পটনা, 6 জানুয়ারি: সোমবারের পটনায় ঘটনার ঘনঘটা। ভোরে গান্ধি ময়দান থেকে পুলিশ পিকে-কে আটক করে। দীর্ঘক্ষণ পুলিশের গাড়িতে ঘোরার পর পেশ করা হয় পটনা সিভিল কোর্টে। শর্ত আরোপ করে জামিন দেন বিচারকর। অপরাধী নন, অপরাধ করেননি, শর্ত মেনে জামিন নেবেন না বলে জানান প্রশান্ত কিশোর। পরে আবারও শুনানি হয়। তাতে শর্ত আরোপ করা থেকে সরে আসেন বিচারপতি। জামিনে মুক্ত হন জন সূরজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা।
চাকরির পরীক্ষায় অনিয়ম হয়েছে দাবি করে গত কয়েকদিন ধরে অনশন করছেন পিকে। এরপর সোমবার ভোরে তাঁকে পটনার গান্ধি ময়দান থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ । জন সূরজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে দিনভর কার্যত নাটক মঞ্চস্থ হয়। পরে পটনার আদালত তাঁকে 25 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিতে রাজি হয়। কিন্তু জামিনের জন্য কয়েকটি শর্ত মানতে হত তাঁকে। কোনও শর্ত মানতে রাজি হননি তিনি। তাঁর স্পষ্ট দাবি, জামিনের সঙ্গে কোনও শর্ত আরোপ করা যাবে না। শেষমেশ জামিন নিচ্ছেন না বলে জানালেন পিকে। পরে বিচারক তাঁকে 14 দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
#WATCH | Patna: Jan Suraaj Party Chief Prashant Kishor says, " ...from 5-11 am, i was made to sit in the police vehicle and kept taking me to different places. nobody told me where i was being taken even though i asked them multiple times...after 5 hours, they took me to fatwah's… pic.twitter.com/CFL1nmxonx
— ANI (@ANI) January 6, 2025
বিচারকের সিদ্ধান্ত জানার পর প্রশান্তকে নিয়ে আদালত চত্বর ছাড়ে পুলিশ। আইনজীবীরা অবশ্য হাল ছাড়তে রাজি হননি। বিচারকের কাছে আবারও নিজেদের দাবি পেশ করেন তাঁরা। তাতে কাজ হয়। শর্ত ছাড়াই জামিন দিতে রাজি হয় আদালত।
অন্যদিকে, প্রথমবার পুলিশের সঙ্গে আদালত চত্বর ছাড়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রশান্ত। পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন তিনি। আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের পিকে জানান, ভোর 5টা থেকে সকাল 11টা পর্যন্ত তাঁকে পুলিশের গাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল । সে সময় তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় য়ায় পুলিশ। কিন্তু বার বার জানতে চাওয়ার পরও কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেটা তাঁকে জানানো হয়নি বলে দাবি পিকের ।
তিনি আরও জানান, এভাবে 5 ঘণ্টা ঘোরাঘুরির পর তাঁকে ফতোয়া কমিউনিটি সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করাতে চেয়েছিল পুলিশ । যদিও তিনি রাজি হননি । কারণ, তিনি অপরাধী নন, কোনও অপরাধ করেননি। নিজের সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের জানান পিকে । তারপরও পুলিশ নাকি চিকিৎসকদের চাপ দিয়ে পিকের শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত শংসাপত্র জোগাড় করার চেষ্টা করে । যদিও চিকিৎসকরা রাজি না হওয়ায় পুলিশের অভিপ্রায় বাস্তবায়িত হয়নি । এরপর তাঁকে নিয়ে আদালতে আসে পুলিশ । জামিনও পেয়েছিলেন । কিন্তু জামিনের শর্ত মানতে রাজি হননি । এখানেও তাঁর যুক্তি, তিনি কোনও অপরাধ করেননি । পরে অবশ্য কোনও শর্ত ছাড়াই জামিন পান।
বিহারের রাজনীতি চিরকালই চিত্তাকর্ষক। গত এক দশকে নীতীশ কুমারের একাধিকবার শিবির বদল রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনাকে নয়া মাত্রা দিয়েছে। চলতি বছর বিধানসভা নির্বাচন হবে রাজ্যে। তার আগে বড় চমক দিয়ে নিজের রাজনৈতিক দলের যাত্রা শুরু করেছেন পিকে। বিহারের এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত যাচ্ছেন। নিজের দলের আদর্শের কথা বলছেন। এমনই আবহে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ তাঁকে অবশ্যই নতুন অস্ত্র দিয়েছে । আর তাতে শান দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম সফল পেশাদার ভোট-কৌশলী পিকে । আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাঁরও আগে নিজের দলের ছাত্রদের সামনে রেখে শাসক শিবিরের রক্তচাপ বাড়িয়ে দেন।