গুরুগ্রাম জেলার ডাক্তাররা বলছেন, করোনার সময় লাগাতার অনলাইন ক্লাস এবং ওয়ার্ক ফ্রম হোমের জেরে শিশু, কিশোর ও তরুণদের মধ্যে চোখ ও কানের সমস্যা দেখা দিচ্ছে । চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, এর জেরে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেইসব মানুষদের মধ্যে, যারা ইয়ারফোন, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের ব্যবহার কমাতে পারছে না । পাশাপাশি কানের সমস্যার জন্য ডাক্তাররা গুরুগ্রাম এলাকায় শব্দদূষণকেও দায়ী করছেন ।
আরজি ইয়ার-নোজ-থ্রোট হসপিটালের প্রধান রাহুল গর্গ বলেন, বয়সের তুলনায় লাইফস্টাইলের কারণেই কান ও চোখের সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে । তিনি বলেন, "করোনার আগে কয়েকজন মাত্র রোগীই ডাক্তারদের কাছে আসতেন, যাঁদের গত বছরের দীপাবলির বাজির শব্দে কানে সমস্যা হয় । কিন্তু করোনার মধ্যে সমস্ত বয়সের রোগীরা বড় সংখ্যায় চোখে সংক্রমণ ও কানে সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসছেন।"
গর্গ বলেন, এইসব সমস্যা বেশি ভলিউমে দীর্ঘক্ষণ মাইক্রোফোন, মোবাইল ও ল্যাপটপ ব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত । চিকিৎসকের কথায়, ইয়ারফোন, মোবাইল ও ল্যাপটমের হাই ভলিউমে টানা ব্যবহার এইসব সমস্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। গর্গ বলেন, "120 ডেসিবেল আমাদের কানের পক্ষে ক্ষতিকর এবং 140 ডেসিবেলে আমাদের কান স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে । 100 ডেসিবেলের থেকে বেশি যে কোনও শব্দ আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।" তিনি আরও যোগ করেন যে, বড়রা ইয়ারফোন বা হেডফোনের শব্দের মাত্রা সেট করতে পারেন, কিন্তু ছোটরা পারে না, যার জেরে কানের সমস্যা বাড়ছে । ইএনটি বিশেষজ্ঞ যোগেশ গোয়েল বলেন, "বহু মানুষ আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হেডফোন পরে ল্যাপটপের সামনে বসে কাজ করছেন । এতে তাঁদের কানের ওপর বিরাট চাপ পড়ছে। এছাড়াও স্টেরিলাইজ না করে ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন ব্যবহার করলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে ।" গোয়েলের পরামর্শ, সময়ে সময়ে ইয়ারফোন খোলা উচিত, যাতে তাজা হাওয়া কানে ঢুকতে পারে। তাঁর কথায়, স্কুলপড়ুয়াদের হেডফোন ব্যবহার করতেই দেওয়া উচিত নয়। যদি তারা ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে ক্লাস করতে বসে, তাহলে যন্ত্রের ভলিউমই যথেষ্ট হওয়া উচিত ।
আরও পড়ুন : আপনি কি সঠিকভাবে বসেছেন ?
চিকিত্সকদের মতে, প্রশাসনের উচিত শব্দদূষণকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা। ট্রাফিক পুলিশকে শব্দদূষণকারীদের ধরতে অডিও মিটারের ব্যবহার বাড়ানো উচিত । পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) ডি কে ভরদ্বাজ জানান, 2020 সালে মোটরবাইক ও অন্যান্য গাড়ির বেশি হর্ন দেওয়ার জন্য 326 টি চালান এবং সাইলেন্সার না থাকার জন্য 291 জনকে জরিমানা করা হয়েছে । ভরদ্বাজ বলেন, "গুরুগ্রামে কেউ ট্রাফিক আইন ভাঙলে আমরা বরদাস্ত করব না । শব্দদূষণকারীদের ধরতে ট্রাফিক পুলিশ দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে। আমরা এখানকার সমস্ত গাড়ি ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করব জেলাজুড়ে ট্রাফিক বিধি মেনে চলুন, নয়তো মোটা অঙ্কের জরিমানার জন্য তৈরি থাকুন।"