ETV Bharat / bharat

কারও পা অকেজো, কেউ অকাল-বার্ধক্যের শিকার ! নীতীশ-রাজ্যে দূষিত জলের কোপে গ্রাম - BIHAR WATER CRISIS

পরিস্রুত পানীয় জলের প্রতিশ্রুতি সবাই দিয়েছিলেন ৷ বাস্তব অন্য রকম ৷ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে দূষিত জলের মাশুল গুনছেন বহু মানুষ ৷

FLUORIDE CONTAMINATED GROUNDWATER EFFECT in BIHAR
বিহারের গয়ার একটি গ্রামে দূষিত জলের প্রভাব (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 9, 2025, 10:29 PM IST

গয়া, 9 ফেব্রুয়ারি: জলের অন্য নাম জীবন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে বারবার দেশের প্রতিটি বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছনোর কথা শোনা গিয়েছে ৷ এই উদ্দেশে 'জল জীবন মিশন' প্রকল্প শুরু করেছে এনডিএ সরকার ৷ একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এনডিএ শাসিত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ৷ উন্নয়নে গতি আনতে 'ডবল ইঞ্জিনের' সরকার গঠনের আহ্বান করে বিজেপি। এবার সেই বিহারেই ধরা পড়ল এক করুণ ছবি।

রাজ্যের একটি অংশে জল অবশ্য যন্ত্রণার আরেক নাম ৷ বিহারের গয়ায় চুরামন নগর গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিশেষভাবে সক্ষম একজনকে পাওয়া যাবে ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গ্রামে পানীয় জলে ফ্লুয়োরাইডের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি ৷ এদিকে এই জলই পান করতে হয় গ্রামবাসীদের ৷ পরিণতি, জীবনে নেমে আসে অকাল বার্ধক্য ৷ কারও পায়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেউ আবার হাঁটাচলার ক্ষমতাই হারিয়েছেন ৷

FLUORIDE CONTAMINATED GROUNDWATER EFFECT in BIHAR
দূষিত জলের প্রভাবে অচল হয়ে গিয়েছে শরীরের একাংশ (ইটিভি ভারত)

সমস্যাটা ঠিক কোথায় ?

গয়ায় চুরামন নগর গ্রামের তিনটি টোলা আছে- চুরামন নগর ওয়ার্ড নম্বর 9, চমন ডিহ ওয়ার্ড নম্বর 10 ও 11 এবং বাহাদুর বিঘা ৷ এখানে বসবাসকারী মানুষদের বেশির ভাগই মাঝি সম্প্রদায়ের ৷ এছাড়া চৌধরী, পাসি এবং অন্য কয়েকটি জাতির মানুষও বসবাস করেন ৷ এই গ্রামের চুড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন বিনয় মাঝি ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "36 বছরে পা দিতেই আমার নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিল ৷ প্রথমত, পিঠে এবং পায়ে ব্যথা শুরু হল ৷ এরপর ধীরে ধীরে আমার শরীরটা বদলে গেল ৷ সবকিছু দূষিত জলের জন্য ৷"

গ্রামের আরেক বাসিন্দা কালিয়া দেবীও তাঁর যন্ত্রণার কথা বললেন, "আমার চারটি সন্তান ৷ প্রত্যেকে বিশেষভাবে সক্ষম ৷ পাঁচ বছর বয়স হতে তারা এরকম হয়ে গিয়েছে ৷ আমারও পিঠ ঝুঁকে গিয়েছে ৷ বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে অনেক টাকা যৌতুক দিতে হয়েছে ৷ দূষিত জল আমার পুরো জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ৷"

সুমিত যখন জন্মেছিলেন, তখন সব ঠিকঠাকই ছিল ৷ তিনি বলেন, "পাঁচ বছর বয়স হতেই আমার দু'টো পা বেঁকে যেতে শুরু করে ৷ মনে হবে যেন, আমাকে কোনও গাড়ি চাপা দিয়ে চলে গিয়েছে ৷ আমরা খুব গরিব ৷ তা সত্ত্বেও আমার বাবা-মা যতটা সম্ভব ভালো চিকিৎসা করিয়েছেন ৷ কিন্তু চিকিৎসায় কোনও কাজ হল না ৷"

