ETV Bharat / bharat

এআই, ডিপফেক ও ভয়েস ক্লোনিং: প্রযুক্তিগত হুমকির মুখে লোকসভা নির্বাচন - Artificial Intelligence

Deepfake and Voice Cloning Threat: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট, ডিপফেক এবং ভয়েস ক্লোনিংয়ের এমন এক সময়ে বাড়বাড়ন্ত যখন ভারতে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৷ এই প্রযুক্তিগুলি ব্যবহার করে খুব সহজেই স্মার্টফোনে সোশাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া যায় ৷ ভোটারদের বোকা বানানোর লক্ষ্যে ব্যবহার করা হতে পারে এই প্রযুক্তিগুলি ৷

Artificial Intelligence
Artificial Intelligence
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 4, 2024, 3:59 PM IST

হায়দরাবাদ, 4 এপ্রিল: লোকসভা ভোটের তারিখ যত এগিয়ে আসছে তত উত্তাপ বাড়ছে রাজনৈতিক ময়দানে । ভোটে জয়ী হওয়াই লক্ষ্য সবপক্ষের ৷ তাই সারা দেশের নেতারা কথার অস্ত্রে শান দিচ্ছেন ৷ সমালোচনা পালটা আক্রমণের পর্ব চলছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ ৷ এমন এক সময়ে যখন সমস্ত দল ও নেতারা জয়ের জন্য সব কিছু দিয়ে ভোট ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিপফেক এবং ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ।

প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে এর সঙ্গে তত ওঠানামা করছে লাভ ক্ষতির অংক। উন্নত প্রযুক্তির বিভিন্ন সরঞ্জামগুলির সাহায্য নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা ৷ তারা এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির চেহারা পরিবর্তন এবং শব্দ বদলে ছদ্মবেশ ধারণ করে জালিয়াতির নতুন নতুন পথ বের করছে ৷ যার ফলে ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে নাগরিক জীবন । ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য নির্বাচনেও এ ধরনের প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটি একটি দলের পক্ষে/বিপক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করবে এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করবে।

এখানকার পরিস্থিতি কয়েক বছর আগের মত আর নেই ৷ এখন অনেক সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে এআই প্রযুক্তি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ডিপফেক দিয়ে সহজে মানুষকে বোকা বানানো যায় ৷ এখন ডিপফেক তৈরি করতে বড় কোম্পানির প্রয়োজন হয় না এবং এ বিষয়ে স্বল্প জ্ঞান রয়েছে এমন লোকেরা ল্যাপটপের সাহায্যে জালিয়াতি করতে পারে ৷ আমরা যে হুমকির আশংকা করছি ইতিমধ্যেই তার ট্রেলার দেখা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশে ৷ সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কমলনাথের ফেক ভিডিয়োগুলি সোশাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷

নির্বাচনে ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহার

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নির্বাচনে সাইবার অপরাধীরা ডিপফেকের সাহায্য নিয়েছিল ৷ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভুলবার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল যা নাগরিকদের ভোটদানের আগ্রহকে নষ্ট করেছিল । বার্তায় লেখা হয়েছিল, ভোট দিতে আসবেন না । আমাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে । দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত দলের নেতারা ভোটারদের কাছে আন্তরিক আবেদন করেছেন এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন । কিন্তু ডিপফেক ইতিমধ্যেই তার কাজ করে ফেলেছে ।

বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এসেছে ডিপফেক ভিডিয়ো । এর মধ্যে বিরোধী দলের নেত্রী রুমিন ফারহানাকে বিকিনিতে এবং আরেক মহিলা নেত্রী নিপুণ রাইকে একটি সুইমিং পুলে দেখা গিয়েছে ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমেরিকার নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাথমিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কণ্ঠ অনুকরণ করে একটি ভুয়োবার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল । স্লোভাকিয়ায় এআই-এর সাহায্যে একজন প্রার্থীর কণ্ঠ নকল করা হয়েছিল । এই বার্তায় এই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তিনি মদের দাম বাড়ানো এবং নির্বাচনে কারচুপির পরিকল্পনা করছেন ৷

