মুম্বই, 17 জানুয়ারি: তিনি জানতেন না, তাঁর অটোরিকশায় কে সওয়ার হয়েছেন ? কাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন ? এমনটাই জানাচ্ছেন, জখম সইফ আলি খানকে লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া অটোচালক ভজন সিং রানা ৷
বুধবার রাতে 'হাম তুম'-এর নায়ক সইফের অভিজাত বান্দ্রা এলাকার বহুতল আবাসনে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতী ৷ নবাবের ছোট ছেলের ঘরেই নাকি প্রথম তাকে দেখা যায় ৷ এরপর পরিবারকে বাঁচাতে প্রাণ বাজি রেখে ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে লড়ে যান সইফ ৷ সিনেমায় অবশ্য এই কাজ বহুবার করেছন তিনি ৷ তাঁকে ছ'বার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে ওই দুষ্কৃতী ৷ দেহের একাধিক জায়গায় ক্ষত হয়ে যায় 'দিল চাহতা হ্যায়'-র সমীরের ৷
পতৌদির নবাবের গ্যারাজে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি থাকলেও সেই সময় সইফকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও গাড়ি পাওয়া যায়নি বলে খবর ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে লীলাবতী হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ জানা গিয়েছে, সইফের সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র ইব্রাহিম ৷ তিনি সইফ ও তাঁর প্রথম স্ত্রী অমৃতার সন্তান ৷
সেই সময় লোকজনের চিৎকার শুনে সইফের বহুতল আবাসন 'সদগুরু শরণ' অ্যাপার্টমেন্টের সামনে অটোরিকশা দাঁড় করান ভজন রানা সিং ৷ তিনি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে তাঁর অটোরিকশায় সওয়ার হয়েছেন 'পরিণীতা'র শেখর রায় ৷
এই প্রসঙ্গে ভজন রানা সিং বলেন, "আমি রোজ রাতের দিকে গাড়ি চালাই ৷ তখন রাত 2টো কি 3টে হবে ৷ সদগুরু শরণ অ্য়াপার্টমেন্টের সামনে হঠাৎ দেখি এক মহিলা হাত দেখাচ্ছেন ৷ অটো থামাতে বলছেন ৷ গেটের দিক থেকেও আওয়াজ আসছিল ৷ গাড়িটা ওই বাড়িটার গেটের সামনে দাঁড় করিয়েছি ৷ দেখি, একজনের গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে ৷ তাঁকে ঘিরে আরও দু'তিন জন রয়েছেন ৷ মহিলারাও আছেন ৷"
তাঁর রিকশায় বসার পর কী হল ? ভজন রানা বলেন, "তাঁর সাদা কুর্তা রক্তে ভিজে গিয়েছিল ৷ তিনি (সইফ) অটোয় ওঠেন ৷ তাঁর ঘাড়ে আর পিঠে ক্ষত ছিল ৷ আমি হাতের ক্ষতটা আগে দেখতে পাই ৷ তাঁর সঙ্গে একটি ছোট ছেলেও ছিল ৷ আমি জিজ্ঞাসা করি কোথায় নিয়ে যাব ? তখন বলা হয় লীলাবতী হাসপাতাল বা হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে চলো ৷ এরপর সইফ বলেন, লীলাবতী হাসপাতাল চলো ৷ 4-5 মিনিটের মধ্যে তাঁদের লীলাবতী পৌঁছে দিই ৷"
হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার সময়েও অটো রিকশা চালক ভজন রানা সিং জানতেন না, তিনি 'হাম সাথ সাথ হ্যায়'র নায়ক সইফ আলি খানকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন ৷ একের পর এক ছুরির কোপে সইফের শরীরের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে রক্ত ঝরছে ৷ ভজন রানা বলে চলেন, "হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার পর হঠাৎ দেখলাম সাহেবের নাম ধরে সবাই ডাকাডাকি করছেন ৷ এরপর সাহেব হাসপাতালের গার্ডদের উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন, 'একটা স্ট্রেচার আনুন, আমি সইফ আলি খান (ম্যায় সইফ আলি খান হুঁ)' ৷ তখনই আমি জানতে পারলাম যে তিনি সইফ আলি খান ৷" দিন আনা দিন খাওয়া অটো রিকশা চালক ভজন রানা সিং পতৌদির নবাব সইফকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার ভাড়া নেননি ৷