এই অবস্থা চুরামন নগর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ৷ 150টি পরিবারের 60 শতাংশ ফ্লুয়োরাইড-দূষিত জলের কারণে বিপর্যস্ত ৷ মহিন্দর মাঝি একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আর পা নাড়াতে পারলেন না ৷ তিনি বলেন, "আমি শ্রমিকের কাজ করতাম ৷ মাঝে মাঝে গায়ে ব্যথা হত ৷ প্রথমদিকে ভাবতাম ক্লান্তির কারণে হচ্ছে ৷ একদিন সকালে আমি বিছানা থেকে উঠতে পারলাম না ৷ ডাক্তারের কাছে গেলাম ৷ তিনি বললেন, পঙ্গু হয়ে গিয়েছি ৷ এর যে চিকিৎসা তার খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এখন আমার স্ত্রী কাজ করে সংসারের খরচ থেকে বাচ্চাদের পড়াশুনোর খরচ বহন করেন ৷ আমার এই অবস্থা শুধুমাত্র ওই দূষিত জলের জন্য ৷"

প্রশাসন কী বলছে ?

জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ এমএ হক জানালেন, জলে ফ্লুয়োরাইড পরিমাপ করা হয় পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম) এককের সাহায্যে ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জলে ফ্লুয়োরাইডের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ৷ পানীয় জলে 1 পিপিএম পর্যন্ত ফ্লুয়োরাইড শরীরে কোনও প্রভাব ফেলে না ৷ কিন্তু মাত্রা 1-3 পিপিএম হলে দাঁত ক্ষয়ে যেতে শুরু করে ৷ 3 পিপিএম-এর বেশি মাত্রায় শরীরের হাড় নষ্ট করে দেয় ৷ চর্মরোগও দেখা যায় মানুষের শরীরে ৷

পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএইচই) দফতরের ইঞ্জিনিয়ার অভিশান্ত রাজ বলেন, "2024 সালে পিএইচই দফতর মাটির তলার জলের নমুনা সংগ্রহ করেছিল ৷ কিন্তু সেই রিপোর্ট থেকে দরকারি কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি ৷" তিনি আরও জানান, কয়েক বছর আগে পিএইচই দফতর এলাকায় একটি জল শোধন যন্ত্র স্থাপন করেছিল ৷ এখন সেটা আর কাজ করে না ৷ রাম প্রবেশ মাঝি নামে এক ব্যক্তিকে এই জল শোধন যন্ত্রটি দেখাশোনার নিয়োগ করা হয়েছিল ৷

কাজ করে না জল শোধনের যন্ত্র

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণা মাঝি বলেন, "ওই ব্যক্তিকে প্রথমে 2 হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছিল প্রশাসনের তরফে ৷ পরে সেই টাকা বন্ধ হয়ে যায় ৷ মেশিনও কাজ করা থামিয়ে দেয় ৷ এখনও পর্যন্ত কেউ এসে দেখে যায়নি কী অবস্থা ৷" গ্রামের প্রধান উদয় পাসওয়াল জানান, পিএইচই দফতর ওই বিকল হওয়া জল শোধন যন্ত্রটি বদলে দেয়নি ৷ এমনকী প্রতিটি বাড়িতে জল শোধনের যন্ত্র বসানো হলেও সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ে আছে ৷

ইঞ্জিনিয়ার অভিশান্ত রাজ জানালেন, তিনি এই জল শোধনের যন্ত্রের বিকল হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানেন না ৷ তবে ওই যন্ত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখবেন ৷ 2016 সালে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার 'সাত নিশ্চয় প্রকল্প'-এর আওতায় প্রতিটি ঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার কথা দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু এখানে হয়েছে উল্টো ৷ মাঝি টোলায় কোনও বাড়িতে পাইপলাইনে জল আসার ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ শুধুমাত্র একটি ট্যাঙ্ক পড়ে আছে, তাও খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷

