তেজপুর, 10 এপ্রিল: একটি গ্রাম একটিই পরিবার ৷ আক্ষরিক অর্থেই, যা এই বর্তমান যুগে বিরল ৷ অসমে এমনই একটি গ্রাম আছে, যেখানে সবাই একই পরিবারের সদস্য ৷ আর এই গ্রাম তথা এক পরিবারের জনসংখ্যার শুনলে চমকে উঠতে হয় ৷ গ্রামে 2,500 জন 300টি ছোট ছোট পরিবারে বাস করে ৷ তারা সবাই একটি বড় পরিবারের সদস্য ৷ অসমের সোনিতপুর জেলার রঙ্গাপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত এই গ্রামটি ফুলগুড়ি নেপালি পাম ৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই পরিবারের 1,200 জন সদস্য ভোট দেবেন ৷
এই পরিবারের প্রধান রণ বাহাদুর থাপা ৷ তিনি ব্রিটিশ শাসনকালে অসমের ফুলগুড়িতে বসবাস শুরু করেন ৷ এখানে কৃষিকাজ করেই তাঁর জীবন চলত ৷ পরে এই জায়গার নাম হয় ফুলগুড়ি নেপালি পাম ৷ এই রণ বাহাদুরের পাঁচজন স্ত্রী- হরি মায়া থাপা, পবি মায়া থাপা, হরখা মায়া থাপা, কালী মায়া থাপা এবং খাজি মায়া থাপা ৷ তাঁদের 12জন পুত্রসন্তান এবং কন্যাসন্তান 10 জন ৷ স্বভাবতই এই পরিবারের আয়তন দিনে দিনে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে ৷
1997 সালে রণ বাহাদুর প্রয়াত হন ৷ এখন, নেপালি পামে তাঁর 65 জন নাতি এবং 70 জন নাতনির বসবাস ৷ এর আগে 50 জন মিলে একসঙ্গে থাকতেন ৷ তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একই গ্রামে অনেকেই পৃথক পৃথক পরিবার গড়ে থাকতে শুরু করেন ৷ রণ বাহাদুরের পরিবার এখন 300টি পরিবারে বিভক্ত ৷ আর তাদের সংখ্যাও এখন বাড়তে বাড়তে 2 হাজার 500 তে পৌঁছেছে ৷ সবাই এক গ্রামে থাকে ৷ রণ বাহাদুরের এক সন্তান তিল বাহাদুর থাপা এই গ্রামের প্রধান ৷ তিনি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে জানান, তাঁর 6 জন ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে ৷ তবে 6 জন এখনও জীবিত ৷ পরিবারের মাত্র 2 জন সরকারি চাকরি করেন ৷ বাকিদের অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে ৷ কেউ কেউ কর্মসূত্রে অসমের বাইরেও থাকে ৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবারের এক সদস্য ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "এই পরিবারের সদস্য হওয়াটা কোনও বিশেষ ব্যাপার নয় ৷ একটাই ব্যাপার আমাদের প্রত্যেককে অবাক করে, একজন মাত্র মানুষ কীভাবে এত বড় একটা পরিবারকে সামলাতে পারে ৷ আজকের দিনে এটা সম্পূর্ণ অসম্ভব, ভাবাই যায় না ৷" এই পরিবারের 1,200 জন সদস্য লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় 19 এপ্রিল ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৷ এই প্রসঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবারটির কথা সামনে আসে ৷ সেটি উত্তরপূর্বে মিজোরামের জিওনা চানায় রয়েছে ৷ এই পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা 38 জন মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন ৷
আরও পড়ুন: