স্মার্টফোন, যাকে প্রায়ই চোখের স্ট্রেন ও অন্যান্য সমস্যার জন্য দায়ী করা হয়, তা আপনার কাজেও আসতে পারে । কারণ গবেষকরা দেখেছেন যে, এইসব ডিভাইস গ্লুকোমাকে চিহ্নিত করে, বিভিন্ন চোখে রোগ এবং অন্ধত্ব প্রতিরোধ করতে পারে ।
গ্লুকোমা হচ্ছে অপটিক নার্ভের একটি রোগ, যা বিশ্বজুড়ে ৭৯.৬ মিলিয়ন মানুষের ওপর প্রভাব ফেলেছে, এবং চিকিৎসা না হলে তা অপূরণীয় ক্ষতিও করতে পারে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার মাধ্যমে অন্ধত্বকে আটকানো যায় । চোখের মধ্যে চাপ (আইওপি) বাড়ার সঙ্গে গ্লুকোমার যোগ রয়েছে, এবং দীর্ঘ সময় ধরে আইওপি-র ওপর নজর রাখলে দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখা যায় ।
মোবাইল মেজারমেন্ট মেথড হিসেবে ব্যবহৃত শব্দতরঙ্গ আইওপি-র মাত্রা বলে দেবে, যা দ্রুত রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় সাহায্য করবে । ইঞ্জিনিয়ারিং রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা চোখের ক্ষেত্রে শব্দতরঙ্গের ব্যবহারের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সফল হয়েছেন ।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং গ্রুপের ডিরেক্টর খামিস এসা বলেন, “আমরা দেখেছি যে কোনও বস্তুর অভ্যন্তরীণ চাপ এবং তার ধ্বনিগত প্রতিফলনের মধ্যে যোগ রয়েছে ।” তাঁর কথায়, “চোখের গঠন নিয়ে আরও গবেষণা এবং ধ্বনিতরঙ্গে তা কীভাবে প্রভাব ফেলে সেটা খতিয়ে দেখার পর, এটা সম্ভব যে স্মার্টফোন ব্যবহার করে একজন মানুষ বাড়িতে বসেই তাঁর আইওপি জানতে পারবেন ।” এক্ষেত্রে চোখের অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও রিস্ক ফ্যাক্টর জেনে নেওয়া সম্ভব হবে । যেমন ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ক্ষেত্রে, ডায়াবেটিস আক্রান্তরা বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে থাকেন এবং সবসময় নজর রাখা হয় যে তাঁদের চোখের রক্তবাহকে ছোট ছোট ফোলা অংশ দেখা যাচ্ছে কিনা ।
চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ হল সুস্থ দৃষ্টিশক্তির একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপক, যেটা চোখের অভ্যন্তরীণ তরলের তৈরি চাপের ওপর নির্ভর করে । জলীয় অংশ তৈরি হওয়া এবং তা বেরিয়ে যাওয়ার মধ্যে ভারসাম্যের অভাব হলেই অকিউলার হাইপারটেনশন তৈরি হয়, যা বেশিরভাগ সময়ে বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায় । বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ে, যার জেরে ব্যক্তিবিশেষের মধ্যে গ্লুকোমা তৈরির প্রবণতা দেখা যায় ।