গয়া, 9 ফেব্রুয়ারি: জলের অন্য নাম জীবন ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে বারবার দেশের প্রতিটি বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছনোর কথা শোনা গিয়েছে ৷ এই উদ্দেশে 'জল জীবন মিশন' প্রকল্প শুরু করেছে এনডিএ সরকার ৷ একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এনডিএ শাসিত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ৷ উন্নয়নে গতি আনতে 'ডবল ইঞ্জিনের' সরকার গঠনের আহ্বান করে বিজেপি। এবার সেই বিহারেই ধরা পড়ল এক করুণ ছবি।

রাজ্যের একটি অংশে জল অবশ্য যন্ত্রণার আরেক নাম ৷ বিহারের গয়ায় চুরামন নগর গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বিশেষভাবে সক্ষম একজনকে পাওয়া যাবে ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গ্রামে পানীয় জলে ফ্লুয়োরাইডের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি ৷ এদিকে এই জলই পান করতে হয় গ্রামবাসীদের ৷ পরিণতি, জীবনে নেমে আসে অকাল বার্ধক্য ৷ কারও পায়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেউ আবার হাঁটাচলার ক্ষমতাই হারিয়েছেন ৷

FLUORIDE CONTAMINATED GROUNDWATER EFFECT in BIHAR
দূষিত জলের প্রভাবে অচল হয়ে গিয়েছে শরীরের একাংশ (ইটিভি ভারত)

সমস্যাটা ঠিক কোথায় ?

গয়ায় চুরামন নগর গ্রামের তিনটি টোলা আছে- চুরামন নগর ওয়ার্ড নম্বর 9, চমন ডিহ ওয়ার্ড নম্বর 10 ও 11 এবং বাহাদুর বিঘা ৷ এখানে বসবাসকারী মানুষদের বেশির ভাগই মাঝি সম্প্রদায়ের ৷ এছাড়া চৌধরী, পাসি এবং অন্য কয়েকটি জাতির মানুষও বসবাস করেন ৷ এই গ্রামের চুড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন বিনয় মাঝি ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "36 বছরে পা দিতেই আমার নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দিল ৷ প্রথমত, পিঠে এবং পায়ে ব্যথা শুরু হল ৷ এরপর ধীরে ধীরে আমার শরীরটা বদলে গেল ৷ সবকিছু দূষিত জলের জন্য ৷"

গ্রামের আরেক বাসিন্দা কালিয়া দেবীও তাঁর যন্ত্রণার কথা বললেন, "আমার চারটি সন্তান ৷ প্রত্যেকে বিশেষভাবে সক্ষম ৷ পাঁচ বছর বয়স হতে তারা এরকম হয়ে গিয়েছে ৷ আমারও পিঠ ঝুঁকে গিয়েছে ৷ বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে অনেক টাকা যৌতুক দিতে হয়েছে ৷ দূষিত জল আমার পুরো জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ৷"

সুমিত যখন জন্মেছিলেন, তখন সব ঠিকঠাকই ছিল ৷ তিনি বলেন, "পাঁচ বছর বয়স হতেই আমার দু'টো পা বেঁকে যেতে শুরু করে ৷ মনে হবে যেন, আমাকে কোনও গাড়ি চাপা দিয়ে চলে গিয়েছে ৷ আমরা খুব গরিব ৷ তা সত্ত্বেও আমার বাবা-মা যতটা সম্ভব ভালো চিকিৎসা করিয়েছেন ৷ কিন্তু চিকিৎসায় কোনও কাজ হল না ৷"

