকে দেওয়া হয় ৷ সেই সময় তাঁদের আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভালো ছিল না ৷ তাই লণ্ঠন থাকলেও তাতে তেল থাকত না ৷ তারপর প্রতিবেশীরা তাঁদের তেল দিলে সেই তেল ভরে লণ্ঠনের আলোয় তেরঙা সেলাই করতেন নত্থে সিং ৷
তারপর থেকে মিরাটে খাদির তেরঙা তৈরি হয়ে আসছে ৷ রমেশ জানান, বাবার পর তিনি এই তেরঙা তৈরির কাজ করে চলেছেন ৷ তবে তাঁর আক্ষেপ, এতে যা আয় হয়, তাতে তাঁর কোনওরকমে সংসার চলে ৷ সরকার থেকে কোনও সাহায্য় পাননি তিনি ৷ এমন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে আবেদন জানালেও তিনি সেই প্রকল্পের সুবিধে পাননি ৷
নত্থে সিংয়ের ছেলে রমেশ সারাদিন ধরে এই কাজই করে চলেছেন ৷ কিন্তু তাঁর আর্থিক পরিস্থিতি খুবই খারাপ ৷ দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার ৷ শুধু তাই নয়, রমেশের হৃদপিণ্ডের সমস্যাও রয়েছে ৷ তাঁর স্ত্রীও অসুস্থ ৷ তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে তাঁর আবেদন, সরকার তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক ৷
আরও পড়ুন: