ওয়াশিংটন, 9 এপ্রিল: বয়ঃসন্ধিতে থাকাকালীন কোনও কিশোর বা কিশোরী মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে কি না, তা জানার একটি সহজ উপায় রয়েছে ! বলছেন গবেষকরা ৷ তাঁদের দাবি, 13 থেকে 19 বছর বয়সি ছেলেমেয়েরা ইন্টারনেটে, বিশেষ করে সোশাল মিডিয়ায় কোন ধরনের খবর দেখছে, কী খবর তারা বিশ্বাস করছে, এবং কোনগুলিকেই বা এড়িয়ে যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, সেই ছেলেটি বা মেয়েটি মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে কি না ! করোনা অতিমারির একেবারে শুরুর দিকে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্য়া বিভাগের তরফে 170 জন কিশোর-কিশোরীর উপর একটি সমীক্ষা চালানো হয় ৷ অংশগ্রহণকারীরা আমেরিকা ও ব্রিটেনের বাসিন্দা ৷ সেই সমীক্ষা থেকে নতুন কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা ৷
সমীক্ষা অনুসারে, সোশাল মিডিয়ায় কোনও ব্যক্তি যখন এমন কোনও খবর পড়েন, যার বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে, তাহলে সেই ব্যক্তির মানসিক চাপ কমে ৷ তথ্য বলছে, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া খবরের বিশ্বাসযোগ্যতা থাকলে তা যেকোনও কিশোর-কিশোরীর মানসিক স্বাস্থ্যর উপর প্রবল ইতিবাচক প্রভাব ফেলে ৷ তবে, এটাও ঠিক যে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত সব খবর মোটেও সত্যি নয় ৷ কর্নেল বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সহকারী অধ্যাপক অ্য়াডাম হফম্যান বলছেন, "সোশাল মিডিয়ার খুব সামান্য অংশেরই যে ইতিবাচক ও নেতিবাতক প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রয়েছে, এমনটা নয় ৷ সোশাল মিডিয়ায় আপনি ঠিক কী ধরনের খবর পড়ছেন, কতটা তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন, সেটাই আসল ৷"
সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুসারে, কিশোর-কিশোরীরা যদি বিশ্বাস করে, তারা যে খবর সোশাল মিডিয়ায় পড়ছে, সেগুলি সব সত্যি, তাহলে তারা নিজেদের তথ্যগতভাবে শক্তিশালী মনে করে ৷ কিন্তু, যাদের মনে এইসব খবর নিয়ে সংশয় ও সন্দেহ থাকে, তারা তুলনামূলক বেশি মানসিক চাপের মধ্যে থাকে ৷
এখনকার দিনে মানসিক স্বাস্থ্য়ের সঙ্গে সোশাল মিডিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ৷ এ নিয়ে আগেও বহু গবেষণা ও সমীক্ষা হয়েছে ৷ সেসব থেকে যে তথ্য়াবলী সামনে এসেছে, তা মিশ্র প্রকৃতির ৷ যেমন- কিছু সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, নিজেকে প্রকাশ করা এবং যোগাযোগের পরিসর বাড়ানোর জন্য সোশাল মিডিয়া একটি অত্যন্ত উপযোগী মাধ্যম ৷ অন্য কিছু সমীক্ষার রিপোর্ট আবার বলছে, সামাজিক মাধ্যম আদতে অন্যকে হেনস্থা করা এবং হীনমন্যতার অনুভূতিকে প্রকাশ্য়ে আনার হাতিয়ার !
আরও পড়ুন: সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে শারীরিক ব্যায়ামও প্রয়োজন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা অতিমারির সময় বহু মানুষের মধ্যেই নতুন এক ধরনের ব্যবহার দেখা গিয়েছে ৷ যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, 'ডুম স্ক্রোলিং' ৷ কী এই ডুম স্ক্রোলিং ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু মানুষ পাগলের মতো সোশাল মিডিয়া ঘাঁটেন, শুধুমাত্র নেতিবাচক ও হতাশাজনক খবর দেখার জন্য ! কেউ কেউ আবার নতুন তথ্যের মুখোমুখি হতেই ভয় পান ! দিনের পর দিন তাঁরা তাই কোনও খবরই দেখেন না ! সব মিলিয়ে করোনা অতিমারি মানুষের মধ্যে বেশ কিছু নতুন ধরনের মানসিক সমস্যা ও বৈশিষ্ট্য় তৈরি করেছে ৷