এই অবস্থা চুরামন নগর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ৷ 150টি পরিবারের 60 শতাংশ ফ্লুয়োরাইড-দূষিত জলের কারণে বিপর্যস্ত ৷ মহিন্দর মাঝি একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আর পা নাড়াতে পারলেন না ৷ তিনি বলেন, "আমি শ্রমিকের কাজ করতাম ৷ মাঝে মাঝে গায়ে ব্যথা হত ৷ প্রথমদিকে ভাবতাম ক্লান্তির কারণে হচ্ছে ৷ একদিন সকালে আমি বিছানা থেকে উঠতে পারলাম না ৷ ডাক্তারের কাছে গেলাম ৷ তিনি বললেন, পঙ্গু হয়ে গিয়েছি ৷ এর যে চিকিৎসা তার খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় ৷ এখন আমার স্ত্রী কাজ করে সংসারের খরচ থেকে বাচ্চাদের পড়াশুনোর খরচ বহন করেন ৷ আমার এই অবস্থা শুধুমাত্র ওই দূষিত জলের জন্য ৷"

প্রশাসন কী বলছে ?

জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ এমএ হক জানালেন, জলে ফ্লুয়োরাইড পরিমাপ করা হয় পার্টস পার মিলিয়ন (পিপিএম) এককের সাহায্যে ৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জলে ফ্লুয়োরাইডের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ৷ পানীয় জলে 1 পিপিএম পর্যন্ত ফ্লুয়োরাইড শরীরে কোনও প্রভাব ফেলে না ৷ কিন্তু মাত্রা 1-3 পিপিএম হলে দাঁত ক্ষয়ে যেতে শুরু করে ৷ 3 পিপিএম-এর বেশি মাত্রায় শরীরের হাড় নষ্ট করে দেয় ৷ চর্মরোগও দেখা যায় মানুষের শরীরে ৷

পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএইচই) দফতরের ইঞ্জিনিয়ার অভিশান্ত রাজ বলেন, "2024 সালে পিএইচই দফতর মাটির তলার জলের নমুনা সংগ্রহ করেছিল ৷ কিন্তু সেই রিপোর্ট থেকে দরকারি কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি ৷" তিনি আরও জানান, কয়েক বছর আগে পিএইচই দফতর এলাকায় একটি জল শোধন যন্ত্র স্থাপন করেছিল ৷ এখন সেটা আর কাজ করে না ৷ রাম প্রবেশ মাঝি নামে এক ব্যক্তিকে এই জল শোধন যন্ত্রটি দেখাশোনার নিয়োগ করা হয়েছিল ৷

কাজ করে না জল শোধনের যন্ত্র

স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণা মাঝি বলেন, "ওই ব্যক্তিকে প্রথমে 2 হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছিল প্রশাসনের তরফে ৷ পরে সেই টাকা বন্ধ হয়ে যায় ৷ মেশিনও কাজ করা থামিয়ে দেয় ৷ এখনও পর্যন্ত কেউ এসে দেখে যায়নি কী অবস্থা ৷" গ্রামের প্রধান উদয় পাসওয়াল জানান, পিএইচই দফতর ওই বিকল হওয়া জল শোধন যন্ত্রটি বদলে দেয়নি ৷ এমনকী প্রতিটি বাড়িতে জল শোধনের যন্ত্র বসানো হলেও সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ে আছে ৷

ইঞ্জিনিয়ার অভিশান্ত রাজ জানালেন, তিনি এই জল শোধনের যন্ত্রের বিকল হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানেন না ৷ তবে ওই যন্ত্রগুলি পরীক্ষা করে দেখবেন ৷ 2016 সালে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার 'সাত নিশ্চয় প্রকল্প'-এর আওতায় প্রতিটি ঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করার কথা দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু এখানে হয়েছে উল্টো ৷ মাঝি টোলায় কোনও বাড়িতে পাইপলাইনে জল আসার ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ শুধুমাত্র একটি ট্যাঙ্ক পড়ে আছে, তাও খারাপ হয়ে গিয়েছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.