ভুয়ো খবর ছড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার

ভারতে এখন সস্তায় মোবাইল ডেটা পাওয়া যায় ৷ স্মার্টফোনের ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে । এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, সোশাল মিডিয়ায় ডিপফেকগুলি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের ক্ষোভ বাড়াতে পারে । ভোট দিলেও তা বৃথা যাবে বলে জনগণকে বিশ্বাস করানোর ঝুঁকি রয়েই যাচ্ছে । এআই দ্বারা তৈরি ভুয়ো খবর নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে ৷

2020 সালে বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে হরিয়ানভি উপভাষায় ডাব করা একটি এআই-ভিত্তিক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছিলেন । তাতে বক্তৃতার সঙ্গে মনোজের ঠোঁট নড়াচড়ার মিল করাতে দেড় দিন সময় লেগেছিল । যদিও সেই ভয়েসটি প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়নি একজন মিমিক্রি শিল্পীকে দিয়ে ডাব করানো হয়েছিল । কিন্তু এখন প্রযুক্তি বদলেছে । লিপ-সিঙ্কিং প্রযুক্তির পাশাপাশি ভয়েস ট্রেনিং মডিউল এসেছে । এগুলোর সাহায্যে ব্যক্তি যেভাবে কথা বলছে সেভাবে লিপ-সিঙ্ক করে দ্রুত ভিডিয়ো তৈরি করা যায় । অনেক দেশের ভারতের নির্বাচনে আগ্রহ রয়েছে ৷ এই আগ্রহ এআইয়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও হুমকির কারণ হতে পারে ।

ভালোর জন্য এআই ব্যবহার

নির্বাচনে ভালো কাজেও এআই ব্যবহার করা যেতে পারে । আকর্ষণীয় উদ্ভাবন হল ভোটারদের কাছে 'পার্সোনালাইজড ইন্টারেক্টিভ ফোন কল'। এই ধরনের ওয়ান-টু-ওয়ান কল ব্যবস্থা ভারতে এখনও বাস্তবায়িত হয়নি । তবে প্রার্থীর কণ্ঠস্বর-সহ আগে রেকর্ড করা বার্তাগুলি পৃথক ভোটারদের নাম উল্লেখ করে রাজস্থানে কংগ্রেস এবং দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ব্যবহার করেছিল ।

সময়ে সময়ে একজন নেতার বক্তৃতা অন্য ভাষায় অনুবাদ করতেও এআই ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দিতে কণ্ঠস্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের জন্য ইংরেজিতে রূপান্তরিত হয়েছিল ৷ তাদের সাম্প্রতিক বৈঠকের কথোপকথনে এটি করা হয় ।

এআই নিয়ে সরকার ও নিবার্চন কমিশনের পদক্ষেপ

নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ভুয়ো খবর এবং ভুল তথ্য সনাক্ত করতে ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর জারি করেছে । ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারকে (I4সি) নির্বাচনের সময় এআই দ্বারা সৃষ্ট হুমকি মোকাবিলা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নোডাল এজেন্সি হিসাবে নিযুক্ত করেছে । এর উদ্দেশ্য অনলাইনে আপত্তিকর বিষয়বস্তু গুলি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে সরিয়ে ফেলা ।

রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটগুলিও ভুয়ো খবর এবং আপত্তিকর বিষয়বস্তু সনাক্ত করতে অনলাইনে ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছে । নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা বলছেন, "দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সব জেলায় সাইবার সেলের সঙ্গে সমন্বয় করে সোশাল মিডিয়া সেল গঠন করা হয়েছে । নির্বাচন কমিশনের 'মিডিয়া সার্টিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং কমিটি'ও সোশাল মিডিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ।"

আরও পড়ুন:

  1. ডিপফেক ! ক্রমশ বেআব্রু হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষতিকর দিকটি
  2. ডিপফেকের শিকার সচিন, সরব সোশাল মিডিয়ায়
  3. ডিপফেক টেকনোলজির দৌরাত্মে রাশ টানতে হাল ধরল কেন্দ্র, তলব সোশাল প্ল্যাটফর্মের আধিকারিকদের

হায়দরাবাদ, 4 এপ্রিল: লোকসভা ভোটের তারিখ যত এগিয়ে আসছে তত উত্তাপ বাড়ছে রাজনৈতিক ময়দানে । ভোটে জয়ী হওয়াই লক্ষ্য সবপক্ষের ৷ তাই সারা দেশের নেতারা কথার অস্ত্রে শান দিচ্ছেন ৷ সমালোচনা পালটা আক্রমণের পর্ব চলছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ ৷ এমন এক সময়ে যখন সমস্ত দল ও নেতারা জয়ের জন্য সব কিছু দিয়ে ভোট ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ডিপফেক এবং ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ।

প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে এর সঙ্গে তত ওঠানামা করছে লাভ ক্ষতির অংক। উন্নত প্রযুক্তির বিভিন্ন সরঞ্জামগুলির সাহায্য নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা ৷ তারা এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির চেহারা পরিবর্তন এবং শব্দ বদলে ছদ্মবেশ ধারণ করে জালিয়াতির নতুন নতুন পথ বের করছে ৷ যার ফলে ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ছে নাগরিক জীবন । ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য নির্বাচনেও এ ধরনের প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটি একটি দলের পক্ষে/বিপক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করবে এবং জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করবে।

এখানকার পরিস্থিতি কয়েক বছর আগের মত আর নেই ৷ এখন অনেক সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে এআই প্রযুক্তি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ডিপফেক দিয়ে সহজে মানুষকে বোকা বানানো যায় ৷ এখন ডিপফেক তৈরি করতে বড় কোম্পানির প্রয়োজন হয় না এবং এ বিষয়ে স্বল্প জ্ঞান রয়েছে এমন লোকেরা ল্যাপটপের সাহায্যে জালিয়াতি করতে পারে ৷ আমরা যে হুমকির আশংকা করছি ইতিমধ্যেই তার ট্রেলার দেখা গিয়েছে মধ্যপ্রদেশে ৷ সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং কমলনাথের ফেক ভিডিয়োগুলি সোশাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷

নির্বাচনে ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহার

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নির্বাচনে সাইবার অপরাধীরা ডিপফেকের সাহায্য নিয়েছিল ৷ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভুলবার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিল যা নাগরিকদের ভোটদানের আগ্রহকে নষ্ট করেছিল । বার্তায় লেখা হয়েছিল, ভোট দিতে আসবেন না । আমাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে । দুই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত দলের নেতারা ভোটারদের কাছে আন্তরিক আবেদন করেছেন এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন । কিন্তু ডিপফেক ইতিমধ্যেই তার কাজ করে ফেলেছে ।

বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এসেছে ডিপফেক ভিডিয়ো । এর মধ্যে বিরোধী দলের নেত্রী রুমিন ফারহানাকে বিকিনিতে এবং আরেক মহিলা নেত্রী নিপুণ রাইকে একটি সুইমিং পুলে দেখা গিয়েছে ।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমেরিকার নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাথমিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কণ্ঠ অনুকরণ করে একটি ভুয়োবার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল । স্লোভাকিয়ায় এআই-এর সাহায্যে একজন প্রার্থীর কণ্ঠ নকল করা হয়েছিল । এই বার্তায় এই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, তিনি মদের দাম বাড়ানো এবং নির্বাচনে কারচুপির পরিকল্পনা করছেন ৷

ভুয়ো খবর ছড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার

ভারতে এখন সস্তায় মোবাইল ডেটা পাওয়া যায় ৷ স্মার্টফোনের ব্যবহার ব্যাপক বেড়েছে । এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, সোশাল মিডিয়ায় ডিপফেকগুলি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের ক্ষোভ বাড়াতে পারে । ভোট দিলেও তা বৃথা যাবে বলে জনগণকে বিশ্বাস করানোর ঝুঁকি রয়েই যাচ্ছে । এআই দ্বারা তৈরি ভুয়ো খবর নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে ৷

2020 সালে বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে হরিয়ানভি উপভাষায় ডাব করা একটি এআই-ভিত্তিক ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছিলেন । তাতে বক্তৃতার সঙ্গে মনোজের ঠোঁট নড়াচড়ার মিল করাতে দেড় দিন সময় লেগেছিল । যদিও সেই ভয়েসটি প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়নি একজন মিমিক্রি শিল্পীকে দিয়ে ডাব করানো হয়েছিল । কিন্তু এখন প্রযুক্তি বদলেছে । লিপ-সিঙ্কিং প্রযুক্তির পাশাপাশি ভয়েস ট্রেনিং মডিউল এসেছে । এগুলোর সাহায্যে ব্যক্তি যেভাবে কথা বলছে সেভাবে লিপ-সিঙ্ক করে দ্রুত ভিডিয়ো তৈরি করা যায় । অনেক দেশের ভারতের নির্বাচনে আগ্রহ রয়েছে ৷ এই আগ্রহ এআইয়ের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও হুমকির কারণ হতে পারে ।

ভালোর জন্য এআই ব্যবহার

নির্বাচনে ভালো কাজেও এআই ব্যবহার করা যেতে পারে । আকর্ষণীয় উদ্ভাবন হল ভোটারদের কাছে 'পার্সোনালাইজড ইন্টারেক্টিভ ফোন কল'। এই ধরনের ওয়ান-টু-ওয়ান কল ব্যবস্থা ভারতে এখনও বাস্তবায়িত হয়নি । তবে প্রার্থীর কণ্ঠস্বর-সহ আগে রেকর্ড করা বার্তাগুলি পৃথক ভোটারদের নাম উল্লেখ করে রাজস্থানে কংগ্রেস এবং দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ব্যবহার করেছিল ।

সময়ে সময়ে একজন নেতার বক্তৃতা অন্য ভাষায় অনুবাদ করতেও এআই ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দিতে কণ্ঠস্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের জন্য ইংরেজিতে রূপান্তরিত হয়েছিল ৷ তাদের সাম্প্রতিক বৈঠকের কথোপকথনে এটি করা হয় ।

এআই নিয়ে সরকার ও নিবার্চন কমিশনের পদক্ষেপ

নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ভুয়ো খবর এবং ভুল তথ্য সনাক্ত করতে ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর জারি করেছে । ভারতীয় সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারকে (I4সি) নির্বাচনের সময় এআই দ্বারা সৃষ্ট হুমকি মোকাবিলা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নোডাল এজেন্সি হিসাবে নিযুক্ত করেছে । এর উদ্দেশ্য অনলাইনে আপত্তিকর বিষয়বস্তু গুলি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে সরিয়ে ফেলা ।

রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটগুলিও ভুয়ো খবর এবং আপত্তিকর বিষয়বস্তু সনাক্ত করতে অনলাইনে ক্রমাগত নজরদারি চালাচ্ছে । নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা বলছেন, "দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সব জেলায় সাইবার সেলের সঙ্গে সমন্বয় করে সোশাল মিডিয়া সেল গঠন করা হয়েছে । নির্বাচন কমিশনের 'মিডিয়া সার্টিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং কমিটি'ও সোশাল মিডিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ।"

আরও পড়ুন:

  1. ডিপফেক ! ক্রমশ বেআব্রু হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষতিকর দিকটি
  2. ডিপফেকের শিকার সচিন, সরব সোশাল মিডিয়ায়
  3. ডিপফেক টেকনোলজির দৌরাত্মে রাশ টানতে হাল ধরল কেন্দ্র, তলব সোশাল প্ল্যাটফর্মের আধিকারিকদের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.